মিছিলের অগ্রভাগে অপি
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৩৬:২৯,অপরাহ্ন ০২ ডিসেম্বর ২০১৪
বিনোদন ডেস্ক:: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। বেশ ফাঁকা ফাঁকা। হাত-পা মেলে বসে আছেন পরিচালক মাহমুদ দিদার। পাশে রওনক হাসান বসে মুঠোফোনে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ম্যাচের আপডেট দেখছেন। সহকারী পরিচালক, ক্যামেরাম্যান-সহ অন্যান্যরা এলোপাতাড়ি ঘুরছেন। খানিকটা দূরে পড়ে আছে ট্রলি। পরিস্থিতি মন্থর। ‘বাংলাদেশ’ নাটকের দৃশ্যধারণ হওয়ার কথা। দুপুর ১টা পেরিয়ে গেছে। এখনও অপি করিম এসে পৌঁছাননি। তিনি রাস্তায়, জ্যামে আটকে আছেন। মুঠোফোনের পর্দায় চোখ রেখে, কণ্ঠে রসিকতা ঢেলে রওনক বললেন, ‘জ্যামের কবলে মাহমুদ দিদার ও বাংলাদেশ!’ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ দৃশ্য ১ ডিসেম্বরের।
নাটকটি মুক্তিযুদ্ধের। এখানে অপি করিম সাংবাদিক। সংবাদ সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় তিনি একজন যুদ্ধাপরাধীর দেখা পাবেন। যিনি সমাজের চোখে খুবই সম্মানিত। কিন্তু ভেতরে লালন করে চলেছেন দেশবিরোধী চেতনা। কিন্তু এত কাজ কখন করবেন অপি? বেলা যে বয়ে যায়!
অপি এসেছেন। দাঁড়িয়েছেন ক্যামেরার সামনে। সামনে ঠিক নয়, ক্যামেরা থেকে বেশ দূরত্বে তার অবস্থান। দৃশ্যটা এমন- বিপরীত দিক থেকে হন্তদন্ত হয়ে হেঁটে আসবেন অপি করিম ও রওনক হাসান। দেখা হয়ে যাবে। অপি ব্যস্ত কণ্ঠে রওনককে খুলে বলবেন তার সমস্যার কথা। সমস্যাটা হচ্ছে, অপি যেহেতু সাংবাদিক, একজন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে একটি রিপোর্ট লিখেছিলেন কিছুদিন আগে। কিন্তু এখন গুজব আসছে- লোকটি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা! শুধু তা-ই নয়, সে একজন যুদ্ধাপরাধী। যে লোকটি এই তথ্য দিয়েছে, সে-ও আবার খুব আত্মবিশ্বাসী। তার কাছে প্রমাণ আছে। অপি পড়েছেন মহাঝামেলায়!
কথাবার্তা শেষ। দৃশ্যধারণও শেষ। মধ্যাহ্নভোজের বিরতি শুরু। এই ফাঁকে অপি গেলেন পোশাক পাল্টাতে। ফিরলেন লাল টুকটুকে শাড়ি পরে। এ যেন ‘রক্তকরবী’ থেকে ঘুম চোখে উঠে এলো নন্দিনী! অপি দুপুরে কিছু খেলেন না। মিছিলের অগ্রভাগে দাঁড়ালেন। এ দৃশ্যের ঘটনা হচ্ছে, অপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে একটি সংগঠন করেছেন। নাম ‘যুদ্ধ ৭১’। সামনে জনাকয়েক লোক। সবার হাতে প্ল্যাকার্ড। দু’হাতে গভীর মমতায় সাদা ব্যানার ছুঁয়ে অপি ভাষণ দিয়ে চলেছেন। এবার বিস্ময়ের সাগরে আরও খানিকটা ডুবে যাওয়ার পালা। অপির অগ্নিমূর্তি। তার কণ্ঠে আগুন ঝরছে। স্লোগানে কেঁপে উঠছে উদ্যানের বাতাস। ব্যস্ত পথচারী ঘুরে তাকাচ্ছে। দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। অবাক হচ্ছে। সবার চোখেমুখে একটাই প্রশ্ন- এক অপির এতো রূপ!