রাত থেকে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:০১:০৮,অপরাহ্ন ২৪ নভেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
যুদ্ধাপরাধী সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মোবারক হোসেনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার নয়াদিল গ্রামের বাড়ির এলাকায় রবিবার রাত থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নয়াদিল গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মামলার সাক্ষী আব্দুল হামিদ জানিয়েছেন, যুদ্ধাপরাধী মোবারকের পরিবার গ্রামে প্রভাবশালী হওয়ায় তিনিসহ অন্য সাক্ষীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছন।
তবে এলাকার পরিস্থিতি একেবারেই শান্ত দাবি করে তিনি বলেন, যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া সাক্ষিদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে ইতোমধ্যে।
সাবেক এই কমান্ডার বলেন, আমি এর আগেও মামলা চলার সময় সাক্ষী দিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছি। আর এখন তো চূড়ান্ত রায়। তাই বেশ আতঙ্কে আছি। আমি এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এদিকে, নিজেদের পূণ্যভূমিকে কলঙ্কমুক্ত করতে আখাউড়ার জনগণ মোবারকের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। তার নিজ গ্রাম নয়াদিলের মানুষও ফাঁসি চান এই গণহত্যাকারীর।
রোববার সরেজমিনে নয়াদিল গ্রাম ও আখাউড়া উপজেলা সদরে ঘুরে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নয়াদিল গ্রামের সাদত আলীর ছেলে মোবারক মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীর রোকন ছিলেন। তবে দেশ স্বাধীনের পর বেকায়দায় পড়ে সৌদি আরবে গিয়ে সেখানে দুম্বা চড়ানোর কাজ শুরু করেন। পরে সেখান থেকে দেশে ফিরলে ‘দুম্বা হাজি’ হিসেবে এলাকায় নাম রটে তার।
জানা যায়, সৌদি আরবে গিয়ে টাকা-পয়সার মালিক বনে যাওয়ায় মোগড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে সংগঠনটিতে ঢুকে পড়েন তিনি।
কসবা আখাউড়ার সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহআলমের হাত ধরেই আওয়ামী রাজনীতিতে তার উত্থান ঘটে।
এমনকি যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা তার পক্ষে মাঠে নামেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় মোবারক সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন এমন ভুয়া সনদ যোগাড়ে অপচেষ্টাও চালিয়েছিলেন তারা।
সে সময় আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মোবারক কোন্দলের শিকার। তার গোটা পরিবার ঘোর আওয়ামী লীগ সমর্থক। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুয়েকজন নেতা ছাড়া সবাই মোবারকের সর্বোচ্চ শাস্তির পক্ষে।
এ নিয়ে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাম্মাদ হোসেন বলেন, রায় ঘোষণার খবর পাওয়ার পর রাতে নয়াদিল গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।