মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলছে
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৩১:১৮,অপরাহ্ন ০৪ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক :: খুলে যাচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। প্রধানমন্ত্রীর মালয়েশিয়া সফরে জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে সমঝোতা স্মারক সংশোধন করে প্রটোকল স্বাক্ষর করা হয়েছে। এতে দেশটির সারওয়াক প্রদেশে নতুন করে ১২ হাজার বাংলাদেশি কর্মী কাজ করতে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফরে শ্রমবাজার নিয়ে যেসব জটিলতা ছিল, তাও খুলে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে এমন আশ্বাসই দিয়েছেন মালয়েশীয় সরকার। খুব শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানি শুরু হবে মালয়েশিয়ায়।
প্রধানমন্ত্রী মালয়েশিয়া সফরে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন শ্রমবাজারকে। কারণ প্রায় ৬ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছেন মালয়েশিয়ায়। অন্যান্য দেশের মধ্যে মালয়েশিয়া থেকে পাঠানো রেমিট্যান্স রয়েছে পঞ্চম স্থানে। তাই সরকার মালয়েশিয়ায় বেশি করে কর্মী পাঠিয়ে শ্রমবাজারকে আরো সম্প্রসারণের ওপর খুব জোর দিয়েছে।
মালয়েশিয়া ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও প্রতারণার কারণেই বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার।
পরে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে মালয়েশিয়া নতুন করে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে রাজি হয়। ২০১২ সালে জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় জিটুজি চুক্তি। এই চুক্তির আওতায় আগ্রহীরা মাত্র ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় যেতে পারছেন মালয়েশিয়া।
জিটুজি চুক্তি বন্ধ করতে কিছু রিক্রুটিং এজেন্সি সরকারের বিরুদ্ধে লিপ্ত হয় অপতৎপরতায়। তাই হুমকির মুখে পড়ে জিটুজির মাধ্যমে লোক পাঠানো। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বলা হয়েছিল, পরবর্তী কয়েক মাসের মধ্যেই মালয়েশিয়ায় যেতে পারবেন ১০ হাজার শ্রমিক। এই চুক্তির আওতায় গত ১৯ মাসে গেছেন মাত্র ৫ হাজার ৩৪০ কর্মী।
জিটুজি থমকে যাওয়ায় অবৈধ পথে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া গমনের হার বেড়েছে। বিশেষ করে, সাগরপথে নৌকায় মালয়েশিয়া যেতে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেক বাংলাদেশি। এতে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তাই বৈধভাবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রমিক পাঠানোর দ্বার খুলতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালয়েশিয়ায় গেছেন।
বুধবার জনশক্তি নিয়ে একটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছে। মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির জন্য ২০১২ সালে যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছিল, তাতে কিছু ভুল ছিল। চুক্তিতে ত্রুটির কারণেই মালয়েশিয়ার মূল ভূখণ্ডে কর্মরত শ্রমিকরা মাসে বেতন পান ৯০০ রিঙ্গিত বা ২১ হাজার টাকা। অন্যদিকে মূল ভূখণ্ডের বাইরে সারওয়াক প্রদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা মাসিক বেতন পান ৮০০ রিঙ্গিত বা ১৯ হাজার টাকা।
প্রধানমন্ত্রীর সফরে আগের সম্পাদিত সমঝোতা স্মারক সংশোধন করে একটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছে। নতুন করে প্রটোকল স্বাক্ষর করায় সারওয়াক প্রদেশে কর্মরত শ্রমিকরাও মূল ভূখণ্ডে কর্মরত শ্রমিকদের সমান বেতন পাবেন। একই সঙ্গে ১২ হাজার কর্মী পাঠানোর পথে আর বাধা থাকল না। খুব শিগগিরই সারওয়াক প্রদেশে কর্মী পাঠাতে পারবে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রীর সফরে দুই দেশের মধ্যে সহজে যাতায়াতের জন্য ভিসা সহজীকরণ, কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টে ভিসা অব্যাহতি-বিষয়ক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। পর্যটন সহযোগিতা ও দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বিষয়েও দুটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করা হয়েছে।