বাংলাদেশে তামাক বিড়ির রাজনীতি চলছে!
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:২০:২৯,অপরাহ্ন ২১ মে ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
বর্তমান বাংলাদেশে তামাক ও বিড়ির কর রাজনীতি চলছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসাস সেন্টার, প্রজ্ঞা, এনটি টোব্যাকে মিডিয়া এলায়েন্স ও ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাকো কিডস আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
বাংলাদেশ সরকারের ২০১৫ -১৬ অর্থ বছরের বাজেটে তামাক পণ্যের উপর প্রস্তাবিত কর বিষয়ে প্রাক-বাজেট শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে তামাক কর সংক্রান্ত কোনো নীতিমালা এখনও প্রনীত হয়নি। ফলে তামাকজাত পণ্য সস্তা এবং মানুষের কাছে সহজলভ্য। বাংলাদেশে তামাক পণ্যের প্রকৃত মূল্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। যার ফলে সিগারেটের প্রকৃতমূল্য কমছে অন্যদিকে বাড়ছে গড় প্রকৃত আয়। ফলে তামাক পণ্য বেশী পরিমাণে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার আওতায় চলে আসছে। তাই এটাকে তামাকের রাজনীতি বললে ভুল হবে না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ তামাকজাত পণ্যের উপর বিদ্যমান কর কাঠামো জটিল। এটা তামাকের রাজনীতির অনুষঙ্গ। জটিল এই কর কাঠামো কর ফাঁকি দেয়ার সহায়তা করে। তামাক পণ্যের ও ব্যান্ডের উপর সম্পূরক কর হার ভিন্ন ভিন্ন। সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের উপর ১৫ শতাংশ মূসক আরোপ করা হয়। সিগারেটের উপর বর্তমানে চারটি মুল্যস্তরের উপর ভিন্ন ভিন্ন সম্পূরক কর ও আরোপ করা হচ্ছে। সিগারেটের ক্ষেত্রে চার মূল্যস্তরে বৃদ্ধি কাঠামো , ভিন্ন ভিন্ন মূল্যস্তরের উপর ভিন্ন ভিন্ন হারে শতাংশ হিসাবে কর, ভ্যাট ও কর আরোপের উপর জটিল ভিত্তি ইত্যাদি তামাক পণ্যের কর কাঠামোকে খুব জটিল করে তুলছে। এ জটিল কর কাঠামোরে সুবিধা পাচ্ছে তামাক কোম্পানীগুলো। আর বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।’
আবুল বারকাত বলেন, ‘ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য থেকে কর আদায় প্রক্রিয়ার ব্যাপক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত পণ্যের মোড়কে রাজস্ব আদায় নির্ধারণী কোনো চিহ্ন নেই এবং সেই সাথে আছে প্যাকেট এবং ওজনের স্বল্পতা। এসবই রাজস্ব ফাঁকি দিতে মানুষকে প্রলুব্ধ করে।’
তামাকজাত পণ্যের উপর উচ্চহারে কর আরোপের জন্য সরকারের কাছে চারটি সুপারিশ তুলে ধরেন তিনি। সুপারিশ গুলো হলো- কর নির্ধারণের জন্য সিগারেটের মূল্য স্তর বাতিল করে তুলনামূলক উচ্চহারে নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্ষেত্রে একসাইজ ট্যাক্স আরোপ। বিড়ির ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত স্বল্প মাত্রা হারে ক্যারিট ভ্যালুর উপর কর ধার্য প্রথা বাতিল করে নির্দিষ্ট পরিমাণ ট্যাক্স আদায়। ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্যের ওপর বর্তমান এট ভ্যালু রেট কর ব্যবস্থার পরিবর্তে নির্দিষ্ট পরিমাণে একসাইজ ভ্যাট আরোপ এবং ১৫-১৬ অর্থ বছর থেকে তামাকজাত পণ্যের উপর ১ শতাংশ হেলথ সারচাজ বাড়িয়ে ২ শতাংশে উন্নীত করা।
এসময় তিনি সরকারের কাছে তামাক পণ্যের ওপর একচেইঞ্জ প্রতিবছর সমন্বয় করার জন্য ১৪ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)-এর নিবাহী পরিচালক এবি এম জুবায়ের, এনটি ট্যোবাকো মিডিয়া এলারেঞ্জ (আত্না)-এর আহবায়ক লিটন হায়দার ও আহবায়ক নাদিরা কিরন প্রমুখ।