ফের অস্কারে মনোনয়ন পেলেন বাংলাদেশের নাফিস
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৫১:৫৬,অপরাহ্ন ১৭ জানুয়ারি ২০১৫
বিনোদন ডেস্ক:: বাংলাদেশের নাফিস বিন যাফর। দ্বিতীয়বারের মতো অস্কারের জন্য মনোনয়ন পেলেন। এরই মধ্যে একাডেমি অব পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের পক্ষ থেকে দুই সহকর্মীসহ তাকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ফেসবুকে গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন নাফিস নিজেই। সেখানে তিনি মনোনয়নের দাপ্তরিক চিঠিও শেয়ার করেছেন।
রাজবাড়ীর ছেলে নাফিসের জন্ম ১৯৭৮ সালের ৮ অক্টোবর ঢাকায়। বাবা জাফর বিন বাশার আর মা নাফিসা জাফরকে লোকে না চিনলেও নানা শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার স্বনামে খ্যাত। জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি একুশে পদক জয়ী সৈয়দ মইনুল হোসেন তার মামা।
বাবার চাকরি করার সুবাদে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বেড়ে উঠেছেন নাফিস। শৈশবে ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশোনা করেন। বাবার এমবিএ পড়ার সুবাদে ১১ বছর বয়সে ১৯৮৯ সালে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনার চার্লসটনে চলে যান তিনি। সেখানে কলেজ অব চার্লসটন থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেন অসাধারণ মেধাবী নাফিস।
বর্তমানে চাকরি সূত্রে চীনের সাংহাইয়ের ওরিয়েন্টাল ড্রিম ওয়ার্কসে এনিমেশনের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছেন নাফিস। সেখান থেকে গতকাল টেলিফোনে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, তার কাজের মূল জায়গা হচ্ছে গ্রাফিকস ডিজাইনিং। গ্রাফিকসের মাধ্যমে একেকটি দৃশ্য বা ছবি আরো প্রাণবন্ত করে তোলেন তিনি। এবার তিনি মনোনিত হয়েছেন ভিজুয়াল ইফেক্ট ক্যাটাগরিতে। মূলত ড্রপ ডিস্ট্রাকশন টুলকিট নামে একটি টুল তৈরি করেন তিনি। ট্রান্সফরমার, ২০১২সহ ২০টি সিনেমায় ব্যবহার করা হয় এই টুলটি। এই টুলের অনবদ্য ব্যবহার সিনেমাগুলোকে অসামান্য করে তোলে।
এর আগে ২০০৭ সালের পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান: অ্যাট ওয়ার্ল্ডস অ্যান্ড ছবিতে অ্যানিমেশনের জন্য প্রথম বাঙালি হিসেবে (সত্যজিৎ রায়েরটা ছিল আজীবন সম্মাননা অস্কার) অস্কার জেতেন নাফিস। সায়েন্টিফিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল অ্যাওয়ার্ডস বিভাগে ২০০৮ সালে তাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। সেবার সফটওয়্যার হিসেবে তিনি ফ্লুইড ডায়নামিক সিমুলেশন সিস্টেমে আরো উৎকর্ষ ঘটিয়ে তা ব্যবহার করেন। এই সিস্টেমে ছোট্ট পুকুরকে উত্তাল সমুদ্রে পরিণত করা যায়, জলের ওপর ভাসতে থাকা কুয়াশার চাদর হয়ে ওঠে আরো স্পষ্ট, জীবন্ত। শুধু পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ানেই নয়, নাফিসের তৈরি এই সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে দ্য লর্ডস অব দ্য রিংস, দ্য ফেলোশিপ অব দ্য রিংস, দ্য ডে আফটার টুমরো, শ্রেক, কুম্ফু পান্ডা টু, পুশ ইন বুটস, মাদাগাস্কার থ্রি প্রভৃতি ছবিতেও।