জীবনধারণের জন্য ফেসবুকে নিলামে উঠেছে এক তরুণী! (ভিডিও সহ)
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৩৯:১৭,অপরাহ্ন ৩০ নভেম্বর ২০১৪
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক :
অসুস্থ বাবা-মায়ের চিকিৎসা আর পেটের জ্বালা মেটাতে ফেসবুকে নিজেকে ‘বিক্রির জন্য’ বিজ্ঞাপন দিয়েছেন গুজরাটের বদোদরা জেলার এক তরুণী। এ ঘটনা আলোড়ন তুলেছে গোটা ভারত জুড়ে। এ নিয়ে মোদি সরকারের কঠোর সমালোচনাও শুরু করেছেন অনেকে।
নিজের ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক পোস্টে নিজেকে বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন চাঁদনি রাজগৌরে নামের ওই তরুণী। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মা পক্ষাঘাতের কারণে বহুদিন ধরেই শয্যাশায়ী। সপ্তাহখানেক আগে পিছলে পড়ে গিয়ে তাঁর বাবাও পা ভেঙেছেন। তাঁদের দেখাশোনা করার জন্য চব্বিশ ঘণ্টাই চাঁদনিকে বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। বাবাই ছিলেন পরিবারেরেএকমাত্র কর্মক্ষম সদস্য। তিনি বিছানায় পড়ার পর জীবনধারণের কোনও সংস্থান নেই চাঁদনির পরিবারের। তাই ভারতের এই মেয়েটি নিজেকে নিলামে তুলে দিয়েছেন।
গত ২৫ নভেম্বর ফেসবুকে দেওয়া ওই পোস্টে চাঁদনি বলেন, ‘আমি লজ্জিত। কিন্তু কোনও উপায় ছিল না। আশা করি, এই চূড়ান্ত পদক্ষেপের পর সরকার আমার অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী আনন্দিবেন প্যাটেলের কাছে সাহায্যের অনুরোধ জানাচ্ছি।’ তিনি আশা প্রকাশ করে আরো লিখেছিলেন,‘ আশা করছি ভারতের লোকজন আমার সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কেননা তারা চাইবে না একটি মেয়ে এভাবে বিক্রি হয়ে যাক।’
কিন্তু তার ধারণায় কিছু ভুল ছিল। তার পোস্টটি দেখে অনেকেই তাকে ফোন করেছেন, কিন্তু সাহায্য করতে নয়। চাঁদনির ভাষায়, ‘’ফেসবুক দেখে অনেকেই ফোন করেছে। সাহায্য করা নয়, অধিকাংশ লোকের উদ্দেশ্য ছিল আমার পরিস্থিতির ফায়দা লোটা।’
চাঁদনির এই পোস্ট সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর গোটা ভারত জুড়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। বিজেপি সরকারের সমালোচনায় মেতে উঠেছেন কংগ্রেস দলের নেতারা। কংগ্রেসসাংসদ রাজীব সাতভে বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন,’এই ভয়াবহ ঘটনা ফের প্রমাণ করল, মোদি যে গুজরাট মডেলের কথা বলেছিলেন, তা শুধু মার্কেটিং আর মিথ্যা প্রচার মাত্র। মহারাষ্ট্রসহ অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় মানব সম্পদ সূচকে গুজরাট অনেক নিচে।’
এদিকে এ বিতর্কশুরু হওয়ার পর ফেসবুক থেকে চাঁদনির অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেছেন কে বা কারা। কেননা ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নিজেকে ‘বিজেপি কর্মী’ বলে দাবি করেছিলেন ওই তরুণী। ফলে এটি রাজ্যের বিজেপি সরকারের কাছে খুব স্বস্তির বিষয় নয়।
ইতিমধ্যে চাঁদনির সমালোচনায় মুখর হয়েছে গুজরাটের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। গুজরাটের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীলাবেন আঙ্কোলিয়া বলেছেন,’চাঁদনি ভুল পথ নিয়েছেন। উনি আগেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেন।’ রাজ্যের পরিবার উন্নয়ন মন্ত্রী নীতিন প্যাটেল তার সমালোচনা করে বলেছেন, ‘রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিত্সার ব্যবস্থা রয়েছে। ঘর থেকে বেরোতে না পারলে, হেল্পলাইনে ফোন করে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকতে পারতেন।’
এসব সমালোচনার জবাবে চাঁদনি বললেন, ‘সাহায্যের আশ্বাস তখনই এল, যখন লজ্জাজনক পথে পা বাড়ালাম।’