বিশ্ববাসীকে প্রধানমন্ত্রীর ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৪৬:৪৩,অপরাহ্ন ০১ জানুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইংরেজি নতুন বছর ২০১৫ উপলক্ষে দেশবাসী, প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠা করার আহ্বানও জানান তিনি।
বুধবার ইংরেজি নববর্ষ ২০১৫ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, নতুনের আহ্বানে পুরাতন বছরের সব জঞ্জাল ধুয়ে-মুছে যাক। নতুন বছর সবার জীবনে অনাবিল সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করে এর জন্য তিনি মহান আল্লাহতায়ালার কাছে এই প্রার্থনা করার আহবান জানান।
দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন, সংবিধান ও গণতান্ত্রিক ধারা রক্ষা এবং জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে ২০১৪ সাল বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল বছর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গত বছর ছিল বাংলাদেশের জন্য সাফল্যমণ্ডিত বছর।
২০১৪ সালে গ্লোবাল সাউথ সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো-২০১৪ তাঁকে ভিশনারী এ্যাওয়ার্ড এ পুরস্কৃত করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন এবং সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী ইন্টারপার্লামেন্টারি ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল স্যাটেলাইট অর্গানাইজেশন-এর মহাপরিচালক এবং হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল ও ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন-এর নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব মন্দা সত্ত্বেও গত বছর সামষ্টিক অর্থনীতির প্রতিটি সূচক ইতিবাচক ছিল। ছয় শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও রপ্তানিতে ভাল প্রবৃদ্ধি হয়েছে। প্রায় ১৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে।
গত ৬ বছরে ৫ কোটির বেশি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উঠে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাথাপিছু আয় ১২শ’ ডলারে উন্নীত হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি খাতে প্রায় এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশ অনেক এগিয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ১৩ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রযাত্রাকে ‘একটি বিশাল অর্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছে। তারা বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনারও প্রশংসা করেছে।
সরকার সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি-জামাতের সকল বাঁধা ও ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে। ইতোমধ্যেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর শুরু হয়েছে। আমরা জাতির প্রত্যাশা অনুযায়ী সকল যুদ্ধাপরাধীকে বিচারের আওতায় আনব এবং শাস্তি কার্যকর করব। এর মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি অভিশাপমুক্ত হবে। জাতীয় চারনেতা হত্যাকা-, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ মানবতাবিরোধী প্রতিটি অপরাধের বিচার কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করেছে। অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। নির্বাচিত ব্যক্তিরাই দেশ পরিচালনা করবে- এ পদ্ধতি নিশ্চিত হয়েছে।
জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত বিএনপি গণতন্ত্র ও নির্বাচন চায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য তারা অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করতে চায়। স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতকে সাথে নিয়ে দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে চায়। জনগণ তাদের আর ওই সুযোগ দেবে না। এই অপশক্তি প্রতিরোধ করতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।