জুতা পলিশ করা অপুর মেডিকেল পরীক্ষা জয়, অর্থাভাবে ভর্তি নিয়ে শঙ্কা
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৫৭:৫২,অপরাহ্ন ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও কঠোর অধ্যবসায়ে মেডিকেল ভর্তিতে সুযোগ পেয়েছেন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ঋষি সম্প্রদায়ের অপু দাস। তবে দারিদ্রতার কাছে হার মানতে হচ্ছে থাকে। অর্থাভাবে মেডিকেলে ভর্তির স্বপ্ন এখন অনিশ্চতায়।
মো. আবদুল্লা আল আমীন
অপু দাস যশোরের মণিরামপুর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা খানপুর গ্রামের ঋষি পল্লীর অসিত দাসের ছেলে। চলতি ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি।
অপুর বাবা অসিত দাস পেশায় জুতা পলিশের কাজ করেন। বাবার কাজে সাহায্য করেন অপু। নেই নিজেদের বসত-ভিটাও।
স্থানীয় খানপুর ঋষি পল্লীর ব্র্যাক সেন্টার থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে মণিরামপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন অপু দাস। সেখান থেকে ২০২০ সালে এসএসসি ও মণিরামপুর সরকারি কলেজ থেকে ২০২২ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫.০০ পেয়ে উত্তীর্ন হন। চলতি ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে কোনো প্রকার কোচিং না করেই রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের ফলশ্রুতিতে অপু দাস এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৭৫ নম্বর পেয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান।
অপু দাস বলেন, ‘আমার জীবনের বড় আশা ছিল আমি একজন চিকিৎসক হব। দুঃখী ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবো। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমি চেষ্টা করে গেছি। হয়তো ভর্তির সুযোগ পেয়েছি কিন্তু সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। জানি না আমি কিভাবে মেডিকেলের খরচের মোকাবেলা করব। আমার অসহায় বাবা-মা কিভাবে অর্থের যোগান দেবে তা আমাকে ভাবিয়ে তুলছে।’
অপুর বাবা অসিত দাস বলেন, ‘আমি লেখাপড়া জানি না। জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বড় হয়েছি। ক্ষেত খামার নেই, জুতার কাজ করে সংসার চালাই। অপুও আমার কাজে সাহায্য করে। অনেক কষ্ট করে কোনো রকমে ছেলেকে লেখাপড়া করিয়ে এই পর্যন্ত এনেছি। শুনিছি অপুকে পড়াতে পারলে বড় ডাক্তার হবে। কিন্তু সেই সামর্থ্য এখন আমার নেই। এতো বড় সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলে আজীবন মনে কষ্ট থাকবে।’
প্রতিবেশী মিলন দাস বলেন, ‘অপু পড়ালেখায় খুব ভালো। পড়ালেখা ছাড়া অন্য কিছু বোঝে না সে। অপু ডাক্তারিতে চান্স পেয়েছে জেনে আমরা এলাকাবাসী খুব খুশি। আমাদের পাড়ায় একজন বড় ডাক্তার হবে। তবে অর্থের অভাব এতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, এজন্য সবার সহোযোগিতা প্রয়োজন।’
অপুর শিক্ষক অধ্যাপক বাবুল আকতার বলেন, ‘কঠোর অধ্যবসায় ও ইচ্ছা শক্তি দিয়ে যে সব কিছু অর্জন করা যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো অপু দাস। দারিদ্রতা হার মেনেছে তার ইচ্ছা শক্তির কাছে। তার সামনে খরচের অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য বিত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।’