ফাঁসির মহড়া : আজ-কালের মধ্যে কামরুজ্জামানের ফাঁসি
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:২৮:৩১,অপরাহ্ন ০৫ নভেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় আজকালের মধ্যেই কার্যকর হতে পারে।
বুধবার সকালে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কারাগারে কামারুজ্জামানের যে সাক্ষাত হয়েছে ওই সাক্ষাতই হতে পারে শেষ সাক্ষাত। আর এ লক্ষ্যেই মঙ্গলবার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ফাঁসির মহড়া। কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর করতে এখন পুরোপুরি প্রস্তুত কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ। ফাঁসি কার্যকর করার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে মঙ্গলবারের ওই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ফাঁসি কার্যকরের সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কারারক্ষীরা কে কোথায় দায়িত্ব পালন করবে, কারাগারের বাতি, সেল ও খাতাগুলো কি অবস্থায় থাকবে সে মহড়াও সম্পন্ন হয়েছে। এমনকি জল্লাদ ও বিকল্প জল্লাদও অংশ নিয়েছিলো ওই মহড়ায়। যারা কেন্দ্রীয় কারাগারেরই কয়েদি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কামারুজ্জামানের রায় কার্যকর করতে ইতিমধ্যে ফাঁসির দড়িও চেক করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে মঞ্চ। সূত্র জানায়, মঙ্গলবার কাশিমপুর কারাগার থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে আনার পর থেকেই কামারুজ্জামানের রায় কার্যকর করতে পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে কারা কর্তৃপক্ষ। এখন শুধু অপেক্ষা।
তবে কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায়ের অনুলিপি ট্রাইব্যুনাল,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়,কারা কর্তৃপক্ষ কিংবা সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে পৌঁছেছে কিনা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গণমাধ্যমকে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। ঢাকা জেলা প্রশাসক তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া গনমাধ্যমকে ফাঁসির প্রস্তুতি সম্পন্ন সম্পর্কে নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, নির্ধারিত সময়ের আগেই ফাঁসি দেয়া হতে পারে বলে পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছেন জামায়াতের সহকারী সেক্রটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। তবে তিনি বিচলতি নন জানিয়ে পরিবারের সদস্যদেরও চিন্তা না করে আল্লাহর ওপর ভরসা করার কথা বলেছেন। সকালে তার সাক্ষাৎ করে এসে কামারুজ্জামানকে উদ্বৃত করে তার বড় ছেলে ইকবাল হাসান ওয়ামী এসব কথা বলেন। তিনি জানান, রায় প্রসঙ্গে কামারুজ্জামান বলেছেন, আমি কোন অপরাধী নই। প্রমাণের ভিত্তিতে নয়, রূপকথার ভিত্তিতে রায় দেয়া হয়েছে। এটি একটি রূপকথার গল্প। এটি ন্যায়ভ্রষ্ট রায়। আমার ওপর যারা জুলুম করেছে তাদের বিচার একদিন হবেই।
কামারুজ্জামান প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কিনা জানতে চাইলে ওয়ামী বলেন, এটি তার ব্যক্তিগত বিষয়। তবে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি হাতে পেলে তিনি তার সিদ্ধান্ত জানাবেন।
কামারুজ্জামান সুস্থ আছেন বলেও জানান ছেলে ওয়ামী।
পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাতের বিষয়ে কামারুজ্জামানের আইনজীবী এডভোকেট শিশির মুহাম্মদ মনির বলেন, এটি তাদের নিয়মিত সাক্ষাৎ। কারা কর্তৃপক্ষ তাদের সাক্ষাতের জন্য ডাকেনি।
বুধবার সকাল ১০টায় কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেয়ে কামারুজ্জামানের পরিবারের ৯ সদস্য জেলের ভেতরে যান। এ সময় তারা কামারুজ্জামানের সঙ্গে প্রায় পৌনে একঘণ্টা সময় কাটান। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন স্ত্রী নুরুন্নাহার, চার ছেলে, ভাই ও এক মেয়ে।
এর আগে ফাঁসির দ-প্রাপ্ত আসামি কামারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে তার পরিবার। মঙ্গলবার দুপুরে কামারুজ্জামানকে কাশিরপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।