মৃতদেহে লাইফ জ্যাকেট নিয়ে বিতর্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৩২:২১,অপরাহ্ন ০৩ জানুয়ারি ২০১৫
অনলাইন ডেস্ক :: ইন্দোনেশিয়ার নিখোঁজ বিমান নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিস্ময়। সাগর থেকে উদ্ধারকৃত মৃতদেহের একটিতে জীবন রক্ষাকারী লাইফ জ্যাকেট পরা ছিল এমন খবর আসে। এতে অনুসন্ধানকারীরা ধারণা করেন, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে হয়তো লাইফ জ্যাকেট পরার মতো সময় পেয়েছিলেন আরোহীরা। ইন্দোনেশিয়ার অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থার হেড অব অপারেশনস তাতাং জায়েনুদ্দিন সাংবাদিকদের সামনে প্রথম তুলেছিলেন লাইফ জ্যাকেট প্রসঙ্গ। এরপরই জল্পনা-কল্পনা শুরু হয় যে আরোহীরা হয়তো বিধ্বস্ত হওয়ার আগে কিছুটা হলেও সময় পেয়েছিলেন। এখন ওই তাতাং জায়েনুদ্দিন নিজেই আবার বক্তব্য সংশোধন করে বলছেন ঠিক উল্টোটি। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, লাইফ জ্যাকেট পরিহিত কোন মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় নি। তিনি আরও ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, আমরা ৮টা ২০ মিনিটে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করি। আর লাইফ জ্যাকেট পাই এর দুঘণ্টা পর ১০ টা ৩২ মিনিটে। এর আগে ৩১শে ডিসেম্বর দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, আগের দিন মোট ৪টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একটি মৃতদেহের গায়ে ছিল লাইফ জ্যাকেট ছিল। লাইফ জ্যাকেট নিয়ে দুই রকম তথ্য আসার কারণে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। তবে উদ্ধারকর্মীরা তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও তারা প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনুসন্ধানকারীরা ধারণা করছেন যে এলাকায় মৃতদেহ ও বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে সেখানেই পানির নিচে রয়েছে এর মূল অংশ। উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি ব্ল্যাকবক্স ও ককপিটে পাইলটদের কথোপকথন রেকর্ডার। অনুসন্ধানকারীরা বিশ্বাস করছেন বোর্নিওর কাছে সমুদ্র তলায় পড়ে আছে বিমানটি। সেখানে বিশাল আকৃতির, কালো একটি জিনিস শনাক্ত করতে পেরেছে সোনার। ধারণা করা হচ্ছে, সেটি ব্ল্যাকবক্স হতে পারে। গত রোববার ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়া থেকে ১৬২ আরোহী নিয়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে আকাশে ওড়ে এয়ার এশিয়ার এয়ারবাস এ-৩২০। এর ৪০ মিনিটের মধ্যে তা বিরূপ আবহাওয়ার কবলে পড়ে। এ সময় পাইলট কন্ট্রোল সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করে আরও উঁচুতে উঠে যাওয়ার অনুমতি চান। কিন্তু উপরের স্তরে তখন অন্য বিমান থাকায় নিরাপত্তার জন্য তাকে সেই অনুমতি দেয়া হয় নি। এরপরই বিমানটির সঙ্গে কন্ট্রোল সেন্টারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারপর থেকে চলছে অনুসন্ধান। প্রথমে সবাই ধরে নিয়েছিলেন এ বিমানটিও মালয়েশিয়ার ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০-এর ভাগ্য বরণ করেছে। তারপর থেকে অনুসন্ধান করতে করতে মঙ্গলবার সমুদ্র থেকে কমপক্ষে ৪০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পাওয়া যায় বিমানটির ধ্বংসাবশেষ। বিমান কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করে এগুলো এয়ার এশিয়ার ধ্বংসাবশেষ। সুরাবায়ার এক কর্মকর্তা হার্নান্দো বলেছেন, তারা বিশ্বাস করছেন যেখানে সোনার যন্ত্রের মাধ্যমে পানিতে স্ক্যান করে কালো মতো একটি বস্তুর অস্তিত্ব ধরতে পেরেছেন সেখানেই বিমানটি সাগরের তলায় অবস্থান করতে পারে। ওদিকে সুরাবায়া কর্র্তৃপক্ষ উদ্ধার করা মৃতদেহগুলো শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৩০টি এম্বুলেন্স। আত্মীয়দের ডিএনএ’র সঙ্গে মৃতদেহের ডিএনএ মিলিয়ে দেখায় পর লাশ হস্তান্তর করা হবে। কর্মকর্তারা বলেন, সমুদ্রের যেখান থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে সেখানে পানির ঢেউ ৬ থেকে ৯ ফুট উচ্চতায় উঠে যাচ্ছে। এতে উদ্ধার অভিযান খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো বলেছেন, মৃতদেহগুলো উদ্ধার করাই এখন প্রধান অগ্রাধিকার।