তাহিরপুরে তরুণীর আত্মহত্যা : প্রেমিকসহ গ্রেফতার ২
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:১৬:৩০,অপরাহ্ন ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪
তাহিরপুর সংবাদদাতা: দীর্ঘ ৫ বছর মন দেয়া-নেয়ার পর প্রেমিক ও তার পরিবারের লোকজনের বাধার মুখে স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেয়ে লোকসমাজে হেয় হওয়ার কারণে এক তরুণী আত্মহত্যা করেছে। মৃত্যুর আগে প্রেমিক ও তার পরিবারের লোকজন, এমনকি কথিত সমাজপতিসহ বেশ কয়েকজনকে মৃত্যুর জন্য দায়ী করে ঐ তরুণী একটি চিরকুট লিখে গেছে। নিহত তরুণীর নাম সাহেবা আক্তার মহিমা। সে উপজেলার বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়নের কাউকান্দি গ্রামের তারা মিয়ার মেয়ে।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কাউকান্দি গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে আক্তার হোসেনের সাথে একই গ্রামের তারা মিয়ার মেয়ে সাহেবা আক্তার মহিমার গত ৫ বছর ধরেই মন দেয়া-নেয়া চলছিল। গত কয়েক মাস আগে গ্রামে এবং উভয়ের পরিবারের লোকজনের মধ্যে মন দেয়া নেয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে মহিমার পরিবারের পক্ষ থেকে তারা মিয়ার পরিবারের লোকজনকে বিয়ের আলাপ-আলোচনা করার প্রস্তাব দেয়া হয়। এনিয়ে কয়েক দফা সালিশি এবং আলোচনা হলেও কতিথ সমাজপতি এবং আক্তারের পরিবারের লোকজন দরিদ্র পরিবারের মহিমার বিয়েতে অস্বীকৃতি জানায়।
এ ঘটনার পর মহিমা ও তার পরিবারের লোকজনকে নিয়ে গ্রামে মুখরোচক আলোচনা শুরু হলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে মহিমা। একদিকে প্রেমিকের কাছ থেকে স্ত্রীর স্বীকৃতি না পাওয়া, অন্যদিকে গ্রামের লোকজনের সমালোচনার মুখে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হওয়ার মানসিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে মহিমা গত বৃহম্পতিবার রাতের কোনো এক সময় বাড়ির পার্শ্ববর্তী গাছের ঢালে ওরনা পেছিয়ে আত্মহত্যা করে। মৃত্যুর আগে একটি চিরকুটে মহিমা এই মুত্যুর জন্য দায়ী হিসেবে প্রেমিক আক্তার ও তার পরিবারের লোকজন এবং সমাজপতিসহ বেশ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে গেছে। পুলিশ ঐ চিরকুটটি উদ্ধার করেছে।
এদিকে এ ঘটনায় পুলিশ গত শুক্রবার প্রেমিক আক্তার হোসেন ও তার চাচাত ভাই একই গ্রামের মৃত আব্দুস সাহিদের ছেলে জুনায়েদ আহমদকে গ্রেফতার করেছে।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনিছুর রহমান খাঁন গতকাল শনিবার জানান, নিহতের পিতা আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগ এনে থানায় আক্তারসহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মহিমার চিরকুট ও মামলার সূত্র ধরে অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।