মাতারা হারিক্যান’ জয়াসুরিয়ার যত অপকর্ম
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:১৩:৪১,অপরাহ্ন ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
স্পোর্টস ডেস্ক:: ক্রিকেট বিশ্বে তিনি ‘মাতারা হারিক্যান’ নামে খ্যাত। খেলোয়াড়ি জীবনে তিনি ব্যাট হাতে নামলে প্রতিপক্ষ বোলারদের হাঁটুতে কাঁপুনি শুরু হয়ে যেত। সেই শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি সনৎ জয়াসুরিয়ার ক্যারিয়ারে কিন্তু বিতর্কের পরিমাণও কম নয়। সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগে আইসিসি দুই বছর নিষিদ্ধ করেছে তাকে। এর আগেও বাংলাদেশকে ‘তৃতীয় শ্রেণির দল’ বলাসহ বিভিন্ন সময় বেশ কিছু বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। এবার সেগুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক:
সুপারি চোরাচালানির অভিযোগ
মাতারা হারিক্যানের বিরুদ্ধে সবচয়ে গুরুতর অভিযোগ এটি! শ্রীলঙ্কা থেকে ভারতে সুপারি পাচার করা একটি লাভজনক ব্যবসা। সুপারি শ্রীলঙ্কায় আনা হয় ইন্দোনেশিয়া থেকে। এই বেআইনি কাজটি করার জন্য শ্রীলঙ্কায় কিছু ভুয়া প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেছিলেন জয়াসুরিয়া। এসব করতে তিনি ব্যক্তিগত ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। নাগপুরে রাজস্ব কর্মকর্তারা জয়াসুরিয়ার চোরাচালান করা লাখ লাখ টাকার সুপারি হাতেনাতে আটকও করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে জয়াসুরিয়ার নাম।
বাংলাদেশ তৃতীয় শ্রেণির দল
বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে বাজে মন্তব্য করা বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের মধ্যে জয়াসুরিয়াও অন্যতম। ঘটনা গত বছরের। শ্রীলঙ্কার মাটিতে নিদাহাস ট্রফি খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ ও ভারত। গ্রুপপর্বে শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ ম্যাচটি ছিল অঘোষিত সেমিফাইনাল।উত্তেজনাকর সেই ম্যাচের শেষ দিকে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত সাকিব খেলা বর্জনের কথা বলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ আবার শুরু হলে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে নেয়। কিন্তু ম্যাচ শেষে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ড্রেসিং রুমের কাচ ভাঙার অভিযোগ ওঠে সাকিবদের বিপক্ষে। এই ঘটনায় বাংলাদেশ দলকে ‘তৃতীয় শ্রেণির দল’ বলে টুইট করেন জয়াসুরিয়া।
যৌন ভিডিও ফাঁস
২০১৬ সালে ফাঁস হয়েছিল জয়াসুরিয়ার যৌন সম্পর্কের একটি ভিডিও ক্লিপ। সেই সময় তীব্র সমালোচনার মুখে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই ভিডিও ক্লিপটিতে আসলে ছিল সাবেক বান্ধবীর সঙ্গে জয়াসুরিয়া যৌন সম্পর্কের দৃশ্য। শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যম এখনও দাবি করে যে, বান্ধবীর ওপর প্রতিশোধ নিতে জয়াসুরিয়া নিজেই ওই ভিডিও ছড়ান ইন্টারনেটে।
পশ্চিমবঙ্গের ক্রিকেট লিগে প্রতারণা
ওপার বাংলার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (সিএবি) লিগে অদ্ভূত এক কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন মাতারা হারিক্যান। ২০১৩ সালের সেই মৌসুমে তিনি সাক্ষর করেছিলেন লিগের দুটি দলে! দল দুটি ছিল কালিঘাট ক্রিকেট ক্লাব ও মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব। বিষয়টি ধরা পড়লে দুই দল থেকেই তাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়; অভাবনীয় এই ঘটনার পর জয়াসুরিয়াকে নিষিদ্ধ করে সিএবি। সেইসঙ্গে লিগে বিদেশি ক্রিকেটার আনাও নিষিদ্ধ করা হয়।
ছাত্র পেটানোর অভিযোগ
২০১৪ সাল। শ্রীলঙ্কার মাতারার রুহুনা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি উন্নয়ন প্রদর্শনীর আয়োজন করতে চেয়েছিল তখনকার ক্ষমতাসীন সরকার। ছাত্ররা এর বিরোধিতা করেছিল। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের গায়ে হাত তুলেছিল এক দল দুষ্কৃতকারী। তখন দেশটির গণমাধ্যমে অভিযোগ ওঠে, জয়াসুরিয়ার নির্দেশেই নাকি এই হামলা চালিয়েছিল সন্ত্রাসীরা! সেই ঘটনা নিয়ে জয়াসুরিয়া বলেছিলেন, ‘আমি ওখানকার স্থানীয় সংসদ সদস্য। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের বিপক্ষে স্থানীয় বাসিন্দাদের আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম। তবে কারও ওপর আক্রমণ করিনি। ঘটনার সময় আমি সেখানে ছিলাম না।’