বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে খালেদা যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন : হানিফ
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:২৯:১৯,অপরাহ্ন ২০ জানুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়া যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম হানিফ।
মঙ্গলবার ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, গতকাল বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এক প্রেসব্রিফিং করেছে। আমরা আশা করেছিলাম এই ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়া জ্বালাও-পোড়াও এবং ধ্বংসের রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসার ঘোষণা দিবেন। অবরোধের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারা থেকে তার দলের নেতা-কর্মীদের বিরত রাখার ঘোষণা দিবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমরা দেখলাম তিনি মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষকে হত্যা করে শুধু স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি দেশের ক্ষমতা চেয়েছিল, আজকেও বিএনপি-জামাত একইভাবে যেকোনো মূল্যে দেশকে অস্থিতিশীল ও অকার্যকর করতে চায়।
তিনি বলেন, গতকালের প্রেসব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তিনি যে অবরুদ্ধ নন তাই প্রমাণ করেছেন। অবরুদ্ধ না থাকা সত্ত্বেও তিনি সেখানেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন। এতে কি এটাই প্রমাণ হয় না যে তিনি অবরুদ্ধের নাটক সাজিয়েছিলেন। অবরুদ্ধ থাকলে উনার সঙ্গে কিভাবে নেতা-কর্মীরা দেখা করছেন, কিভাবে স্থায়ী কমিটির সভা করছেন।
তিনি আরো বলেন, আজকে জিয়া পরিবারের লোভের লেলিহান শিখায় বাংলাদেশ পুড়ছে। নারী-পুরুষ-শিশু-চিকিৎসক-আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য-পরিবহন শ্রমিক-স্কুল শিক্ষক-দিনমজুর-বাসযাত্রী-ছাত্রছাত্রী কেউ তাদের নৃশংসতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। সাধারণ জনগণ খালেদা জিয়ার এই ধ্বংসাত্মক রাজনীতিকে সমর্থন করছে না বলে জনগণের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নির্দেশে সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাসের উপর হামলা হয়েছে, বিচারপতির বাড়িতে, মন্ত্রীর বাড়িতে, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীর বাড়িতে বোমা মেরেছে, পুলিশের গাড়িতে বোমা হামলা করেছে। আবার রিয়াজ রহমানের উপর নিজেরাই হামলার নাটক সাজিয়ে বিশ্বের কাছে দেশকে হেয় করতে চেয়েছে। এর মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।
হানিফ বলেন, মিরপুর ছাত্রদল নেতা আকরাম পেট্রোল বোমা সহ ধরা পড়েছে। আগুন দিতে গিয়ে যে সব দুর্বৃত্তরা ধরা পড়েছে, তারাই বলেছে যে বিএনপির কর্মী তারা। দলীয় নির্দেশে তারা আগুন দিচ্ছে, বোমা মারছে। একদিকে মানুষ পুড়িয়ে মারবেন, আরেকদিকে বনানীর অফিসে বসে শীতকালীন পিকনিক করবেন। একদিকে অবরোধের নামে গাড়ি পোড়াবেন, আরেকদিকে রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিনসহ বিএনপির নেতারা গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াবেন। একদিকে বিশ্ব ইজতেমাকে বাধা দিবেন, আরেকদিকে আগুন পূজায় মেতে উঠবেন। বিশ্ব ইজতেমায় বাধা দিয়ে খালেদা জিয়া প্রমাণ করলেন তার কোনো ধর্ম নেই। এই হচ্ছে খালেদা জিয়া আপনার রাজনীতি।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আজকে এদেশের মানুষের বুঝতে বাকি নেই কেন এই অবরোধ। কিসের জন্য এই অবরোধ যে কোনো মানুষ দুর্নীতি করলে বিচার হবে। কিন্তু জিয়া পরিবারের দুর্নীতির বিচার করা যাবে না। বিচার করতে গেলে অবরোধ-হরতাল-জ্বালাও পোড়াও। এক দেশে কি দুই আইন থাকবে। দুর্নীতি করলে বিচার করা যাবে না? লুটপাট করলে বিচার করা যাবে না?
তিনি বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, খাদ্য, শিল্প ও খেলাধুলাসহ সকল ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি ও অগ্রগতি সাধন করে একটি ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও জঙ্গিবাদমুক্ত অসাম্প্রদায়িক, উন্নত-সমৃদ্ধ, মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে।
তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এই স্বাধীন দেশ ককটেল ও পেট্রোল বোমার কাছে আত্মসমপর্ণ করবে না, সন্ত্রাস ও জঙ্গি গোষ্ঠীর অভয়ারণ্য পরিণত করতে দেয়া হবে না, শান্তির বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই আমাদের অঙ্গীকার।