পদ্মাসেতুতে বিনিয়োগ আমার স্বপ্ন ছিলো: মূসা বিন শমসের
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৩৮:৫১,অপরাহ্ন ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪
অনলাইন ডেস্ক :: ব্যবসায়ী মূসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করেছেন দুদকের উপ পরিচালক মীর মো: জয়নুল আবেদীন শিবলী। মূসা বিন শমসের দুদক ছেড়ে গেলেন। দুদক থেকে বের হওয়ার সময়ে তাকে কিছুটা বিমর্ষ দেখাচ্ছিল।
এই সময়ে তার সঙ্গে ছিলেন প্রায় ৩০ জনের মত নিরাপত্তারক্ষী। এরমধ্যে চারজন মহিলা ও আর বাকি ২৬ জন পুরষ। তার সঙ্গে রয়েছে আটটি গাড়ির বহর। ওই বহরে তিনি রয়েছেন বিএমডব্লিউ গাড়িতে। তিনি দুদক ছাড়ার সময়ে মিডিয়ার মুখোমুখি হন। এই সময়ে তিনি বলেন, আমি দুদকের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এখানে এসেছি। যা দুদক জানতে চেয়েছে আমি সেটা বলেছি।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে আজ বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্য্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদকে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পদ্মাসেতুতে বিনিয়োগ শুধু আমার নয় আমার বাবারও স্বপ্ন ছিলো। পদ্মাসেতু গোয়ালন্দ থেকে আরিচা, নগরবাড়ি-এখানে অ্যাঙ্গেল একট ব্রিজ হবে। তিন বিলিয়ন ডলার লাগবে এতে। আমার অর্থ অবমুক্ত হলে এতে বিনিয়োগের পাশাপাশি, সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক এবং বৃদ্ধদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে স্বপের বাংলাদেশ গড়বো।
সুইস ব্যাংকে মুসা বিন শমসেরের সাত বিলিয়ন ডলার রয়েছে এমন তথ্য দিয়ে চলতি বছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সাময়িকী ‘বিজনেস এশিয়া’ সংবাদ প্রকাশ করে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৫১ হাজার কোটি টাকা।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সাময়িকী ‘বিজনেস এশিয়া’র প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে দুদক তার সম্পদ যাছাই ও অর্থ পাচারের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুসা বিন শমশের আরও বলেন, এটা সবাই বুঝতে পারবে যে এ পরিমাণ টাকা বাংলাদেশ থেকে অর্জন করা সম্ভব নয়। যা উপার্জন করেছি বিদেশেই করেছি। আমি দেশ থেকে কোনো টাকা বিদেশে পাচার করিনি। দুদক অনুসন্ধানেই তা বেরিয়ে আসবে।
অবৈধ সম্পদ ও অর্থ পাচারের অভিযোগের বিষয় তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি গল্পের পেছনে একটি ইতিহাস থাকে। ধৈর্য ধরেন। সব জানতে পারবেন। আমার সম্পর্কে বলা হয়েছে আমি ৫১ হাজার কোটি টাকা বিদেশি পাচার করেছি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। দুদকের অনুসন্ধানে এটা বেরিয়ে আসবে।’
তিনি বলেন, এ টাকা (৫১ হাজার কোটি টাকা) কেউ দেশে অর্জন করতে পারেনি। আগামী ৫০ বছরে এদেশে কেউ অর্জন করতে পারবেও না।
এদিকে প্রিন্স মূসা বিন শমসেরের দাবি, তিনি দেশের কোন টাকা বিদেশে নেননি। তার সুইস ব্যাংকে যে টাকা আটকা পরেছে ওই টাকা বিদেশে আয় করেছেন। ওই টাকার আবার সেখানেও আয়কর দেন। এই কারণে দুদক তার ওই টাকা ফিরিয়ে আনতে পারবেন না। মামলা শেষ হওয়ার পর তিনি নিজেই ওই টাকা দেশে ফেরত আনবেন এবং দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর নির্মাণের জন্য টাকা দিবেন। তিনি আরো দাবি করেন দুদক তার কাছে বিভিন্ন ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চাইতে পারেন। তবে অস্ত্র ব্যবসা সংক্রান্ত কোন তথ্য তারা কখনো প্রকাশ করতে পারেননা। সেটা করলে অন্য দেশের গোপনীয় তথ্য প্রকাশ করার অভিযোগে সমস্যায় পরতে পারে বাংলাদেশ। সম্পর্কও নষ্ট হতে পারে।
এদিকে সকালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর প্রধান কার্যালয়ে হাজির হন ব্যবসায়ী মূসা বিন শমসের। বৃহস্পতিবার সকালে ১১টায় তার আসার কথা থাকলেও আসেন আগেই। মিডিয়া কর্মীদের এড়াতেই এই ব্যবস্থা নেন। তারা নিরাপত্তা বাহিনীর বেস্টনীর মধ্য দিয়ে দুদকে প্রবেশ করেন। বাইরে বের হওয়ার সময়েও একই পন্থা অনুসরণ করেন।