ছিটমহলে ভারত সরকারের তৎপরতা, সীমান্তে সজাগ বিএসএফ
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:১১:৩৬,অপরাহ্ন ১০ মে ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
ছিটমহল বিনিময় চুক্তি যতটা কঠিন ছিল ঠিক ততটাই কঠিন বিনিময়ের পর ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থিত ৫১টি ছিটমহলের প্রশাসনিক ব্যবস্থার উন্নয়ন শুরু করা। এর সঙ্গে রয়েছে যারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরের ছিটমহল থেকে যারা চলে আসবেন, তাদের পুনর্বাসন। এমনটাই মনে করছে রাজ্য প্রশাসন। এই ৫১টি ছিটমহলে বিনিময়ের পরে যেন সুষ্ঠুভাবে এই কাজগুলো করা যায়, তারই তৎপরতা চোখে পড়ছে রাজ্য প্রশাসনে।
কলকাতায় রাজ্যের সচিবালয় নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই এই সব কাজ শুরু করার জন্য ছিটমহলগুলোয় সরেজমিনে গিয়ে সেখানে বসবাসরতদের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসকের কাছে নোট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সবকটি ছিটমহলে স্থানীয় বিডিওর মাধ্যমে পাঠানো এই নোট জেলা প্রশাসকের কাছে থেকে দ্রুত নবান্নে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই নির্দেশ অনুযায়ী রবিবার কোচবিহার জেলার দিনহাটা ব্লক-১-এর বিডিও পার্থ চক্রবর্তী বাত্রিগাছ ছিটমহলে গিয়ে স্থানীয় বাসীন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি এই ছিটমহলের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আনুষ্ঠানিকভাবে ছিটমহল বিনিময় হয়ে গেলে যেন দ্রুত উন্নয়ন ও পুর্নবাসনের কাজ শুরু করা যায়, তাই যুদ্ধকালীন-তৎপরতায় স্থানীয় প্রশাসনকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পানীয় জল, বিদ্যুৎ, সড়ক, বিদ্যালয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি যারা ওপারের ছিটমহল থেকে আসবেন, তাদের ঘর নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য জমি চিহ্নিতকরণের কাজও শুরু হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গেছে, ছিটমহলের অবকাঠামো ও পুর্নবাসনের জন্য ভারত সরকার ৩ হাজার ৯ কোটি ৮৯ লাখ রুপি বরাদ্দ করেছে। এর মধ্যে ছিটমহলগুলোর অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ৭৭৫ কোটি রুপি ব্যয় করা হবে।
পুনর্বাসনের জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা বাবদ আলাদা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। এর মধ্যে অস্থায়ী শিবির গড়তে ১০১ কোটি রুপি, পুনর্বাসনের জন্য এককালীন সাহায্য করা হবে ৩৭৩ কোটি রুপি ও স্থায়ী পুনর্বাসন ক্লাস্টার নির্মাণের জন্য ১ হাজার ৭৫৯ কোটি রুপি খরচ করা হবে। আবাসনের প্রতিটি ক্লাস্টারে একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয়, জল ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা এবং সড়ক তৈরি করে দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।
ঠিক হয়েছে, আগত প্রতিটি পরিবারকে সাড়ে সাতশো বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। এজন্য চারতলা বেশ কয়েকটি ভবন নির্মাণ করা হবে। ওই ভবনগুলো নির্মাণের জন্য জমি কেনার খরচ ধরা হয়েছে প্রতি একর ৩০ লাখ রুপি করে। এক্ষেত্রে মোট ২৩০ একর প্রয়োজন বলে জানা গিয়েছে।
এর পাশাপাশি সীমান্তে সজাগ থাকার কথা বলা হয়েছে বিএসএফকে। ছিটমহল বিনিময়ে আগে ও পরে যেন কোনও ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা না ঘটে সেদিকে নজর রাখছে বিএসএফ। ছিটমহলে যেন বাইরে কেউ প্রবেশ করে অশান্তি সৃষ্টি করতে না পারে, সেই দিকে লক্ষ রাখছে স্থানীয় থানাগুলো ।