ড্রোন হামলার পরিকল্পনা ছিল বাংলাটিমের
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৪৬:৫৯,অপরাহ্ন ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪
‘উঁচু ভবনে ও নিজেদের আড়াল করে দূর লক্ষ্যবস্তুতে হামলাই ছিল জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্যদের। এ লক্ষ্যে তারা প্রায় ছয় মাস যাবৎ খেলনা বিমানের আদলে কোয়াড হেলিকপ্টার বা ড্রোন তৈরির বিভিন্ন কারিগরি দিক নিয়ে গবেষণা করছিল।’
বুধবার এই গবেষণা দলের আটক দুই সদস্য এমন তথ্যই দিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি)। দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম এসব কথা জানান।
এর আগে মঙ্গলবার রাত পৌনে নয়টায় গোপন খবর পেয়ে যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক হোসেন সড়ক এলাকা থেকে এ দুজনকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে কোয়াড হেলিকপ্টার বা ড্রোন তৈরির সরঞ্জামাদি, বিভিন্ন ধরনের ইলেট্রনিক ডিভাইস ও জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়।
আটকরা হলেন মুন্সীগঞ্জের তানজিল হোসেন বাবু (২৬) ও কুমিল্লার মো. গোলাম মাওলা মোহন (২৫)। মোহন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। অপরদিকে অন্যজনের কারিগরি জ্ঞান বেশ ভাল বলে জানান মনিরুল।
যুগ্ন কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘তারা গত ছয়মাস যাবৎ ড্রোন তৈরি নিয়ে গবেষণা করছিল। তারা এটি তৈরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল। তৈরি ড্রোনগুলো ২০-৩০ কেজি ওজনের বোমা বা কোনো বস্তু নিয়ে ২০-৩০ তলা উঁচু ভবন পর্যন্ত উঠতে সক্ষম হতো।’
তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে এ দুজন আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেছে। তারা দু’জনই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নেতা মওলানা জসীম উদ্দিন রাহমনীর অনুসারী হিসেবে জিহাদি কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এ দুজনের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। সরঞ্জামাদি কেনা এবং কারিগরি সহযোগিতা প্রদানকারীদের তথ্য ও দলের অন্য সদস্যদের আটকের জন্য আদালতে হাজির করে তাদের রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের উত্থান। গত দুই বছর ধরে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এই সংগঠনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছিল। জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) প্রধান শায়খ আব্দুর রহমান ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইসহ প্রথম সারির ৬ নেতার মৃত্যুদণ্ড ২০০৭ সালে ৩০ মার্চ কার্যকর হয়। সংগঠনটির অনেক নেতাকর্মী জেল হাজতে রয়েছে। জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের প্রধান মুফতি হান্নানসহ প্রথম সারির নেতা ও বেশকিছু কর্মী জেলহাজতে। সে সুযোগে ভিন্ন নামে আবির্ভাব ঘটে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের। এ সংগঠনে জেএমবি ও হরকাতুল জিহাদের নেতাকর্মীরা রয়েছে বলে গোয়েন্দাদের দাবি। দেশব্যাপী তাদের নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে।