ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে সিলেট ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ‘আবু সিনা ছাত্রাবাস’!
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৪২:৪৭,অপরাহ্ন ০৭ মার্চ ২০১৯
নিউজ ডেস্ক:: ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত সিলেট নগরের প্রাণকেন্দ্রের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ‘আবু সিনা ছাত্রাবাস’। এখানে প্রতিষ্ঠিত হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধকালে পাক হানাদার বাহিনী গণহত্যা চালিয়েছিল। এই ভবন থেকেই ১৮৭৬ সালের ১লা জানুয়ারী সিলেট থেকে প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র ‘শ্রীহট্ট প্রকাশ’-এর যাত্রা শুরু হয় (তথ্য সুত্র নিচে সংযুক্ত)।
‘ব্রিটিশ ও আসাম স্থাপত্য রীতিতে তৈরী প্রায় দেড় শতক প্রাচীন এই দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা ভেঙ্গে এখানে ২৫০ শয্যার আধুনিক জেলা হাসপাতাল নির্মান করা হবে। সেই প্রকল্পের কাজ সম্প্রতি শুরু করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের জন্য গণপূর্ত অধিদপ্তর ৮৭ কোটি টাকা ব্যায়ে ১৫ তালা ভিত বিশিষ্ট এই হাসপাতালের নির্মান কাজ শুরুর কার্যদেশ পেয়েছে গত ৯ই জুলাই ২০১৮ ইং তারিখে। নিঃশব্দে ছাত্রাবাস খালি হওয়ার পর সম্প্রতি এরা কাজ শুরু করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান GKBPL-PAEL (JV)।
প্রবাসী একজন সাবেক ছাত্রনেতা এই অপকর্মের কথা জানিয়ে তা রক্ষা করতে উদ্যোগ নিতে বলেন।ভাঙ্গা শুরু হয়েছে তা বিশ্বাস হয়নি। সোজা চলে যাই নগরীর কেন্দ্রস্থল হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারের দক্ষিণপার্শ্বে বর্তমান শহীদ শামসুদ্দিন আহমেদ হাসপাতালের পশ্চিমে অবস্থিত আবু সিনা ছাত্রাবাস নামে পরিচিত এই ভবন চত্ত্বরে। নিজের চোখে দেখে বিশ্বাস করতে হয়। মন খারাপ করি।
ভাঙ্গার কাজ মাত্র শুরু হয়েছে।মেডিক্যাল কলেজের পরিচালকের বাংলোর বিপরিতে ভবনটির উত্তর-পশ্চিমপ্রান্তের একাংশ ভেঙ্গে ভারী যানবাহন প্রবেশের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। ভবনের মধ্যবর্তী খোলা জায়গায় নির্মান সামগ্রী স্তুপাকারে জমা করা হচ্ছে। ভবনের বিভিন্ন কক্ষে সিমেন্ট রাখা আছে। একাধিক কক্ষের দরজা খুলে ফেলা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে ভবন ধ্বংসের সব আয়োজন চূড়ান্ত। কিন্তু এখনো আশা আছে ভবনটি রক্ষা করার। হয়তো রক্ষা করা যাবে, কর্তাদের যদি বিবেচনাবোধ জাগে তবে ভবন ভাঙ্গার কাজ থামানো সম্ভব হবে।
আর তা ছাড়া সিলেট-এর সাংসদ মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এই বিষয়টি তুলে ধরা হলে অবশ্যই কিছু একটা হবে।যদিও মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অগ্রজ সদ্য সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মা’ল আব্দুল মুহিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে এখানে ২৫০ শয্যার এই জেলা হাসপাতাল নির্মানের ভিত্তিপ্রস্তর নির্মাণ করেছিলেন। যিনি এক সময় পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ছিলেন! যাইহোক, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পরিবার সিলেটের ইতিহাস-ঐতিহ্য রক্ষার ব্যাপারে আগ্রহী আছেন এমনটাই প্রত্যাশা করছি। কিন্তু উনার কাছে এ ভবন রক্ষার বিষয়তো কাউকে তুলে ধরতে হবে।
