বাস্তব হয়েই ধরা দিল সেই কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:১৩:১৮,অপরাহ্ন ১৯ এপ্রিল ২০১৫
স্পোর্টস ডেস্ক::
প্রথম ম্যাচে জয়ের পর অনেকটাই অনুমান করা যাচ্ছিল বিষয়টি। দ্বিতীয় ম্যাচের পুরো সময়জুড়েই সবার মাথায় একটি কথাই ঘুরছিল। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়। মাত্র একদিন আগেই ১৬ বছরের লালিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে পকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় জয়ের স্বাদ পেয়ে। আজ ধরা দিল আরেকটি কাঙ্খিত স্বপ্নের বাস্তবতা। প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জয়ের স্বপ্ন পূরণ।
সেই স্বপ্ন পূরণের পথটাকে মসৃণ করেছেন ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরিয়ান সমালোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে থাকা সেই তামিম ইকবাল। সমালোচনার জবাব অবশ্য আগের ম্যাচে দিয়েছেন তামিম ১৩৫ বলে ১৩২ রানের ঝকঝকে জয়সূচক ইনিংস খেলে। সেঞ্চুরি পেয়েছেন প্রায় দুই বছর পরে। সমালোচকদের মুখের উপর আরেকটু কড়া ছিটিয়ে দিলেন তামিম আজকের ম্যাচে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করে। আজকের ম্যাচেও ১০৮ বলে ১৬ তম চার মেরে শতকের ঘরে পৌঁছেন এই হার্ড হিটার। শেষ পর্যন্ত রানের ইনিংস খেলে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তুলির শেষ আচরটাও দিয়েছেন তিনিই
এদিন দুপুর আড়াইটায় মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট করে মোট দলীয় ২৩৯ রান তুলে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা। পাকিস্তানি ইনিংসের শুরুতে বাংলাদেশি বোলাররা তাদের টপঅর্ডার ভেঙে চুরমার করে দিলেও শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভার শেষে সফরকারীরা ৬ উইকেটে ২৩৯ রান সংগ্রহ করে। শেষ ৫ ওভারে ৪৯ রান তোলেন সাদ-রিয়াজ জুটি। এর আগে দলীয় ৭৭ রানের মধ্যে পাকিস্তানের পাঁচ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ।
টস জিতে আগে ব্যাটিং নেওয়া পাকিস্তানের হয়ে তরুণ উঠতি তারকা সাদ নাসিম ইনিংস ও ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৭৭ রান (৯৬ বলে) করে অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসে ৬টি চারের পাশাপাশি ছিল একটি ছয়। শেষ দিকে নেমে ওয়াহাব রিয়াজ অপরাজিত ৫১ রানের একটি ইনিংস খেলেন। ৪০ বলে রিয়াজ ৫টি চারের পাশাপাশি দুটি ছক্কা হাঁকান। এ দু’জন মিলে ৮৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন।
এছাড়া পাক দলপতি আজহার আলি ওপেনিংয়ে নেমে ৩৬ রান করেন। আর চার নম্বরে নামা হারিস সোহেল করেন ৪৪ রান। টাইগারদের হয়ে সাকিব দুটি আর মাশরাফি, সানি, রুবেল, নাসির একটি করে উইকেট তুলে নেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ২২ রানের মাথায় ওপেনার সৌম্যের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আউট হওয়ার আগে তিনি ১১ বলে ১৭ রান (৪টি চার) করেন। তারপরও পাকিস্তানের মতো ভেঙ্গে পড়েনি টপ অর্ডার। ওয়ান ডাউনে নেমে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তামিমের সঙ্গে গড়েন ৭৮ রানের জুটি। দলীয় ১০০ রানের মাথায় সাঈদ আজমলের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে মাহমুদুল্লাহর সংগ্রহ ২৮ বলে ১৭ রান।
মাহমুদুল্লাহ বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরলে উইকেটে আসেন রান মেশিন মুশফিকুর রহিম। রাহাতের বলে আউট হওয়ার আগে পূর্বের ম্যাচের এই সেঞ্চুরিয়ান করেন ৬৫ (৭০)। তার ইনিংস সাজানো ৮টি চার ও ১টি ছয়ের মারে। তামিমের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে গড়েন ১১৮ রান। ক্যারিয়ারের ২২ তম এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় অর্ধশতক তুলে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরের কাছাকাছি পৌঁছে দিয়ে সাজঘরে ফিরেন মুশি।
তামিমের সঙ্গে শেষ কাজটুকু সম্পন্ন করেন পরবর্তী ব্যাটসম্যান অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার আগে টানা সেঞ্চুরিয়ান তামিমের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১১৬ বলে ১১৬। সাকিব অপরাজিত থাকেন ৫ বলে ৭। তৃতীয়বারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতে যায় ৭ উইকেটে। রচিত হলো আরও একটি নতুন ইতিহাস। যেখানে অম্লান তামিম-মুশফিক স্মৃতি।
পাকিস্তানের পক্ষে ২ উইকেট ভাগাভাগি করেছেন জুনায়েদ খান ও সাঈদ আজমল। রাহাত আলী নেন একটি উইকেট। ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরস্কার ওঠে তামিমের হাতেই। সিরিজে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও তিনি। তার ব্যক্তিগত মোট সংগ্রহ