বিজিবি ও পুলিশ প্রধানের বক্তব্য জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে : ২০ দল
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৫৮:৫২,অপরাহ্ন ১৭ জানুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: ‘বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং মহাপুলিশ পরিদর্শক একেএম শহিদুল হকের বক্তব্য জাতিকে স্তম্ভিত ও হতবাক করেছে। ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং এখতিয়ার বহির্ভূত এই বক্তব্য জনমনে আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে’-এমনটাই মনে করছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।
শনিবার দুপুরে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলে ২০ দরীয় জোট।
বিবৃতিতে ২০ দলীয় জোট বলেন, বিজিবির হাতে মারণাস্ত্র জনগণের টাকায় কেনা। এটি কোনো দল বা ব্যক্তির প্রাইভেট বাহিনী নয়। পুলিশের আইজি বিএনপি চেয়ারপার্সন সম্পর্কে যেভাবে বক্তব্য রেখেছেন তাতে মনে হয় একজন ছাত্রলীগের নেতা পুলিশের পোশাক পরে বক্তব্য রাখছে। পুলিশের আইজির বক্তব্য নজীরবিহীন ও চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ। তাদের মনে রাখা উচিৎ কোনো অপকর্মই কখনো চিরদিনের জন্য মাটিচাপা থাকে না। জনগণ সকল ঔদ্ধত্য, অহংকার এবং নিষ্ঠুর অনাচারের বিচার করবেই।
২০ দলীয় জোট বিজিবির মহাপরিচালক এবং পুলিশের মহাপরিদর্শকের এখতিয়ার বহির্ভূত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা, ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হবার পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্রমাগতভাবে মানুষের অধিকারগুলো সংকুচিত করেছে। বিশেষভাবে গণতন্ত্রে যে বিরোধী দলের বিশেষ একটি জায়গা আছে সেটিকে তারা কখনোই বিশ্বাস করেনি। গণতন্ত্রে স্বীকৃত বিরোধী দলের সকল কর্মকাণ্ডকে বানচাল করতে তারা দমননীতি অবলম্বন করেছে। তাদের দমননীতি অমানবিক, মধ্যযুগীয় এবং নাজি ফ্যাসিষ্টদের সমতুল্য।
২০ দলীয় জোটের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সমাজের নানাস্তরের মানুষসহ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গুম, গুপ্তহত্যা ও ক্রসফায়ারের নির্মম শিকার হতে হয়েছে। ফলে এই পৈশাচিক দুঃশাসনকে মোকাবেলা করার জন্য ২০ দলীয় জোট গঠন হবার পর থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে মানুষের হারানো অধিকার পূনরুদ্ধারের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
২০ দলীয় জোট নেতা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে ১৪ দিন ধরে নিজ কার্যালয়ের ভেতর অবরুদ্ধ রেখে কার্যালয়ের চারিদিকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ইট, বালু, কাঠের ট্রাক দিয়ে ব্যারিকেড করে রাখা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ ২০ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং দেশব্যাপী শত সহস্র নেতা-কর্মীকে কারাগারে আটক রাখা, হাজার হাজার নেতা-কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দায়ের, প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা, এজেন্টদের দিয়ে যানবাহনে আগুন লাগিয়ে পরিকল্পিত নাশকতা করে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপানো, প্রকাশ্যে বুকে গুলি করার নির্দেশ ইত্যাদি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি এখন এদেশে বিরাজমান। আর এই নিষ্ঠুর কর্মযজ্ঞে নামানো হয়েছে দলীয় চেতনায় উজ্জীবিত বেশকিছু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের। আর এর সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছে বেসামাল দলীয় ক্যাডারদের।
‘একই সাথে বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ৩ জানুয়ারি থেকে অবরুদ্ধ করার পর থেকে সারাদেশে চালানো হচ্ছে হিংস্র তান্ডব, রক্ত ঝরানো হচ্ছে বিভিন্ন জনপদে। এছাড়া দেশের প্রখ্যাত কুটনীতিক, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী রিয়াজ রহমানও এই দুঃশাসনের ছোবল থেকে রেহাই পাননি।’
বিবৃতিতে সেনাবাহিনী এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, তারা কী ৫ শতাংশ ভোটের অবৈধ সরকারের নির্দেশ শুনবে নাকি ৯৫ শতাংশ মানুষের পক্ষে থাকবে ? তারা যেন ক্ষমতাসীন উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের প্রতিশোধবাসনার যন্ত্রে পরিণত না হন, কারণ এদেশের সমগ্র জনগোষ্ঠী তাদের বেতন নিশ্চিত করে।
বিবৃতিতে ২০ দলীয় জোট বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ ২০ দলীয় জোটের সকল পর্যায়ের আটককৃত নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানানো হয়। এই মুহূর্তে এই অবৈধ সরকারকে পদত্যাগ করে সকলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবিও জানানো হয় বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।