দু’একদিনের মধ্যে সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:০১:১৮,অপরাহ্ন ১৯ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুএকদিনের মধ্যে সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ। রোববার আগারগাঁও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের এনইসি সম্মেলনে কক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে এক বৈঠক শেষে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের কাছ থেকে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত শুনেছি। আমরা সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দুএকদিনের মধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েন হবে কিনা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবো।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। কেবল প্রার্থীদের কথা না ভোটারদের কথাও চিন্তা করছি আমরা। প্রার্থী তো কয়েকজন কিন্তু ভোটার অনেকজন। সবাই যাতে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে ফিরে আসতে পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করবো। কেউ কোনো চান্স নিতে চাইলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এজন্যে ভোট কেন্দ্রে যদি কেউ বল প্রয়োগ করে, তাহলে তার উপর দ্বিগুণ বল প্রয়োগ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমরা কাউকে কোনো ধরনের চান্স দিব না।’
বৈঠকে উপস্থিত বাহিনী প্রধানরা সেনা মোতায়েনের বিষয়ে মতামত দিয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো আমরা। কারও বলার উপরে সিদ্ধান্ত নেই না। পরিস্থিতি কী সেটা শুনতে চেয়েছি। তারা আমাদের জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি ভালো। তবে দুই একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
গণমাধ্যমের উদ্দেশে কাজী রকিব বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঢালাও অভিযোগ তুলে লাভ নেই। আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিবো। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন আপনাদের নৈতিক ও প্রফেশনাল দায়িত্ব। আপনাদের প্রতিদিন রিটার্নিং অফিসাররা তথ্য দিচ্ছে। কতজনকে সতর্ক করা হচ্ছে, কতজনকে জরিমান করা হচ্ছে। সেটা জাতির সামনে তুলে ধরবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে অনেক মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সতর্ক করেছি। তারা অনেকেই ক্ষমা চেয়েছে। এসব বিষয়ে পুনরাবৃত্তি হলে শাস্তি দেবো। পাশাপাশি মিডিয়ার কাছ থেকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো তথ্য পেলে রিটার্নিং অফিসার সেগুলো যাচই করে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেবে।’
র্যাবের এক কর্মকর্তা নির্বাচনে সেনাবাহিনীর প্রয়োজন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন। সে ব্যাপারে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘সেনাবাহিনী মোতায়েন হবে কিনা তা র্যাব কর্মকর্তার বিবেচ্য বিষয় নয়, এটা কমিশনই সিদ্ধান্ত নেবে।’
বৈঠকের একটি সূত্র জানায়, বৈঠকে উপস্থিত অধিকাংশই এ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে মতামত দেয়নি। তাদের মতে, নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন নেই।
এদিকে বৈঠক থেকে বেরিয়ে র্যাবের অতিরিক্ত মহা পরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, ‘সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন নেই। মানুষ সেনাবাহিনীকে নামে ভয় পায় আর র্যাবের কাজে ভয় পায়।’
ইসি সচিব সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী, শাহ নেওয়াজ, সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ল্যাফটেনেন্ট জেনারেল আবু বেলাল মো. সফিউল হক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, পুলিশ মহা পরিদর্শক একেএম শহীদুল হক, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ প্রমুখ। এছাড়াও ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, তিন সিটির রিটার্নিং অফিসাররা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।