জাভায় বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে এয়ার এশিয়ার কিউজেড-৮৫০১
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৩১:৪৭,অপরাহ্ন ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪
অনলাইন ডেস্ক:: ১৬২ যাত্রী নিয়ে নিখোঁজ ইন্দোনেশিয়ান বিমানটি জাভা সাগরে বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। একারণে ওই সাগরে সোমবার সকাল থেকে নতুন করে অভিযান শুরু হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ান উদ্ধার অভিযানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই খবর নিশ্চিত করেছে বিবিসি, সিএনএনসহ সকল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
এর আগে রোববার সকালে হারিয়ে যাওয়ার পর বিমানটি ও এর যাত্রীদের উদ্ধার অভিযান ওই দিন সন্ধ্যার পর অন্ধকারের কারণে স্থগিত করা হয়। এসময় এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়া পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা হাদি মুস্তাফা বলেন, আগামীকাল (সোমবার) সকাল সাতটায় আবারও উদ্ধার তৎপরতা শুরু হবে। তবে আবহাওয়া যদি ভালো থাকে, তাহলে সাতটারও আগে অভিযান শুরু হবে।
ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়া থেকে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার পথে জাভা সাগরের উপরে থাকা অবস্থায় রোববার সকাল ৭টা ২৪ মিনিটে ট্রাফিক কন্ট্রোলের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিমানটির। এর আগে ভারী মেঘ এবং বজ্রপাত এড়াতে এর পাইলট কন্ট্রোল রুমের কাছে ৮ হাজার ফুট (১১ হাজার মিটার) উপরে ওঠার অনুমতি চায়।
এপ্রসঙ্গে গতকাল রোববার ইন্দোনেশিয়ার পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হাদি মুস্তফা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বিমানটি জাভা সাগরের উপর থাকা অবস্থায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। ধারণা করা হচ্ছে, বিমানটি কালিমানতান ও বেলিতুং দ্বীপের মাঝামাঝি এলাকা থেকে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছে।
উল্লেখ্য, জাভা সাগরের এক পাড়ে ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়া শহর এবং অপর পাড়ে সিঙ্গাপুর অবস্থিত।
এয়ারএশিয়ার কিউজেড৮৫০১ (QZ8501) নাম্বারের এই ফ্লাইটটি ২৮ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ২০ মিনিটে সুরাবায়া থেকে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে উড়াল দেয়। এতে ছিল ৭ ক্রু এবং ১৫৫ যাত্রী। যাত্রীদের মাঝে ১৪৯ জনই ইন্দোনেশিয়ান। বাকি ছয়জনের মধ্যে একজন ব্রিটিশ, একজন মালয়েশিয়ান ও তিনজন কোরিয়ান। কোরিয়ান তিনজনের মধ্যে একজন নবজাতকও রয়েছে।
এদিকে ইন্দোনেশিয়ার অনুসন্ধান এবং উদ্ধারকারী দলের প্রধান সোয়েলিস্ট্যো সোমবার গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমাদের হিসাব অনুযায়ী বিমানটি জাভা সাগরের গভীরে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনুসন্ধান এলাকার আয়তন পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে বাড়তেও পারে।
বিমানবাহিনীর মূখপাত্র হাদি থাহজান্তো জানিয়েছেন, দুটি সি-১৩০ হারকিউলিস বিমান ইন্দোনেশিয়ার বাঙ্কা দ্বীপে উত্তর-পূর্বে নজর রাখছে। এই দ্বীপটি জাভা সাগরে সুরাবায়া এবং সিঙ্গাপুরের মাঝে অবস্থিত।
সিঙ্গাপুর জানিয়েছে, এয়ারএশিয়া ইন্দোনেশিয়ার এ৩২০-২০০ বিমানটি উদ্ধারে সাহায্যার্থে এটি দু’টি নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠিয়েছে। এছাড়া রোববার একটি সি-১৩০ বিমানও পাঠানো হয়েছে ঘটনাস্থলে।
এদিকে সিঙ্গাপুরের টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ এশিয়া এক খবরে জানিয়েছে, মালয়েশিয়াও তিনটি নৌবাহিনীর জাহাজ ও একটি সি-১৩০ পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন রেডিও জানিয়েছে, একটি পি-৩ নজরদারি বিমান উদ্ধার অভিযানে অংশ নিতে ডারউইন ত্যাগ করেছে। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতও সাহায্য করার প্রত্যয় জানিয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার জাতিয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার এজেন্সির পরিচালক (অপারেশনস) বলেছেন, যেসকল দেশ আমাদের সাহায্য করার ইচ্ছা জানিয়েছে, তাদের সবার সাথে যোগাযোগ ও পরামর্শ করেই আমরা কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে নিখোঁজদের আত্মীয়-পরিজনদের যোগাযোগ করে তথ্য জানতে গতকাল রোববারই এয়ারএশিয়া একটি জরুরি ফোন নাম্বার প্রকাশ করেছে। নাম্বারটি হল- +৬২২১২৯৮৫০৮০১।
প্রসঙ্গত, এয়ারএশিয়া একটি মালয়েশিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, যা এয়ারএশিয়া ইন্দোনেশিয়ার ৪৯ শতাংশের মালিক এবং এর আগে কখনোই এই প্রতিষ্ঠানের কোনো বিমান নিখোঁজের ঘটনা ঘটেনি।