পুন:ময়নাতদন্তের জন্য ‘টুনি’র মরদেহ উত্তোলন
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৩৯:০১,অপরাহ্ন ০৪ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক:: প্রয়াত নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ধারাবাহিক নাটক এইসব দিনরাত্রি’র টুনি চরিত্রের অভিনেত্রী নায়ার সুলতানা লোপার মরদেহ পুন:ময়নাতন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
রাজধানীর বনানী কবরস্থান থেকে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে লোপার মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন।
গুলশান থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার নায়ার সুলতানা লোপার মরদেহ পুন:ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন করা হয়।
এর আগে গত ২৬ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) বিকাশ কুমার সাহা মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে পুন:ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন।
লোপাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে বাদিনী লোপার মা রাজিয়া সুলতানা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে লোপা ‘আত্মহত্যা করেছেন’ বলে উল্লেখ থাকায় তিনি এ আবেদন করেন।
আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পুনঃময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেন আদালত।
এদিকে ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের শ্বশুরবাড়ি থেকে লোপার গলায় ফাঁস দেয়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লোপার শ্বশুরের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, দাম্পত্য কলহের জের ধরে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।
লোপার স্বামী আলী আমিন দাবি করেন, গুলশানের ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে নায়ারের সঙ্গে তার দ্বন্দ্বের জের ধরে নায়ার আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার সময় তিনি বাড়ির বাইরে অবস্থান করছিলেন বলেও দাবি করেন ।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই নায়ারের স্বামী আলী আমিনকে আটক করে গুলশান থানা পুলিশ। রাতে লোপার মা রাজিয়া সুলতানা ঘটনাটিকে আত্মহত্যা সাজানোর চেষ্টা উল্লেখ করে গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে লোপার স্বামী আলী আমিনসহ তার বাবা ও মাকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে আলী আমিনকে মাদকাসক্ত উল্লেখ করেন নায়ারের মা রাজিয়া সুলতানা। এতে প্রতিদিন লোপাকে শারীরিক নির্যাতন ও এসব নির্যাতনে আমিনের বাবা-মাও প্রশ্রয় দিতেন বলে উল্লেখ করা হয়।
এ নির্যাতনের মধ্যেই ঘটনার দিন দুপুর আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে যেকোনো সময় তারা তিনজন লোপাকে শ্বাসরোধ করে সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়েছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের ধারাবাহিক নাটক নব্বইয়ের দশকে বিটিভিতে প্রচারিত ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকে ‘টুনি’ চরিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান লোপা। নাটকের শেষ পর্যায়ে ‘টুনি’ অসুস্থ হয়ে পড়লে সারা দেশের অসংখ্য মানুষ হুমায়ূন আহমেদের কাছে চিঠি লিখে টুনির প্রাণ রক্ষার আবেদন জানান।