মাইজভান্ডার দরবারে লাখো মানুষের ঢল
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:২৫:০১,অপরাহ্ন ২৩ জানুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
মহান ১০-ই মাঘ উপলক্ষে লাখ লাখ ভক্ত-অনুরক্ত ও আশেকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে ফটিকছড়ি মাইজভান্ডার দরবার শরীফ। গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী মওলানা শাহ ছুফী সৈয়দ আহম উল্লাহ (কঃ) এর ১০৯ তম ওরশে যোগ দিতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েকদিন ধরেই আসতে শুরু করেছেন ভক্তরা। প্রতিবছরের মতো এবারও সাজ্জাদানশীনে দরবারে গাউছুল আজম হযরত মওলানা শাহ ছুফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারী (ম:জি:আ:) ব্যাপক কর্মসূচির আয়োজন করেছেন।
মহান ১০-ই মাঘ মাইজভান্ডার দরবার শরীফে প্রধান দিবস হিসেবে প্রতিবছর গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে। এ উপলক্ষে মাইজভান্ডার এলাকায় মেলা আর হরেক রকম পসরা বসেছে। জানা গেছে, মাইজভান্ডারী ত্বরিকা কোরআন ও হাদিস ভিত্তিক ইসলামের মৌলিক ভাবাদর্শের অনুসরণে প্রতিষ্ঠিত একটি ত্বরিকা। গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (ক:) এ ত্বরিকা প্রতিষ্ঠা করেন। অন্যান্য ত্বরিকার আত্মিক ও আধ্যাত্মিক বৈশিষ্টগুলো মাইজভান্ডারী ত্বরিকায় একত্রিত হয়েছে।
জানা যায়, সৈয়দ হামিদ উদ্দীন গৌড়ি ১৫৭৫ সালে ইসলাম প্রচার মানসে চট্টগ্রামে আগমন করে পটিয়া থানার কাঞ্চননগরে বসতি স্থাপন করেন। তারই বংশধর মওলানা সৈয়দ মতিউল্লাহর পবিত্র ঔরসে ১৮২৬ সালে হযরত শাহ সুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (কঃ) জন্মগ্রহণ করেন। ১২৬০ হিজরীতে তিনি উচ্চশিক্ষার্থে কলকাতা গমন, ১২৬৮ হিজরীতে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার শেষ পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন এবং হাদিস, তাফসীর, ফেকাহ,ইত্যাদি শাস্ত্রে বিশেষ পারদর্শীতা অর্জন করেন।
১২৬৯ হিজরিতে যশোর জেলায় কাজী (বিচারক) পদে যোগদান করে ১২৭০ হিজরিতে পদত্যাগ করে কলকাতার মুন্সি বু-আলী মাদ্রাসায় প্রধান মোদাররেস পদে যোগদান করেন। তার পীর গাউছুল আজম মহি উদ্দীন আবদুল কাদের জীলানীর (রহঃ) বংশধর শেখ সৈয়দ আবু শাহমা মুহাম্মদ ছালেহ আল কাদেরী লাহোরী (রহ:) এর নিদের্শে ১৮৫৭ সালে নিজ গ্রাম মাইজভান্ডারে ফিরে আসেন।
কিছুদিনের মধ্যেই তার কামালিয়তের কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ঐশী-প্রেম পিপাসু সাধক ও দোয়া প্রত্যাশীদের ভীড়ে এই সাধকের পবিত্র বাসগৃহ আধ্যাত্বিক দরবারে পরিণত হয়। লোকসমাজে পরিচিতি পায় ‘মাইজভান্ডার দরবার শরীফ’ হিসেবে। ৭৯ বছর বয়সে ১৯০৬ খ্রীষ্টাব্দে ১০ মাঘ সোমবার দিবাগত রাতে ইহধাম ত্যাগ করেন। তার ওফাত দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর ৮, ৯ ও ১০ মাঘ ৩ দিনব্যাপী ওরস শরীফ অনুষ্ঠিত হয়।
মহান এই আধ্যাত্মিক সাধকের পবিত্র ওরশ শরীফে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, ভুটান, আরব আমিরাত, বাহরাইন ইত্যাদি দেশ থেকে পীর মাশায়েখ, গবেষক, বৃদ্ধিজীবি, পর্যটক, আশেক, ভক্ত, মুরিদান, জায়েরীন গণ উপস্থিত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিটে আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করবেন গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের একামাত্র সাজ্জাদানশীন, রাহনুমায়ে শরীয়ত ও তরিকত হযরত মওলানা শাহ্ ছুফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারী (ম:জি:আ:)। ওরশ শরীফ সার্বিক তত্তাবধানে আছেন নায়েব সাজ্জাদানশীন ও মোন্তাজেমে দরবার সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভান্ডারী (ম:জি:আ:)।