ট্রেনের বগি পড়ে ঘর ভেঙে চুরমার বয়স্ক দম্পতির
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:০৭:৫১,অপরাহ্ন ১৭ মার্চ ২০২৪
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ঢালুয়া ইউনিয়নের তেজের বাজার উরকুটি এলাকায় রেললাইনের পাশে ঘর তৈরি করে থাকতেন ৭৫ বছর বয়সী চাঁন মিয়া ও তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। এলাকার মানুষের সহযোগিতায় ২০ বছর আগে ছোট একটি ঘরে বসবাস করতেন এই দম্পতি।
মো.আবদুল্লা আল আমীন
রোববার দুপুরে ঘরের পাশে গাছের নিচে বসে কথা বলছিলেন চাঁন মিয়া ও তার স্ত্রী মনোয়ারা। হঠাৎ করে বিকট শব্দ হয়। মুহূর্তের মধ্যেই কিছু বুঝার আগেই ট্রেনের একটি বগি ছিটকে এসে পড়ে তাদের ঘরটির ওপর। বগির একটি অংশে ধাক্কা খেয়ে হুমড়ি খেয়ে উল্টিয়ে পড়েন চাঁন মিয়া ও মনোয়ারা বেগম। মুহূর্তের মধ্যেই সব কিছু চোখের সামনে শেষ হয়ে যায়।
চাঁন মিয়ার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত লাগে। রক্ত জমাট বেঁধে যায় বাম চোখে। শরীরের আঘাত নিয়ে অশ্রুসিক্ত চোখে শেষ আশ্রয়স্থলটি ভেঙে যাওয়ায় আর্তনাদ করেন। সারাদিন মানুষের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়া চাল, ডাল, তেল, আলু,টমেটো মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। চাঁন মিয়ার এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলেটির নাম নাসির মিয়া। শারীরিক প্রতিবন্ধী। বউ নিয়ে ঢাকায় থাকেন। মেয়ে সাহিদা বেগম স্বামীর সঙ্গে কুমিল্লা সদর উপজেলার শাহাপাড়া এলাকায় থাকেন। এতো বড় দুর্ঘটনার কথা এখনো জানাতে পারেননি ছেলে মেয়েকে।
চাঁন মিয়া বলেন, ‘অল্পের লাইজ্ঞা আমি বাইচ্চা গেছি। বগি আমার ঘরের ওপর পড়ছে। আমার সব কিছু শেষ। আমি এহন কই থাইক্কাম। আমার কাম করার শক্তি নাই। মানুষের কাছ থাইক্কা খুইজ্জা খাই। আমার ঘরের সব কিছু শেষ হইয়া গেছে। আমারে এহন কেডা সাহায্য করব?’
চাঁনমিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘বাবা আমি সারাদিন মানুষের কাছ থাইক্কা খুইজ্জা যা পাই তা দিয়া কষ্ট কইরা চলি। আমার ঘরে চারটা হাঁস আছিলো। হাঁসটি ও মইরা গেছে। আমার জামাই বগির লগে ধাক্কা লাইজ্ঞা ব্যথা পাইছে। এখন কেডা আমাগোর সাহায্য করব।’