অভিবাসন নিয়ে ক্যামেরনের কঠোর নীতি ঘোষণা
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৪২:৫৬,অপরাহ্ন ২৮ নভেম্বর ২০১৪
লন্ডন: যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন অভিবাসন-সংক্রান্ত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। এ জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাস্তবতাকে দায়ী করে তিনি অভিবাসন বিষয়ে নতুন কঠোরতার ঘোষণা দিয়েছেন। এটির বাস্তবায়ন হলে ইইউভুক্ত দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি দেশটিতে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এদিকে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ঘটনাটিকে ভয়াবহ উল্লেখ করে বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা এড মিলিব্যান্ড বলেছেন, অভিবাসন বিষয়ে ক্যামেরনকে আর বিশ্বাস করা যায় না। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন আজ শুক্রবার তাঁর নতুন ঘোষণায় বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও ইইউভুক্ত দেশের নাগরিকদের বাধাহীন প্রবেশের কারণে লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়নি। আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হলে তিনি ইইউভুক্ত দেশের নাগরিকদের রাষ্ট্রীয় কল্যাণসুবিধা ভোগের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করবেন। তাঁর প্রস্তাব অনুযায়ী চার বছর পর্যন্ত ইইউ নাগরিকেরা কোনো রাষ্ট্রীয় ভাতা পাবেন না। ছয় মাসের মধ্যে কাজ পেতে ব্যর্থ হলে তাঁদের যুক্তরাজ্য থেকে বিতাড়ন করা হবে। একই সঙ্গে অভিবাসীদের পরিবার আনার ক্ষেত্রে আরও কড়াকড়ির ঘোষণা দেন তিনি।
ক্যামেরন বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি এসব প্রস্তাব মানতে ব্যর্থ হয় তাহলে যুক্তরাজ্য ইইউ ত্যাগের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে। ক্যামেরনের নতুন এ ঘোষণা বাস্তবায়িত হলে দেশটিতে বসবাসকারী ইইউ পাসপোর্টধারী অনেক বাংলাদেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। রাষ্ট্রীয় কল্যাণসুবিধা, সংস্কৃতিচর্চা এবং সন্তানদের ইংরেজি ভাষা শেখানোর জন্য অনেক বাংলাদেশি ফান্স, ইতালি, স্পেন কিংবা অন্য ইইউ দেশের পাসপোর্ট পাওয়ার পর যুক্তরাজ্যে এসে বসবাস করছেন।
২০১০ সালের নির্বাচনে ক্যামেরন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কোনো যদি, কিন্তু নয়, তাঁর দল ক্ষমতায় গেলে এক মেয়াদেই নেট অভিবাসন বছরে এক লাখের নিচে নামিয়ে আনা হবে। কিন্তু পরবর্তী নির্বাচনের মাত্র ছয় মাস আগে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জুন পর্যন্ত এক বছরে যুক্তরাজ্যে নেট অভিবাসনের সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৬০ হাজার। যা আগের বছরের তুলনায় ৭৮ হাজার বেড়েছে। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশ থেকে আসা অভিবাসীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ হাজার বেড়ে হয়েছে এক লাখের বেশি।
যুক্তরাজ্যের অভিবাসী বেড়ে যাওয়ার জন্য লেবার সরকারকে দায়ী করে কনজারভেটিভ দল ক্ষমতায় এলেও বর্তমানে দেশটিতে নেট অভিবাসনের হার লেবার সরকারের রেখে যাওয়া সংখ্যার চেয়ে ১৬ হাজার বেশি।