জাতীয় বা স্থানীয় সংবাদপত্রে ভবনটির গুরুত্ব তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশিত হলে হয়তো ফলাফল পাওয়া যেত। কিন্তু সিলেটের জাতীয় বা স্থানীয় কোন সাংবাদিকদের কাছে এই স্থাপনা ভাঙ্গার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ কোন সংবাদ উপাদান হবে কি? বিষয়টি তাঁদের অজানা আছে বলে মনে হয় না। তাঁদের কাছে এর গুরুত্ব থাকলে এতোদিনে অন্তত একটা নিউজ হতো।কোন সংবাদ দেখিনি।যাই হোক, নিরুপায় হয়ে নিজেই সামান্য তত্ত্ব-উপাত্ত্বে লিখতে বসেছি।
বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব আইনে আইনে বলা আছে, কোনো ভবন বা স্থাপনা মূলত সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক বা ব্যবহারিক মূল্যবোধের বিবেচনায় সংরক্ষণ বা ঐতিহ্যের তালিকায় রাখার যোগ্য হয়। তবে ওই ভবনটির অবশ্যই কোনো ঐতিহাসিক নিদর্শন বা শিল্পমূল্য থাকতে হবে।একটা ভবন বা স্থাপনা সাধারণ ক্ষেত্রে ১০০ বছরের পুরনো হলে এ সংস্থাটি ওই স্থাপনাকে সংরক্ষণ বা তালিকাভুক্তির বিবেচনা করতে পারে। এর জন্য আইনও রয়েছে তবে তিন ধরনের আইন চালু থাকায় এক ধরনের সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আইনগুলোর প্রথমটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের। একে ১৯৭৪ সালের সংরক্ষণ আইন বলা হয়।
এ আইনের বলে জাদুঘর থেকে সংস্কৃতি ইতিহাস বিষয়ক স্থাপনাগুলো গুরুত্ব পেয়ে থাকে। দ্বিতীয়টি গণপূর্ত বিভাগের ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড আইন। আর আরেকটি আইন হলো বাংলাদেশ মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৬/২০০৮। এর মাধ্যমে রাজউক ও সিটি করপোরেশন কাজ করে থাকে। এসব আইনের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো সংরক্ষণ করার কথা। কোন আইনেই এই ভবনের কথা ভাবা হয়নি।
এই ভবনের নির্মাণ কে করেছেন বা কাদের মালিকানার এই ভবন প্রথম নির্মিত হয়, সে সম্পর্কে এখনো অথেনটিক কোন তথ্য জানতে পারিনি।সিলেট বারের সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শাহিদুল ইসলাম বলেন, এই ভবনটির নির্মাতা সম্পর্কে আমি নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না। তবে শুনেছি এটা দুহালিয়া জমিদার বাড়ির সম্পত্তি, যা ‘দুহালিয়া হাউজ’ নামে নির্মিত হয়। পরবর্তীতে সিলেট ভ্যালী মেডিক্যাল স্কুল এখানেই প্রতিষ্ঠা করা হয়।
এই তথ্য নাকচ করে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, এটি সুনামগঞ্জ-এর গৌরাং রাজার সম্পদ হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। তবে পূর্বে যাই থাকুক, ১৯৩৬ সালে সিলেটের সিভিল হাসপাতাল স্থাপিত হওয়ার একযুগ পর ১৯৪৮ সালে নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় ফার্গুসন রোডের দক্ষিণ পাশে (বর্তমান ডাঃ চঞ্চল সড়ক) এটিকে সংস্করণ ও বর্ধিতকরণ করে দক্ষ সেবক ও ‘লাইসেনশিয়েট মেডিকেল ফ্যাকাল্টি (এলএমএফ)’ চিকিৎসক তৈরির জন্য সিলেট মেডিকেল স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়।
এরপর স্কুলটিকে কলেজে রূপান্তরের দাবীতে আন্দোলন হলে ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সরকারের আমলে এটিকে সিলেট মেডিকেল কলেজ নামে উন্নীত করা হয়। ১৯৬৮-৬৯ সালে কলেজ ক্যাম্পাস সম্প্রসারণ করা হয়।
