থাই জঙ্গলে উদ্ধার আরও ৯২ বাংলাদেশি!
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৫৩:১৩,অপরাহ্ন ১০ মে ২০১৫
প্রবাস ডেস্ক :: থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের সংখলা প্রদেশের একটি জঙ্গল থেকে শুক্রবার (৮ মে) উদ্ধার হওয়া ১২৩ জনের মধ্যে ৯২ জনই বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। থাই পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানার পর ওই ৯২ জনের সঙ্গে দেখা করার উদ্যোগ নিয়েছে সেখানে নিযুক্ত দূতাবাস।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৭ ও ৮ মে সংখলা সফরে গিয়ে গণকবর থেকে জীবিত উদ্ধার বাংলাদেশিদের সঙ্গে দেখা করে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসে ফিরে এলে থাই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মালয়েশিয়া সীমান্তে প্রদেশটির গভীর জঙ্গল থেকে আরও ১২৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৯২ জন নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করছেন।
বিষয়টি জানার পরপরই দূতাবাস ওই ৯২ জনের সঙ্গে দেখা করার উদ্যোগ নিয়েছে। এখন সংখলার রাথাফুম পুলিশ স্টেশনে রাখা ওই বাংলাদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে থাই সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছেন দূতাবাস কর্মকর্তারা।
মালয়েশিয়ায় ভাল চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মানবপাচারকারীরা ওই ১২৩ জনকে এনে থাই জঙ্গলে ছেড়ে দিয়েছে বলে মনে করছে স্থানীয় পুলিশ। উদ্ধার বাকিরা বিশেষত রোহিঙ্গা বলেও জানায় পুলিশ।
এর আগে, গত ১ মে একটি গণকবর থেকে উদ্ধার ১৫ বাংলাদেশির সঙ্গে দেখা করতে ৭ ও ৮ মে জরুরি সফরে সংখলায় যান রাষ্ট্রদূত তাসনিমসহ দূতাবাসের কয়েকজন কর্মকর্তা। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তাও।
তাসনিম জানান, সাদাওয়ের গভীর জঙ্গলের গণকবর থেকে উদ্ধার টোটন সাহাসহ (২৮) বাংলাদেশি দাবিদার মোট ১৫ জনের সঙ্গে দেখা করেন তিনি ও তার সঙ্গীরা। এসময় উদ্ধার বাংলাদেশিদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাও বলেন তারা।
এ বিষয়ে দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশের নিরাপত্তায় সাদাওয়ের জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাংলাদেশিদের দেখে এসেছেন রাষ্ট্রদূত। এসময় তিনি টোটন সাহার সঙ্গে প্রায় দু’ঘণ্টা বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন এবং তার আশু সুস্থতা কামনা করেন। রাষ্ট্রদূত ওই বাংলাদেশির কাছে তার পাচার হওয়ার বিষয়াদিসহ দুঃসহ অভিজ্ঞতা ও জাতীয়তা নিশ্চিতে তার স্থায়ী ঠিকানা জানতে চান। জবাবে টোটন নিজেকে নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা দাবি করেন। রাষ্ট্রদূতও টোটনের বাংলাদেশি জাতীয়তা নিশ্চিত হওয়ার পর থাই সরকারের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে নিরাপদে দেশে ফেরানোর ব্যাপারে আশ্বস্থ করেন।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, একইদিন রাষ্ট্রদূত ও তার সঙ্গীরা সংখলার রাথাফুম জেলায় উদ্ধার অভিবাসীদের রাখা একটি প্রটেকশন সেন্টার পরিদর্শন করেন এবং সেখানে বাংলাদেশি দাবিদার ১৫ জনের সঙ্গে কথা বলেন।
পরে রাষ্ট্রদূত সংখলা প্রদেশের ভাইস গভর্নর একারত লেসেন ও থাই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং মানবপাচারের শিকার বাংলাদেশিদের দেখাশোনা করার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান।
রাষ্ট্রদূত সেখানকার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিশ্চিত করেন যে- বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার অপরাধী চক্রের মানবপাচারসহ এ ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধে সম্ভাব্য সকল কঠোর পদক্ষেপ নেবেন। এরপর রাষ্ট্রদূত থাই সামাজিক উন্নয়ন ও মানব নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ট কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দেখা করেন এবং মানবপাচার রোধে যৌথ পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা করেন।