বছরজুড়ে ২৩ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকার লেনদেন
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৪৮:২৯,অপরাহ্ন ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
হরতাল-অবরোধের মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালের যাত্রা শুরু হওয়ার পর এবার শেষ হতে যাচ্ছো। তবে এ বছরটিতে গত বছরের তুলনায় ২৩ হাজার ৫৭৭ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার বেশি লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রায় টানা দুই মাসের হরতাল-অবরোধে দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ মোটামুটি শান্ত ছিল। আর তাই বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮৫২ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অন্যদিকে, ২০১৩ সালে লেনদেন হয়েছে ৯৫ হাজার ২৭৪ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার। তুলনামূলকভাবে ২০১৪ সাল জুড়ে ২৩ হাজার ৫৭৭ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার বেশি লেনদেন হয়েছে।
এদিকে, ২০১০ সালের পরও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা একাধিকবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তাদের মধ্যে আস্থার সঙ্কট দেখা দেয়। এই সঙ্কট থেকে ২০১৪ সালেও বিনিয়োগকারীরা বের হতে পারেনি।
২০১৪ সালে বিএসইসি আইপিওর মাধ্যমে ১৭টি কোম্পানিকে পুঁজিবাজার থেকে ৯৮৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা সংগ্রহের অনুমোদন দেয়। অন্যদিকে, গতবছরও ১৭টি কোম্পানিকে আইপিওর মাধ্যমে টাকা সংগ্রহের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল।
অন্যদিকে ২০১৪ সালে বিএসইসি নয়টি কোম্পানিকে রাইট শেয়ারের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহের অনুমোদন দেয়।
এর মধ্যে গত ১ জুলাই নিয়মবহির্ভূতভাবে লোকসানি কোম্পানি মাইডাস ফাইন্যান্সকে ১ঃ১ অনুপাতে ৬০ কোটি ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৩৮০ টাকার রাইট শেয়ার অনুমোদন করে।
জানা আয় পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা আনতে কিছু গঠনমূলক উদ্যোগ নিয়েছিল উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ। এর মধ্যে কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়েছে এবং কিছু বাস্তবায়নাধীন।
বাস্তবায়নাধীন উদ্যোগগুলো হচ্ছে- ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট জাতীয় সংসদে পাস, স্টক এক্সচেঞ্জের খসড়া লিস্টিং রেগুলেশন যাচাই-বাছাই ও সংশোধন, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইক্যুইটি সংক্রান্ত বিধি-বিধান প্রণয়ন, ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেটের (ওটিসি) কোম্পানিকে মূল মার্কেটে আনার নীতিমালা প্রণয়ন, ব্রোকারেজ হাউসের মাধ্যমে নতুন আইপিও আবেদন প্রক্রিয়া চূড়ান্তভাবে চালু ও ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের ৯০০ কোটি টাকা বণ্টন প্রভৃতি।
এদিকে, যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের পাঁচ শতাংশ সমপরিমাণ শেয়ার ধারণ করছেন, তাদের নতুন করে অনুমোদন নিতে হবে না বলে নভেম্বরে নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়াও বিদায়ী বছরে সাবসিডিয়ারি কোম্পানির (অঙ্গপ্রতিষ্ঠান) হিসাবসহ পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা পুনঃনির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন বিনিয়োগসীমা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোর অঙ্গপ্রতিষ্ঠানসহ সমন্বিত হিসেবে রেগুলেটরি ক্যাপিটালের ৫০ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে।
এছাড়াও পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মওকুফ করা ঋণের সুদ মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের অনুমোদনযোগ্য ব্যয় হিসেবে বিবেচনা করা হবে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ঘোষণা দেয়।
অন্যদিকে, ২০১৪ সালেও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারেনি দেশের ৯ বীমা কোম্পানি। আর তালিকাভুক্ত হতে না পেওে প্রতিদিন পাঁচ হাজার টাকা কওে জরিমানা দিতে হচ্ছে ।
এদিকে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২৩ টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান এখন মূলধন ১০০ কোটি টাকা করতে পারেনি।
এ ছাড়াও বিদায়ী বছরে বেশ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি রোধ করতে না পারা, সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট প্রভাবশালীদের কোম্পানির আইপিও, রাইট অনুমোদনের পাশাপাশি তাদের মালিকানাধীন কোম্পানির অনিয়মের বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া ছিল খুব আলোচিত বিষয়। এসব বিষয়ে বিদায়ী বছরজুড়ে বিনিয়োগকারী ও বাজার বিশ্লেষকদের সমালোচনা থেকে মুক্ত থাকতে পারেনি বিএসইসি।