বাংলাদেশের অনুরোধেই লিবিয়ায় শ্রমিক পাঠানো বন্ধ
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৪৯:২৪,অপরাহ্ন ২০ মে ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া ফের বন্ধ করার ঘোষণা লিবিয়া সরকার থেকে দেওয়া হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধেই শ্রমিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ঢাকার লিবিয়া দূতাবাস। গত সপ্তাহে ঢাকায় নিযুক্ত লিবিয়ার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে এ অনুরোধ জানানো হয়।
বাংলাদেশি নতুন শ্রমিকদের লিবিয়ায় অসহায় অবস্থা থেকে বাঁচাতে লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবিএম নূরজ্জামানের আহ্বানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রোটকল বিভাগ এ আহ্বান জানায়। বুধবার (২০ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
জানা যায়, বাংলাদেশিদের মানবপাচার চক্র থেকে উদ্ধার ও কাজের জন্য লিবিয়া গিয়ে সেখান থেকে অবৈধভাবে নৌপথে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা রোধ করতে বাংলাদেশই এ পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে ভিসা দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ দূতাবাসের বিষয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুধু অনুরোধ করতে পারে, ভিসা দেওয়া বন্ধ করতে পারে না।
বাংলাদেশি শ্রমিকদের দেশটিতে প্রবেশে এই নিষেধাজ্ঞা সাময়িক। কারণ লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, ঢাকা ও লিবিয়ার কয়েকটি মানবপাচার চক্র প্রায় ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে লিবিয়ায় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে ভালো বেতনে কাজ পাইয়ে দেওয়ার শর্তে ভিসা পাইয়ে দিচ্ছে। কিন্তু সেখানে গিয়ে বাংলাদেশিদের কাজ না দিয়ে দেওয়া হচ্ছে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে।
আর এসব মানুষকে যুদ্ধ-বিগ্রহসহ লাগানো হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ সব কাজে। এর মধ্যে অনেকে পালিয়ে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টা করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের এক কমকর্তা জানান, লিবিয়ায় বাংলাদেশির জন্য বিশেষ কোনো কাজ এখন নেই। তবে সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, যুদ্ধ থেমে গেলে সেখানে একটি বড় শ্রমবাজার হতে পারে বাংলাদেশের জন্য। এখনই তা এ পাচারচক্রের হাতে পড়ে নষ্ট করা ঠিক হবে না।
দূতাবাস প্রতিবেদন পাঠিয়ে বলেছে, বাংলাদেশি শ্রমিকেরা লিবিয়ায় কাজ করতে আসেন। কিন্তু এরপর তারা অবৈধভাবে নৌযানে চড়ে ইউরোপে পাড়ি জমান। অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের তৎপরতার অংশ হিসেবেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বিশেষ করে লিবিয়ায় পূর্বাঞ্চলের আওতাভুক্ত স্থলসীমান্ত, নদী ও সমুদ্রবন্দর এবং বিমানবন্দরে বাংলাদেশিদের পাঠানোয় নিষেধজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কারণ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানতে পেরেছে কিছু দিনের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো লিবিয়ার উপকূলে মানব পাচারকারীদের নির্মূল করতে তাদের নৌযানগুলোতে যৌথ বিমান হামালা চালাতে পারে। ঢাকা চাইছে না এ হামলায় মধ্যে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক পড়ে যাক।
তিনি আরও বলেন, লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের ওপর পূর্বাঞ্চলভিত্তিক সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। রাজধানী ত্রিপোলি পতনের পর পশ্চিমাঞ্চলে পাল্টা সরকার গঠন করেছে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলকে মানব পাচারের প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করছে পাচারকারীরা। তাই বাংলাদেশর শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে এ নিষেধাজ্ঞা লিবিয়া সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়।
সূত্র : বাংলানিউজ