মুজিবুর রহমান চৌধুরী আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ প্রফেসর ডাঃ শামসুদ্দিন আহমদ এই মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শল্য বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (১৯৬৯-১৯৭১) হিসাবে দায়িত্বপালন কালেই পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শহীদ হয়েছিলেন ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শহীদ প্রফেসর ডাঃ শামসুদ্দিন আহমদ-এর কনিষ্ঠ পুত্র প্রফেসর ডাঃ জিয়াউদ্দিন সাদেক-কে এ বিষয়ে জানতে ফোন করি। তিনি বলেন, এই হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ চত্বরেই আমার বাবার মৃত্যু হয়েছে। বর্তমান আবু সিনা ছাত্রাবাসে মেডিক্যাল কলেজের ক্লাস নেয়া হত। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ শুরু হলে বাবা দ্রুততম সময়ে হাসপাতালে আসা আহত রোগীদের চিকিৎসার জন্য বড় মাপের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংক খোলেন এবং আহত রুগীদের চিকিৎসার জন্য একটি ইমার্জেন্সি স্কোয়াড গঠন করেন। একইসাথে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সক্রিয় সহায়তা প্রদান করেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাজ করছেন এমন তরুণ চিকিৎসকদের ওষুধপত্রের যোগান সরবরাহ করতেন ।
তিনি বলেন, সিলেট শহরে পাকবাহিনীর অত্যাচার ও গণহত্যা ব্যাপকতর হয়ে উঠে। ফলে মেডিকেল কলেজের ছাত্র, শিক্ষক ও চিকিৎসকরা শহর ছেড়ে শহরতলি এলাকায় আশ্রয় নেন। শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের মহিলা নার্সদের তাদের নিরাপত্তার প্রশ্নে দায়িত্ব থেকে ছুটি দিয়ে দেন। কিন্তু তিনি তাঁর সহকর্মী ডাঃ শ্যামল কান্তি লালা, নার্স মাহমুদুর রহমান, অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার কোরবান আলী এবং জনকয়েক চিকিৎসা সহকারিকে নিয়ে হাসপাতালে রুগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত থাকেন।
১৯৭১ সালের ৯ এপ্রিল তৎকালীন সিলেট মেডিকেল কলেজের কাছে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসেনাদের মধ্যে যুদ্ধ হয়। মুক্তিযোদ্ধারা নিকটবর্তী পাহাড়ের উপরে অবস্থিত সিভিল সার্জনের বাংলো থেকে আক্রমণ পরিচালনা করে। গুলির আঘাতে পাকসেনাদের গাড়ি বহরের প্রথম জিপটি উল্টে যায়। ফলে তিনজন পাকসেনা নিহত হয়। পাকসেনারা তাৎক্ষনিকভাবে হাসপাতাল এলাকা ঘিরে ফেলে। তারা হাসপাতাল ও এর আশপাশের এলাকা থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। হাসপাতাল ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়া গেরিলা যোদ্ধারা তখন বিচ্ছিন্নভাবে সরে পড়ে।
হানাদার বাহিনীর মেজর রিয়াজের নেতৃত্বে একদল পাকসেনা হাসপাতালে প্রবেশ করে। ভেতরে কোনো মুক্তিযোদ্ধা না পেয়ে তারা আমার বাবা ডাঃ শামসুদ্দিন আহমদ, ডাঃ শ্যামল কান্তি লালা, নার্স মাহমুদুর রহমান, পিয়ন মোঃ মুহিবুর রহমান ও মোখলেছুর রহমান, অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার কোরবান আলী সহ মোট নয়জনকে হাসপাতাল থেকে বাইরে এনে চত্বরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করায়। প্রথমে বাবার (ডাঃ শামসুদ্দিন আহমদ) বাম উরুতে গুলি করা হয়। দ্বিতীয় গুলিটি তাঁর পেটের বা পাশে বিদ্ধ হয় এবং তৃতীয় গুলিটি তাঁর বক্ষ ভেদ করে বেরিয়ে যায়। সাথে সাথে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এরপর লাইনে দাঁড় করানো সবাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
