বরিশালে ৪ পুলিশ বরখাস্ত
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৪০:৫৮,অপরাহ্ন ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক:: বরিশালে ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জের ঘটনায় চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
পাশাপাশি কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) তিন কর্মকর্তাকে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে।
রোববার দুপুর ১টায় বরিশাল মেট্রোপলিটন ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশের ই-মেইল থেকে পাঠানো এক বার্তার মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
বার্তায় উল্লেখ রয়েছে, সাময়িকভাবে বরখাস্তকৃতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
বরখাস্তকারীরা হলেন, বরিশাল মহানগর পুলিশের কং/৪৮৬ মনোয়ার হোসেন, কং/১১৮৮ মো. খলিল, কং/৮৫৫ মো. রফিক ও কং/৯৪১ নুরে আলম।
বার্তায় বলা হয়েছে, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা তাদের কিছু দাবি দাওয়া নিয়ে বরিশাল শহরস্থ শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিলসহ সড়ক অবরোধ করেন।
এসময় রাস্তা অবরোধের কারণে মহানগরের ওই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি জনসাধারণের ও যান চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করে। উক্ত ঘটনায় পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে দুই পুলিশসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়।
উক্ত ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা এবং কি কারণে এ ঘটনা ঘটে তার সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য বরিশাল মহানগর পুলিশ ০৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি তদন্তপূর্বক রিপোর্ট দাখিল করলে বরিশাল মহানগর পুলিশের চার সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
মেইলে বার্তা পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. আজাদ রহমান বলেন, চার পুলিশ সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন, মেট্রোপলিটন পুলিশের আর.আই আবু জাফর ও মহিলা ব্রাকের ইনচার্জ মো. সরোয়ার হোসেনকে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা তাদের কিছু দাবি দাওয়া নিয়ে বরিশাল শহরস্থ শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিলসহ সড়ক অবরোধ করেন। এসময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এসময় শিক্ষার্থীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। লাঠিচার্জ ও ইটের আঘাতে দুই পুলিশ সদস্যসহ ৩৩ জন আহত হন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো:
অবিলম্বে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদের পরিবর্তে ‘বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড’ গঠন করতে হবে। শুধুমাত্র চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি কোর্সের অন্তভুর্ক্ত হবে।
ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মাসিস্টদের তীব্র বেকার সমস্যা দূরীকরণের লক্ষে WHO কর্তৃক প্রদত্ত নীতিমালা অনুযায়ী নতুন নতুন পদ সৃষ্টি এবং স্থগিতকৃত নিয়োগ চালু করতে যাবতীয় আইনগত সমস্যা জরুরি ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করতে হবে।
সরকারি চাকুরিতে ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মসিস্টদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা পদমর্যাদা ও বেতন স্কেল প্রদান করতে হবে। উচ্চ শিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সব আইএইচটিতে ফার্মেসি ও রেডিওথেরাপিসহ সব বিষয়ে বিএসসি ও এমএমসি কোর্স দ্রুত চালু করতে হবে। গ্রাজুয়েট/বিএসসি মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের হাসপাতাল ও চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণির পদ সৃষ্টি করে পদায়ন করতে হবে।
সেবা পরিদপ্তরের মতো মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মসিস্টদের জন্য আলাদা পরিদপ্তর গঠন করতে হবে। ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মসিস্টদের ক্যারিয়ার প্লান বাস্তবায়ন করে পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে।
সরকারের সঙ্গে ১৯৮৪ সালের চুক্তি অনুযায়ী ডিপ্লোমা ডেন্টাল টেকনোলজিস্টদের প্রাকটিস রেজিস্ট্রেশন প্রদান ও রেডিওলজি এন ইমেজিন্স, ল্যাব, ফিজিওথেরাপিতে ডিপ্লোমাধারীদের নিজ কাজের ওপর স্বাক্ষর করার অনুমতি প্রদান করতে হবে।
মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের Bangladesh University of Medical Seience and Technology গঠন করতে হবে।
সব প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়গনস্টিক সেন্টার পরিচালনার জন্য প্রাইভেট চাকুরির নীতিমালা প্রণয়ন ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট নিয়োগ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
– See more at: http://www.banglanews24.com/beta/fullnews/bn/348926.html#sthash.Ig42ZBYU.dpuf