নিজ দলের দুই এমপির হাতে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত এরশাদ
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:০৭:৫৫,অপরাহ্ন ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
দীর্ঘ ২৬ বছর পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে নিজ দলীয় এমপিদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। শুধু তাই নয় শহীদ বেদি থেকে এরশাদের ফুল সরিয়ে দিয়ে তাকে সেখান থেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন জাতীয় পার্টির দুই সাংসদ মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও ফখরুল ঈমাম ।
আলোচিত এই ঘটনা সাথে সাথেই গনমাধ্যমের দৃষ্টিগোচর না হলেও ঘটনার পরদিন আজ প্রকাশ হয়েছে। এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে এবং জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচিত ও সমালোচিত হচ্ছে । এরশাদের পক্ষের কেও কেও বলছেন এই ঘটনায় ক্ষমা না চাইলে ঐ দুই এমপির (মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও ফখরুল ঈমাম) গায়ের চামড়া তুলে ফেলা হবে । অনেকেই তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন একজন বয়োবৃদ্ধ রাজনিতিবিদের সাথে এমন আচরণ ভয়ানক অশোভন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীদার ।
ক্ষুব্ধ জাতীয় পার্টির নেতারা অভিযোগ করে বলেন , ‘ এরশাদের ফুলই শুধু সরিয়ে ফেলা হয়নি। ফুল দেওয়ার সময় এরশাদকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও ফখরুল ঈমাম ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জাতীয় পার্টির নেতা জানান, এই ঘটনায় চরম মর্মাহত হয়েছেন এরশাদ, নিজ দলের এমপিদের এমন অসদাচরনে তিনি স্তম্ভিত হয়েছেন। কিছুটা লজ্জায় এবং অপমানে এ বিষয় নিয়ে মুখ খুলছেননা কারো কাছেই।
উল্লেখ্য, রওশন এরশাদ যখন ফুল দিচ্ছিলেন তখন তার পাশে ছিলেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিন, ফখরুল ঈমাম প্রমুখ। এদের পরে ছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। ২১ ফেব্রুয়ারির (শনিবার) প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে।
জাতীয় পার্টির নেতারা আরও জানিয়েছেন, পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু দলের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফুল দিতে শহীদ মিনারে যান। কিন্তু রওশন এরশাদের ঘনিষ্ঠ দলের দু’জন সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির ফুল সরিয়ে ফেলেন। এরপর তারা বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের ফুল শহীদ মিনারে নিয়ে আসেন। ফলে এরশাদ বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে ফুল দিতে বাধ্য হন।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জাতীয় পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘দুইজন এমপি স্যারের সঙ্গে ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে বেয়াদবি করেছেন। এই দুই এমপির গায়ের চামড়া তুলে ফেলা হবে। যদি তারা ভুল বুঝতে পারে তাহলে তাদের ক্ষমা করা হতে পারে।’ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি রাতে স্যারকে অপমান করা হয়েছে। ওই দুই এমপিকে ক্ষমা করা হবে না।’
জাতীয় পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব নুরুল ইসলাম নুরু বলেন, ‘দুইজন এমপি স্যারের সঙ্গে যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে তাদের ক্ষমা করা হবে না। তারা স্যারকে অপমান করেছেন। এ অপমানের বদলা নেওয়া হবে।’ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জাপা মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘আমরা বিভ্রান্তি চাই না, ঐক্য চাই।’
তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এমপি বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনা শহীদ মিনারে ঘটেনি। আমরা ফুলের ডালা নিয়ে সামনে চলে গিয়েছিলাম, স্যার পেছনে পড়ে যান। এটা কী আমাদের অপরাধ।’ অন্য অভিযুক্ত ফখরুল ঈমামও ফোন একই রকমভাবে দায়সারা উত্তর দেন । এবং বিষয়টি এড়িয়ে যান ।