তিস্তা চুক্তির জট ছাড়াতে বদ্ধপরিকর মোদি!
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:০৬:৫১,অপরাহ্ন ০৩ জুন ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের কঠোর অবস্থানকে প্রশংসার দৃষ্টিতে দেখছে ভারত। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ (জাতীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা) সরকারও দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী। তাই এ সপ্তাহে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় স্থল সীমান্ত চুক্তি সই হচ্ছে। তবে দীর্ঘ প্রতিক্ষীত তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি আপাতত না হলেও এ ব্যাপারে সব জট ছাড়ানোর ব্যাপারে যে মোদি বদ্ধপরিকর, তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকার এক নিবন্ধে এই কথা জানানো হয়েছে।
ওই নিবন্ধে আরও বলা হয়, ভারত-বাংলাদেশ স্থলসীমান্ত চুক্তিও পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে বিরোধিতার মুখে পড়েছিল। আসামে মোদির দল বিজেপিই এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তবে সব অসন্তোষ ও বিরোধিতাকে সামলে শেষ পর্যন্ত মোদি এই চুক্তি চূড়ান্ত করতে সক্ষম হয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান সম্পর্কেও বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, মমতা এই সফরেই তিস্তা চুক্তি চূড়ান্ত করে তাতে স্বাক্ষর করতে রাজি হননি। তবে মমতা কখনওই বলেননি তিনি এই চুক্তির বিরুদ্ধে। তার বক্তব্য, একটি অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তার কাছে প্রধান অগ্রাধিকার হল রাজ্যের স্বার্থ। তিস্তাচুক্তি এমন ভাবে করতে হবে যাতে উত্তরবঙ্গ পানি থেকে বঞ্চিত না হয়। তিস্তা সিকিম থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশ যাচ্ছে। পানির অভাবে সিকিম আটটি হাইড্রলিক বাঁধ নির্মাণ করেছে। মমতার বক্তব্য, এই বাঁধগুলোর ফলে উত্তরবঙ্গে পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গ অভ্যন্তরীণ বিতর্ক আগে মোদিকে মেটাতে হবে। কারণ সিকিম সরকার পাল্টা যুক্তি দিচ্ছে যে পানি সঞ্চয় করে তারা বাঁধ নির্মাণ করেনি, স্রোতকে অবরুদ্ধ না করেই তা থেকে পানি নিয়ে বাঁধের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
আনন্দ বাজারে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে তিস্তা প্রবল আবেগতাড়িত বিষয়। অনেকে বলছেন, দু’দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক চুক্তি রূপায়ণের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু সেটা যেমন সত্য, তেমনই এটাও সত্য যে কোনও দেশের পক্ষেই অভ্যন্তরীণ যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় রাজ্যের মতামতকে অগ্রাহ্য করা সম্ভব নয়। তবে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কর্মপদ্ধতিতে একটা মৌলিক পার্থক্য আছে। মনমোহন যা পারেননি সেটা মোদি তা পেরেছেন। মোদি মমতাকে বোঝাতে পেরেছেন যে বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা বিশেষ প্রয়োজন।
সূত্র : আনন্দাবাজার পত্রিকা