প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে জাতি হতাশ: ফখরুল
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৫৭:০২,অপরাহ্ন ০৩ অক্টোবর ২০১৪
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে জাতি হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কারা খুনি? আওয়ামী লীগের তিন মাসে: ২০১৩ সালের নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বিএনপির ৩০০ নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ৬২ জন গুম হয়েছে। একটি বিশেষ বাহিনী তাদের তুলে নিয়ে গেছে। পাঁচ বছরে সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে যেটার এখনো কোনো বিচার হয়নি।
‘সংলাপ প্রসঙ্গে বিএনপিকে হত্যাকারীদের দল’ প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলে মির্জা ফখরুল।
শুক্রবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এর আগে বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান এবং সেখানে বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানদের সঙ্গে তার বৈঠকের বিষয় সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় সংলাপ প্রসঙ্গে বিএনপিকে হত্যাকারীদের দল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা মধ্য নির্বাচনের জন্য কোনো আলোচনার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেন।
বিএনপির সঙ্গেই আলোচনায় বসতে হবে, আলোচনা না হলে দেশ সংঘাতের দিকে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।ফখরুল বলেন, বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসা ছাড়া সরকারের আর কোনো পথ নেই। আর সরকার যদি আলোচনায় না বসে তবে দেশ সংঘাতের দিকে যাবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ব্যাপারে কার্যকরী বা সুস্পষ্ট কোনো ইঙ্গিত না থাকায় জাতি হতাশ হয়েছে।তিনি বলেন, তিনি তার মিশন ও ভিশনের কথা আজকের বক্তব্যে তুলে ধরেছেন। ২০২১ থেকে এখন ২০৪১ সাল পর্যন্ত জোর করে, চতুরতা করে এক কথায় গণতন্ত্রকে হত্যা করে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান। তার আজকের বক্তব্যে জাতি হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছে।
মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করলে সাত বছর জেল হয়, আর মহানবীকে (সা.) কটূক্তি করলে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এছাড়া আওয়ামী লীগের নেতারা এ নিয়ে রাজনীতি করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন।
সরকার একদলীয় শাসন কায়েমের সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, একদলীয় শাসন কায়েম আওয়ামী লীগের অনেক পুরোনো স্বপ্ন। এ স্বপ্ন তারা ১৯৭৫ সালে পূরণ করতে চেয়েছিল। সে সময়ও তারা বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরেছিল। এবারও তারা বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ করেছ এবং একদলীয় শাসন কায়েমের স্বপ্ন দেখছে।
তিনি বলেন, আমরা সংঘাত চাই না। শান্তি চাই। যদি সরকারই আমাদের সংঘাতের পথে ছেড়ে দেয় তাহলে জনগণই এর কঠোর জবাব দেবে। সরকার ইচ্ছে করেই দেশের মানুষকে উস্কে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সরকারের মন্ত্রীদের অশালীন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সম্প্রতি তোফায়েল আহমেদ যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন তা শালীনতা বর্র্হিভূত। আমরা তার কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য আশা করি না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, কোটি কোটি মুসলমানদের হৃদয়ে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী আঘাত দিয়েছেন। তাকে শুধু দল আর মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিলেই হবে না। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
ফখরুল বলেন, হজ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে লতিফ সিদ্দিকী বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন। এর ফলে সমাজে বিশৃঙ্খলা-অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।