পিঠে লাঠির মার, উরুতে সিগারেটের ছ্যাঁকা
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:০০:১৫,অপরাহ্ন ১৮ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
নওগাঁর মান্দার শিশইল গ্রামে যৌতুক দিতে না পারার কারণে এক গৃহবধূর ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়েছে তার স্বামী। এসময় তার হাত-পা বেঁধে পিঠসহ সারা শরীরে বেধড়ক মারধোর করেছে ওই পাষণ্ড, এরপর উরুসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে পালিয়ে যায় সে।
নির্যাতিতার নাম মাহমুদা বিবি (২৮)। তিনি এখন মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিছানায় শুয়ে ছটফট করছেন। তিনি অভিযোগ করেন, তার পাষণ্ড স্বামী জালাল হোসেন মাতাল অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে তার ওপর এমন বর্বোরোচিত নির্যাতন চালিয়েছেন। পরে গুরুতর জখম অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তাকে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। নির্যাতিতা মাহমুদা উপজেলার বৈলশিং গ্রামের খলিলুর রহমানের মেয়ে।
চিকিৎসাধীন গৃহবধূ মাহমুদা আরও জানান, ২০০৪ সালে ৩০ সেপ্টেম্বর শিশইল গ্রামের কবির পেয়াদার ছেলে জালাল হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়েতে তার বাবা এক লাখ ১০ হাজার টাকা যৌতুক দিয়েছিলেন। কিন্তু বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে মাদকাসক্ত জালাল হোসেন যৌতুকের জন্য আবারও তার ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এজন্য কয়েকবার নির্যাতনেরও শিকার হন তিনি। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয়।
তিনি বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জালাল নেশা করে বাড়ি ফিরে বাবার বাড়ি থেকে আরও ১০ হাজার টাকা যৌতুক আনার জন্য তার ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় দড়ি দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে জালাল। এক পর্যায়ে জলন্ত সিগারেট দিয়ে তার উরুসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে ছ্যাঁকা দেয় এবং তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এসময় কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে মাহমুদা গ্রামে তার চাচা শহিদুল ইসলাম ভুট্টোর বাড়িতে আশ্রয় নেন। গুরুতর জখম অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তাকে মান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
কর্তব্যরত চিকিৎসক সাদিয়া আফরিন ও মাহবুবা আক্তার গৃহবধূ মাহমুদার ওপর নির্যাতনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মাহমুদার উরুসহ বিভিন্নস্থানে আগুনের ছ্যাঁকা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তারা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইদ্রিস আলীও জানান, মাতাল অবস্থায় ঘরে ফিরে জালাল হোসেন তার স্ত্রী মাহমুদার ওপর প্রায়ই অমানুষিক নির্যাতন করে বলে একাধিকবার অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। বিষয়টি মীমাংসার জন্য তিনি একাধিকবার চেষ্টা করেন। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, গৃহবধূর শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন তিনি দেখেছেন। অভিযোগ পেলেই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন।