ব্রিজ ভেঙে পড়ার গুজবেই প্রাণহানি
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৪৬:৫০,অপরাহ্ন ২৭ মার্চ ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: লাঙ্গলবন্দে পদদলিত হয়ে ১১ পুণ্যার্থীর প্রাণহানির ঘটনার কারণ হিসেবে ব্রিজ ভেঙে পড়ার গুজবকেই মনে করা হচ্ছে। একই সঙ্গে পুণ্যার্থীদের প্রচণ্ড ভিড়ের জন্যও বেড়েছে নিহতের সংখ্যা।
কেউ বলছেন, পুণ্যার্থীদের ভিড় সামলাতে এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ছিল না। এ কারণে স্নানের সময় চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। আর তাতে পদদলিত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার ভোর পৌনে পাঁচটা থেকেই মহাষ্টমী স্নান উৎসবের সূচনা হয়। তখন থেকেই ঢল নামে পুর্ণার্থীদের। স্নানের জন্য লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদের ১৬টি ঘাট নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম প্রধান রাজঘাটে পুণ্যার্থীদের বেশি চাপ সৃষ্টি হয়। কারণ হিসেবে জানা গেছে, রাজঘাটে স্নান করলে বেশি পুণ্য হয়। এ জন্য প্রচণ্ড ভিড়ের চাপে ও বেইলি ব্রিজ ভেঙে পড়ার গুজবে পুণ্যার্থীদের মধ্যে দেখা দেয় হুড়োহুড়ি আর প্রচণ্ড ধাক্কাধাক্কি। এ পরিস্থিতিতে রাজঘাট এলাকায় পদদলিত হয়ে সাতজন নারীসহ অন্তত ১০ জন মারা যান।
মর্মান্তিক প্রাণহানির পর ঘটনাস্থলে যান নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়া ও সৎকারের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দিয়েছেন।
এ সময় সেলিম ওসমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হরতাল অবরোধের কারণে মানুষ আবদ্ধ অবস্থায় ছিল। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় এ উৎসবটি লম্বা ছুটির মধ্যে পড়ায় অন্যবারের তুলনায় তিনগুণ পুণ্যার্থী এসেছে। তাছাড়া গরম বাড়ার আগেই স্নান শেষ করে চলে যাওয়ার তাড়া ছিল সবার মধ্যে। তাই ভিড়টা ছিল অস্বাভাবিক। এর ওপর ব্রিজ ভেঙে পড়ার গুজবকে কেন্দ্র করে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি।
তবে পুণ্য স্নানে প্রাণহানির জন্য সেলিম ওসমান রাস্তার দুইপাশে অবৈধ দখলদারদেরও দায়ী করেছেন।
এমপি সেলিম ওসমানের সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন, বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মিনারা নাজমিন, ভূমি কর্মকর্তা নাহিদা বারী, বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন কমিটির সভাপতি শংকর কুমার সাহা, সদস্য রিপন ভাওয়াল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২৭ মার্চ সকালে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যস্নান উৎসবে অংশ নেয় অন্তত ১০ লাখ পুণ্যার্থী। এ সময় বেইলি বিজ্র (লোহার ব্রিজ) ভেঙে পড়ার গুজবে পদদলিত হয়ে সাত নারীসহ অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়। তবে লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন কমিটির সভাপতি পরিতোষ সাহার দাবি মতে, ঘটনার পরে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক শিশুরও মৃত্যু হয়েছে।