বৈষম্যের শিকার সিলেটের বিমান যাত্রীরা, প্রতিবাদে আটাবের আল্টিমেটাম
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:২৬:৫৩,অপরাহ্ন ১১ মার্চ ২০১৯
নিউজ ডেস্ক:: বৈষম্য কমার কোন লক্ষণই নেই! বরং দিন দিন তা বাড়ছেতো বাড়ছেই। সেই সাথে বাড়ছে অসন্তোষ। তা এমন পর্যায়ে যে, আন্দোলন সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেটের প্রবাসী যাত্রীদের প্রতি বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স কর্তৃপক্ষের বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ অনেক পুরানো।
এবার সেই বৈষম্যের প্রতিবাদে আল্টিমেটাম দিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল অ্যাজেন্ট অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেট জোনের নেতৃবৃন্দ। আন্দোলনে নামছেন তারা। এমনকি বিমানকে বয়কটের কর্মসূচিও আসতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।
বিমানের বেশিরভাগ যাত্রীই সিলেটের। মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীরা লাল-সবুজের পতাকাবাহী এই প্রতিষ্ঠানটিকে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। অথচ যুগের পর যুগ ধরে তারাই বৈষম্যের শিকার। ভাড়া থেকে শুরু করে আবাসন, টিকিট পাওয়া না পাওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে তারা হামেশাই হয়রানি হচ্ছেন। গুনতে হচ্ছে শ্রমে-ঘামে অর্জিত অতিরিক্ত টাকা।
এছাড়া বিমান কর্তৃপক্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিমাতাসুলভ আচরণের আরো কিছু নমুনাও তুলে ধরলেন আটাব সিলেট জোনের নেতৃবৃন্দ। তারা জানান, বিমান কর্তৃপক্ষ ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের যাত্রীদের সিলেট থেকে নিয়ে ঢাকার উত্তরার বিভিন্ন নিম্নমানের হোটেল ও বাসা-বাড়িতে রাখেন। থ্রিস্টার, ফাইভ স্টার মানের হোটেল বলা হলেও তা কেবল নাম সর্বস্ব। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেখানে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এতে চরম বিরক্ত সিলেটের যাত্রীরা। তারা বিমান থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্যান্য এয়ারলাইন্সের দিক ঝুঁকছেন।
টিকেট বুকিংয়ের ক্ষেত্রেও বিমান কর্তৃপক্ষ সিলেটের যাত্রীদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন। সিলেট-জেদ্দা-সিলেট, সিলেট-লন্ডন-সিলেট, সিলেট-দুবাই-সিলেট ফ্লাইটের টিকেট চাইলেই সিট খালি নেই দেখানো হয়। কিন্তু একই সময় একই ফ্লাইটের ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা, ঢাকা-লন্ডন-ঢাকা ও ঢাকা-দুবাই-ঢাকার টিকেট বুকিংয়ের ঠিকই সুযোগ পাওয়া যায়। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রামের চেয়ে সিলেটের যাত্রীদের ভাড়াও বেশি পরিশোধ করতে হয় বিমানকে।
শুধু প্রবাসীই নয়, ওমরাহ যাত্রীদেরও হয়রানি করছেন বিমান কর্তৃপক্ষ। সিলেটের ওমরাহ যাত্রীরা সিট না পেলেও ঢাকার যাত্রীদের জন্য ঠিকই সিট খালি দেখানো হয়। এক্ষেত্রে ঢাকার কয়েকটি এজেন্সিকে গ্রুপ বুকিংয়ের সুযোগ দিয়ে কৃত্রিম টিকেট সংকট সৃষ্টি করে থাকে বিমান কর্তৃপক্ষ-এমন অভিযোগও আটাব নেতৃবৃন্দের। অথচ সিলেট থেকে এরকম গ্রুপ বুকিংয়ের কোন সুযোগ নেই বলেও জানান তারা।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে যারা দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছেন তাদের ব্যাপারে বিমান কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে অসন্তোষ বিরাজ করছে সিলেটের সচেতন মহলে। এমন বৈষম্যমূলক আচরণের অবসান না হলে আটাব সিলেট জোন কঠোর আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন। এর চূড়ান্ত পরিণতিতে বিমানকে বয়কট করার সম্ভাবনার কথাও বলছেন তারা।