মালাউনের বাচ্চা তোর চাকরি থাকবে না : পিন্টু
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৪৬:২৮,অপরাহ্ন ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
বিডিআর বিদ্রোহের মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু ঢাকার আদালতে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে গালি দিয়ে তার চাকরিচ্যুতির হুমকি দিয়েছেন। পিন্টু বলেন, “এই গোপালগঞ্জের পুলিশ, মালাউনের বাচ্চা, শুয়োরের বাচ্চা, তোর চাকরি থাকবে না।”
সাংবাদিক ও কয়েকজন আইনজীবীর সামনেই ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে মারতে উদ্যত হন ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি।
ত্রাণের টিন আত্মসাতের একটি মামলায় ঢাকার ১ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে হাজির করাতে বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের কারাগার থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের কোর্ট হাজতে আনা হয় পিন্টুকে।
এ সময় পুলিশের অনুমতি ছাড়াই তার এক আইনজীবী ও কয়েক সমর্থক হাজতে পিন্টুর কাছে যান। এর প্রতিবাদ করায় আটক অবস্থায় পিন্টু এসআই দেবব্রতকে ‘মালাউনের বাচ্চা’ বলে গালি দেয়ার পর মারতে যান।
পিন্টুর আইনজীবী আসলাম উদ্দিন ও তৌহিদুল ইসলাম এ সময় তাদের মক্কেলকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।
বিষয়টি পুলিশের সঙ্গে মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য আদালতপাড়ার একজন সাংবাদিককে অনুরোধও করেন এ দুই আইনজীবী।
আইনজীবী আসলাম বলেন, “এমনিতেই পিন্টুর মন খারাপ। এতদিন ধরে কারাগারে। এ অবস্থায় তার সঙ্গে একটু রয়ে সয়ে সাবধানে পুলিশের আচরণ ও ব্যবহার করা উচিৎ ছিল।”
এ ঘটনার পর পিন্টুর অন্য আইনজীবী তৌহিদুল ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. বোরহানউদ্দিন এবং আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন জসীমের কাছে ছুটে যান।
ঘটনাটির বিষয়ে মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, “পিন্টুকে মেন্টাল (পাগল) বলায় ক্ষেপে গিয়ে তিনি একজন পুলিশ কর্তাকে গালি দেন।”
ঘটনার সময় কোর্ট হাজতে অবস্থানরত কোর্ট ইন্সপেক্টর ফরমান আলী সাংবাদিকদের বলেন, “ওই কর্মকর্তাকে একটি সাম্প্রদায়িক গালি দিয়েছেন পিন্টু।”
কোতোয়ালি থানার এসআই দেবব্রত বলেন, “অনুমতি ছাড়া হাজতে আইনজীবীসহ সমর্থকরা ঢুকতে গেছে বলে আমি বাধা দিয়েছি। আমার দায়িত্বের খাতিরেই এ কাজ করেছি। কিন্তু পিন্টু আমাকে সাম্প্রদায়িক একটি শব্দ ব্যবহার করে গালি দিয়ে মারতে উদ্যত হন।”
কোর্ট হাজতে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম গালি ও মারতে উদ্যত হওয়ার সংবাদটি প্রকাশ না করতে সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ করেন।
পিন্টুর হয়ে পুলিশ, সাংবাদিক ও উপস্থিত আইনজীবীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন বারের সাধারণ সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন জসীম। দণ্ডিত পিন্টুর বিরুদ্ধে যেন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, সেজন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেন তিনি।
সরকারি প্রতিনিধি হয়ে ত্রাণের টিন আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকার লালবাগের বিএনপির সাবেক সাংসদ পিন্টুর বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ২৬ মার্চ হাজারীবাগ থানায় এই মামলা হয়। সে বছর ৮ অক্টোবর অভিযোগপত্র দাখিলের পরের মাসে বিচারের জন্য মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে পাঠানো হয়।
এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে আট জনের সাক্ষ্য নেওয়া শেষ হয়েছে। বৃহষ্পতিবার সাক্ষ্য গ্রহণের নির্ধারিত দিনে কোনো সাক্ষী না আসায় বিচারক দলিল উদ্দিন আগামী ২৯ জানুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন রেখেছেন।