১৩ এপ্রিল কিছুক্ষণের জন্য কারফিউ শিথিল হলে কয়েকজন নিকটাত্মীয় এসে তাঁর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ছোট গর্ত করে দ্রুততার সঙ্গে সমাহিত করেন। অন্যদের মরদেহও পাশে সমাহিত করা হয়। বর্তমানে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে এখানেই বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে।
ডাঃ জিয়াউদ্দিন সাদেক আবু সিনা ছাত্রাবাস ভেঙ্গে ফেলার সংবাদে দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলেন, শুধুমাত্র মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির জন্য নয়, সিলেটে প্রাচীন স্থাপনা একেবারেই নেই। আমাদের নগরের ইতিহাস ঐতিহ্য রক্ষার স্বার্থে ভবনটি টিকে থাকুক ।
এই ভবন ভেঙ্গে হাসপাতাল নির্মানের সংবাদ জানালে প্রবাসী সাংবাদিক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন বলেন, চৌহাট্টা থেকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে সরকারী বেসরকারী একাধিক চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে। এখানে নতুন করে আরো হাসপাতাল বানানোর চেয়ে চিকিৎসা সেবা শহরতলীতে স্থানান্তর প্রয়োজন। টুকেরবাজার বা খাদিম এলাকাতে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল বানালে মানুষ বেশী উপকার পেত। প্রয়োজনে শহীদ ডাঃ শামসুদ্দীন আহমদ হাসপাতালকে আরো আধুনিকায়ন করা হোক।
এই বিষয়ে মহানগর আওয়ামীলীগের একজন অন্যতম নেতার সাথে কথা বলি। তিনি এ সম্পর্কে অবগত নন বলে জানান। কথা প্রসঙ্গে তিনি জানতে চান, এখানে হাসপাতাল বানানো না হলে এই ভবন কি কাজে ব্যাবহার হবে?
তখন তাঁকে জানাই, ২০১২ সালে যখন সিলেটে বিভাগীয় যাদুঘর প্রতিষ্ঠার জন্য স্থান নির্ধারনের চেষ্টা চলছিল, তখন এই ভবনকে বিভাগীয় যাদুঘর করার প্রস্তাব দিয়ে স্থানীয় সংবাদপত্রে কলাম লিখেছিলাম। সেই লেখাতে আবু সিনা ছাত্রাবাসকে স্থানান্তর করে ভবনটিকে বিভাগীয় যাদুঘর হিসাবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানাই।
ইতিহাস ঐতিহ্যে বাংলাদেশের মধ্যে সিলেট বিভাগের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। সাত’শ বছর পূর্বে হযরত শাহজালাল (রহঃ)-এর সিলেট নগরে আগমনের পূর্বে এই নগরী হিন্দু রাজা গৌড়গোবিন্দের রাজধানী ছিল। এর বহুপূর্ব থেকেই এই নগরী গড়ে উঠলেও এখানে প্রাচীন স্থাপত্যশিল্পের চিহ্ন একেবারেই নেই। না থাকার অন্যতম কারন ১৮৬৯ এবং ১৮৯৭ সালে সিলেটে সংঘটিত দুটি প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প। এই দুই ভূমিকম্পের কারণে সিলেট নগরীর বহু প্রাচীন স্মৃতি ও কীর্তি বিলুপ্ত হয়। শহরটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় এবং তাতে বহু লোক প্রাণ হারায়।
১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে মনিপুরী রাজবাড়িটিও বিধ্বস্ত হয়। এই অবস্থায় হাতেগোনা অতীতের স্থাপত্যশিল্পের চিহ্ন যা টিকে আছে, তা সংরক্ষণ করা জরুরী। সিলেট বিভাগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ঐতিহ্য ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য নগরে একটি মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। সিলেট বেড়াতে আসা পর্যটকদের প্রধান দর্শনীয় স্থান দরগা ই হযরত শাহজালাল (রহঃ)। দরগা থেকে পায়ে হাঁটা দূরত্বে থাকা এই ভবনে বিভাগীয় মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করা এখনো সম্ভব। প্রয়োজন নাগরিকদের সম্মিলিত প্রচেস্টা। দায়িত্বশীলদের সুবিবেচনা ।
আব্দুল করিম কিম, সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সিলেট শাখা
মোবাইলঃ ০১৭১১-৩৫১১৬৭