প্রধানমন্ত্রীর আফসোস : এমন ঘরে কেন মেয়ে বিয়ে দিলেন?
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৪১:৪৮,অপরাহ্ন ২১ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
ডা. শামারুখ মাহজাবিন সুমির ছবি ধরে গলার দু’পাশে আঘাতের দাগ দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ইস’ ‘ইস’ করে আফসোস করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এসময় ‘নিহত’ ডা. সুমির বাবাকে বলেছেন, ‘এমন ঘরে মেয়ে বিয়ে দিলেন কেন?’
রোববার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবে মেয়ের ‘হত্যাকাণ্ডে’ ও পুনঃ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সংক্রান্ত সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাবা (ডা. সুমির বাবা) প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘১৫ ডিসেম্বর রাত ৮টা ৫০ মিনিটে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার সাক্ষাতের সুযোগ হয়। তিনি সাড়ে ১০ মিনিট আমাদের কথা শুনেছেন। তিনি সুমির ছবি হাতে নিয়ে চারটি প্রশ্ন করেন। প্রথম প্রশ্ন ছিলো- এমন ঘরে মেয়ে বিয়ে দিলেন কেন? এরপর তিনি আরও তিনটি প্রশ্ন করেন। সর্বশেষ প্রশ্নে তিনি পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে কী ছিল জানতে চান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ধৈর্য ধরে আমাদের কথা শোনেন এবং রেফারেন্স হিসেবে ৭১ পৃষ্ঠার একটি ফাইল দেখেন।’
প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে খোঁজখবর রাখছেন এবং ন্যায্য বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রীর দু’চোখে দু’ফোঁটা জল দেখতে পেয়েছি।’
প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে আবারও মেয়ে ডা. সুমি হত্যার পুনরায় বিচার দাবি করেন। কেমিক্যাল রিপোর্ট না আসায় যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সিভিল সার্জনের মাধ্যমে আদালতে আংশিক প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে। পুনঃ ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেতে অরও সময় লাগবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর ধানমণ্ডির বাসায় ‘নিহত’ হন যশোর-৫ আসনের সাবেক এমপি খান টিপু সুলতানের পুত্রবধূ ডা. শামারুখ মাহজাবিন সুমি। এ ঘটনায় ডা. সুমির বাবা প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম মেয়ের শ্বশুর খান টিপু সুলতান, শাশুড়ি ও স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেন। লাশ ১৪ নভেম্বর রাতে যশোর এনে শহরের কারবালা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
গত ২৩ নভেম্বর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে পুনঃময়নাতদন্তের আবেদন করেন ডা. সুমির বাবা প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম। বিষয়টি আমলে নিয়ে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে লাশ উত্তোলন করে পুনঃময়নাতদন্ত প্রতিবেদন জমাদানের নির্দেশ দেন। এ নির্দেশ পেয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকার সিআইডির এএসপি মুন্সী রুহুল কুদ্দুসের উপস্থিতিতে ৪ ডিসেম্বর লাশ উত্তোলন করা হয়। এসময় সুমির শরীর ও কবর থেকে ১১টি আলামত সংগ্রহ করা হয়।
এঅবস্থায় ‘নিহতের’ বাবা প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে ১৫ ডিসেম্বর তিনি অনুমতি পান। গণভবনে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি বিচার চেয়েছেন।