বিশ্বনাথে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, হাতবোমা বিস্ফোরণ : আহত ১৫
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৫০:৫০,অপরাহ্ন ০৩ জানুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: বিশ্বনাথে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তন ১৫জন আহত হয়েছে। এসময় তিনটি ককটেল ও একটি হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটে। শনিবার বেলা ৩টায় উপজেলা সদরের পুরান বাজারস্থ বিএনপির কার্যালয়ের সামনে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মতিউর রহমান সুমন গ্রুপ ও সদস্য শাহ আমির উদ্দিন গ্রুপের মধ্যে এঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন-ছাত্রদল নেতা আমির হামজা, শাহজাহান, খালেদ আহমদ,শাহ আমির উদ্দিন, নাজিম মিয়া,শাহজাহান, শহিদ মিয়া,আজাদুর রহমান আজাদ,সুনু মিয়া,দুলাল মিয়া,রুকেন আহমদ, ফখরুল আহমদ, ওয়াসিম আহমদ ও যুবদল নেতা নুরুল মিয়া। গুরুতর আহতদের সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানাগেছে।
এসময় উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ইটপাটকেল নিক্ষোপ করা হয়। এতে উপজেলা সদরের পুরান বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতংক দেখা দিলে তারা দোকানপাঠ বন্ধ করে দেন। প্রায় ঘন্টাব্যাপি উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলে। এতে উপজেলা সদরের পুরান বাজারস্থ অবস্থিত মসজিদের গ্লাস ও কয়েকটি দোকানঘর ভাঙচুর হয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় ফের আবার তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হতে পারে বলে এমটাই মনে করছেন উপজেলাবাসী।
জানাগেছে, গত ২৩ ডিসেম্বর মতিউর রহমান সুমনকে আহবায়ক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষনা করে জেলা ছাত্রদল। কমিটি গঠনের পরদিন ওই কমিটির সদস্য শাহ আমির উদ্দিন গ্রুপের নেতাকর্মী ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি কে প্রত্যাখান জানিয়ে উপজেলা সদরের ঝাড়– মিছিল বের করে। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রকাশ্যে বিরুধ দেখা দেয়। তবে এরই মধ্যে উপজেলা বিএনপি কয়েক দফা উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠ করে। কিন্তু এতে কোনো শুরাহা হয়নি। গতকাল শনিবার বিকেল ৩টায় উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মতিউর রহমান সুমনের গ্রুপ নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবিতে উপজেলা সদরের মিছিল বের করার ঘোষনা দেয়। এতে শাহ আমির উদ্দিন গ্রুপ প্রতিহত করা ঘোষনা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। বেলা ১টার দিকে শাহ আমির উদ্দিন গ্রুপের নেতাকর্মীরা উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে তালা মেরে দেয়। খবর পেয়ে মতিউর রহমান সুমন গ্রুপ নেতাকর্মীরা বিএনপি অফিসের তালা ভেঙে অবস্থান নেয়। বেলা ৩টায় শাহ আমির উদ্দিন গ্রুপ লাঠি-সোটা নিয়ে মতিউর রহমান সুমন গ্রুপের নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে। এতে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে নিখোঁজ ইলিয়াসের সন্ধান দাবিতে মতিউর রহমান সুমনের গ্রুপের নেতাকর্মীরা মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলা সদরের পুরান বাজারস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামন থেকে বের হয়ে আল-হেরা শপিং সিটির সামনে আসামাত্রই পুলিশ বাঁধা দিলে মিছিলকারী এখান থেকে ঘুরে স্থানীয় লতিফ উল্লা মার্কেটের সামনে গিয়ে পথসভা করে।
এব্যাপারে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মতিউর রহমান সুমন বলেন, নব-গঠিত আহবায়ক কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে ও নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবিতে মিছিল বের করার প্রস্তুতি নেই। এসময় শাহ আমির উদ্দিনের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের এজেন্ডাররা কয়েকজন সস্ত্রাসী নিয়ে বিএনপির অফিসে হামলার চেষ্টার করে। এতে আমরা তাদের প্রতিহত করে মিছিল দেই।
শাহ আমির উদ্দিন বলেন, নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবি করতে গিয়ে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা হামলা-মামলা স্বীকার হয়েছেন। কিন্তু উপজেলা ছাত্রদলের নব-গঠিত কমিটিতে আমাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। যার ফলে আমরা ওই কমিটি বাতিলের জানিয়ে আসছি। আমার মিছিল বের করতে চাইলে মতিউর রহমান সুমনের নেতৃত্বে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের নিয়ে আমাদের ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়,তা প্রতিহত করি।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ রফিকুল হোসেন বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।