‘মিয়ানমার সরকারকে আন্তর্জাতিক আদালতে তোলার দাবি’
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:১৫:২৯,অপরাহ্ন ০৮ জুন ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
মিয়ানমারে সংখ্যালঘুদের ওপর নৃশংস গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় দেশটির থেইন সেইন সরকারকে আন্তর্জাতিক আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী ও মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী।
একইসঙ্গে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের প্রতি আবারও অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করারও দাবি জানিয়েছেন তারা।
আজ সোমবার হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয় চট্টগ্রাম থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান তারা।
মিয়ানমারে চলমান নৃশংস গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এ দুই হেফাজত নেতা বিবৃতিতে বলেন, জিরো টলারেন্স নীতিতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করাই হচ্ছে মায়ানমার সরকারের দীর্ঘদিনের গোপন রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা।
বিবৃতিতে তারা বলেন, বিশ্বজুড়ে প্রবল নিন্দা, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সত্ত্বেও মায়ানমার সরকার ও সেদেশের উগ্র সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদেরকে এহেন নিষ্ঠুর গণহত্যা ও বর্ণবাদী উগ্রতা থেকে নিবৃত্ত করা সম্ভব হচ্ছেনা। কার্যত মায়ানমারে এখন নব্য নাৎসিজমের উত্থান ঘটেছে।
মিয়ানমারে সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রতিক হমলা ও অমানবিক নির্যাতনের কথা তুলে ধরে তারা বলেন, সাম্প্রতিককালে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর মায়ানমার সরকার ও সংখ্যাগরিষ্ঠ উগ্র বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর সম্মিলিত ফ্যাসিবাদী জুলুম ও রাষ্ট্রীয় গণহত্যা তীব্রতর হয়েছে।
মিয়ানমারের থেইন সরকারকে বর্ণবাদী উল্লেখ করে হেফাজতের দুই আমির বলেন, মায়ানমারের বর্ণবাদী থেইন সেইন সরকার সেদেশ মুসলিম সংখ্যালঘুদের বসবাসের ন্যায্যতা ও নাগরিকত্বকে অস্বীকার করে কার্যত মানবতাবিরোধী নৃশংস পন্থায় ‘জাতিগত শুদ্ধি অভিযান’ পরিচালনা করছে ।
মিয়ানমারে মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন ও সাম্প্রদায়িক আগ্রাসনের নেতিবাচক প্রভাব আশপাশের মুসলিম দেশগুলোর ওপরও পড়ছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন তারা। আল্লামা শফী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের উদাসীনতা ও অবহেলায় আমরা চরমভাবে ক্ষুব্ধ।
বিবৃতিতে হেফাজত আমির মিয়ানমারে অসহায় উদ্বাস্তুদেরকে অনতিবিলম্বে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু আইন ও নীতিমালা অনুযায়ী জরুরি সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানান।
মিয়ানামারে রোহিঙ্গা মুসলমান নিধনের বিরুদ্ধে শীর্ষ মুসলিম দেশগুলোর ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন হেফাজতের মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরী। তিনি বলেন, বিশ্ব বিবেক জেগে উঠলেও মায়ানমার সরকারের সাথে আর্থিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থের কারণে মার্কিন প্রভাবাধীন তথাকথিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নীরব ও তৎপরতাহীন ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা নির্যাতন ও গণহত্যার ঘটনা প্রমাণ করে যে মিয়ানমারে আদতে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। ইউরোপ-আমেরিকার সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার বৈধতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমার গণতন্ত্রের মুখোশ ধারণ করে আছে বলে মনে করেন তিনি।