ধারাবাহিক ভূমিকম্পে থমকে যাচ্ছে উদ্ধার তৎপরতা; প্রাণহানির সংখ্যা ২৩শ ছাড়িয়েছে
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৫০:২৮,অপরাহ্ন ২৬ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
৭ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের ভয়াবহতার পর দুইদিন ধরে একের পর কম্পনজনিত পরাঘাতে আরও বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছে নেপাল। ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার তৎপরতা। নেপালের ৮০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহতম ভূমিকম্পের পর দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার তৎপরতা চলার মধ্যেই ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের কবলে পড়ে নেপাল। ভূমিকম্পের কারণে রোববার নতুন করে তুষার ধস হয়েছে এভারেস্টেও। নতুন ভূমিকম্পের পর রোববার দুপুর থেকে আবারও বন্ধ করে দেয়া হয় কাঠমুন্ডু বিমানবন্দর। স্থগিত করা হয় বিমানযোগে পরিচালিত উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতাও। পরে বিকেলের দিকে আবারও বিমান চলাচল শুরু হয়।
এদিকে, নেপালে আরও কয়েকটি ভূমিকম্প পরবর্তী পরাঘাত অনুভূত হবে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা। একইসঙ্গে বৃষ্টি আর ভূমি ধসেরও আশঙ্কা করছেন তারা। শনিবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর নেপালে মৃতের সংখ্যা এরইমধ্যে ২৩শ’ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ৫ হাজার মানুষ। তবে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে ঘটনার ভয়াবহতা কেমন তা সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধ্বংসস্তূপে অনেক জীবিত কিংবা মৃত মানুষ আটকা পড়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সবমিলে প্রকৃত প্রাণহানির সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শনিবারের ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পের পর নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুসহ বিভিন্ন শহর যেন পরিণত হয়েছে এক একটি মৃত্যুপুরীতে। ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার অভিযান চলছে। তবে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি না থাকায় হিমশিম খাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। নিরুপায় হয়ে শূন্য হাতেই ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন তারা। একইসঙ্গে উদ্ধারকাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন সরু ও আঁকাবাঁকা গলিও।
উদ্ধারকারীরা জানান, রাজধানীর কাঠমুন্ডুর একটি বিধ্বস্ত ভবনে কেবল ঢোকার রাস্তা তৈরি করতে তাদের সারারাত লেগেছে। শহরের পুরনো ও সরু গলি দিয়ে বুলডোজার না ঢুকতে পারার কারণে রাতভর কুঠার ও ছোটখাটো সরঞ্জামাদি দিয়ে সুরঙ্গ তৈরি করতে হয়েছে তাদের।
এদিকে স্বজন হারানোদের আহাজারি আর আহতদের আর্তনাদে ভারি হয়ে আছে নেপালের বিভিন্ন হাসপাতালের পরিবেশ। হাসপাতালগুলোতে আসছে একের পর এক মরদেহ। কেবল মরদেহই নয়; হাসপাতালে ভীড় জমাচ্ছেন আহতরাও। হাজার হাজার আহতের জন্য জায়গার সংকুলান করতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ভেতরে কিংবা বাইরে মেঝেতে চাদর বিছিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। আহতদের জন্য রক্তদান করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা।
শনিবারের ভূমিকম্পের কারণে নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুর প্রাচীণ এলাকাগুলোতে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা অনেক বেশি হয়েছে। বিভিন্ন সড়কে দেখা দিয়েছে ফাটল। ভূমিকম্পের কারণে ধারারা টাওয়ারসহ বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থাপনাও বিধ্বস্ত হয়েছে।
শনিবার নেপালের পোখারার ৮০ কিলোমিটার পূর্বে প্রথম দফায় ৭ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। প্রাথমিকভাবে রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ৭ দশমিক ৫ বলে জানানো হলেও পরে তা সংশোধন করে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সংস্থা ইউএসজি জানায়, ভূমিকম্পটির মাত্রা ৭ দশমিক ৯।