বৈষম্যের কবলে সিলেটের ওমরা হজযাত্রীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:০১:৫৩,অপরাহ্ন ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে সিলেট থেকে ওমরা হজযাত্রীদের আসন বাড়ানোর দাবি করা হলেও তা মানছে না বিমান কর্তৃপক্ষ। কোটা না বাড়ানোয় ওমরা হজ পালনের ইচ্ছা থাকলেও সিলেটের অনেক হজযাত্রী সৌদি আবর যেতে পারেন না। এতে সিলেটের যাত্রীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এই অবস্থায় ওমরা হজের আসন সংখ্যা বাড়ানো না হলে শিগগিরই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বয়কট করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, পবিত্র ওমরা হজ পালনকারী যাত্রীদের মধ্যে বেশিরভাগ সিলেট অঞ্চলের। কিন্তু সিলেট থেকে জেদ্দার সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। ফ্লাইট চালু করা দূরের কথা, সিলেট থেকে ওমরা হজযাত্রীরা বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে বিপাকে পড়েছেন। বিমানের অবস্থাপনার কারণে এমনটি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
তারা জানান, বাংলাদেশ থেকে প্রতি সপ্তাহে ৫টি ফ্লাইটে ২ হাজার ৯৫ জন হজযাত্রী জেদ্দা যান। এর বেশিরভাগই সিলেট অঞ্চলের। প্রতি সপ্তাহে সিলেটের অন্তত ৪শ’ যাত্রী ওমরা হজে যান। কিন্তু সিলেট অঞ্চলে সপ্তাহে মাত্র ৩টি ফ্লাইটে ৩০ জন করে মোট ৯০ জন যাত্রীর কোটা বরাদ্দ দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। অন্যদিকে ঢাকা থেকে ১ হাজার ১শ’ ৬৭ জন এবং চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি ২টি ফ্লাইটে ৮৩৮ জন যাত্রী ওমরা হজ পালনে সৌদি গিয়ে থাকেন।
এই অবস্থায় সিলেট অঞ্চলের হজযাত্রীরা অর্থনৈতিক ক্ষতির শিকার হয়ে থাকেন। কারণ, ওমরা হজ প্রত্যাশী সিলেটিরা সৌদি যেতে তখন ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে প্রেসেসিং করে থাকেন। এটা করতে গিয়ে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হয়।
সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, সিলেট অঞ্চলে আসন বৃদ্ধির জন্য কয়েকবার আবেদন করা হয়েছে বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু সমস্যার কোনো সুরাহা হয়নি। আসন বাড়ানোর জন্য সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারি এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস্ অব বাংলাদেশ (আটাব) এর কাছে আবেদন করেন সংস্থাটির সিলেট অঞ্চলের সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল। এর পেক্ষিতে ২ ফেব্রুয়ারি আটাব মহাসচিব জিননুর আহমেদ চৌধুরী দিপু বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের বরাবরে আবেদন করেন।
আটাব সহ-সভাপতি ও সিলেট জোনের সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল বলেন, পবিত্র ওমরা হজ্জ্ব পালনকারী যাত্রীদের মধ্যে বেশিরভাগ সিলেট অঞ্চল থেকে যান। বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সে সপ্তাহে ৫টি ফ্লাইট জেদ্দা যাতায়াত করে। যার মধ্যে ২টি ফ্লাইট চট্টগ্রাম-জেদ্দা, আর ৩টি ঢাকা- জেদ্দা যাতায়াত করে। ঢাকা থেকে যে ৩টি ফ্লাইট যায় সেগুলোতে সিলেট অঞ্চল থেকে ৩০ করে ৯০টি আসন বরাদ্দ দেয়া হয়। আর বাকি আসন ব্লক করে রাখা হয়। যার ফলে প্রতি বছর আসন সংকটে পড়তে হয় সিলেট অঞ্চলের হজযাত্রী ও ট্র্যাভেল এজেন্সিদের। এতে করে অনেক হজযাত্রী অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন।
তিনি আরো বলেন, আটাব সিলেট অঞ্চল বারবার বার বার বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের বরাবরে আসন বৃদ্ধির আবেদন করলেও কাজ হয়নি। বিমান বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকরা জরুরি ভিত্তিতে সিলেট অঞ্চলে আসন সমস্যা সমাধান না করলে ট্র্যাভেলস এজেন্সিগুলো যাত্রীদের নিয়ে বিমান বয়কটসহ যে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেবে। ওমরা হজ্জ্ব পালনকারী যাত্রীদের আসন সমহারে বণ্টণ করা খুব জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
এ ব্যাপারে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সিলেট জেলা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শুয়াইব আটাব’র আবেদনের বরাত দিয়ে বলেন, তাদের আবেদনের কপি ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। চেষ্টা চলছে আসন বাড়ানোর। তবে আসন বাড়াতে হলে সৌদি আরব থেকে অনুমতি আনতে হবে বলে জানান তিনি।