ছাত্রলীগ কর্মীর হাতে ছাত্রীর শ্লীলতাহানি : চড়-থাপ্পড়ে মীমংসার চেষ্টা
প্রকাশিত হয়েছে : ১:০৫:২৭,অপরাহ্ন ১৬ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
বর্ষবরণের রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এক আদিবাসী ছাত্রী ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তাকে মারধর ও টাকা-মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ করেন তিনি। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌরঙ্গীর মোড় এলাকায় লেকের পাড়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, অভিযুক্তদের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ‘চড়-থাপ্পড়’ মেরে মীমাংসার চেষ্টা চালিয়েছেন। তবে নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী আজ বৃহস্পতিবার প্রক্টর অফিসে ঘটনাটি সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান শেষে ওই ছাত্রী তার এক বন্ধুর সঙ্গে হলে ফেরার সময় শহীদ সালাম-বরকত হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী নুরুল কবির (নৃবিজ্ঞান), বিকাশ (প্রাণিবিদ্যা), অর্ণব (রসায়ন), আব্দুর রহমান ইফ্তি (নৃবিজ্ঞান) ও রাকিব (ভূগোল ও পরিবেশ) তাদেরকে ডেকে ভিসির বাসভবনের রাস্তার দিকে নিয়ে যান। একপর্যায়ে ইফতি ও রাকিব ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে ও তাকে মারধর করে ব্যাগ থেকে মোবাইল ফোন ও বেশ কিছু টাকা ছিনিয়ে নেয়। এসময় তার বন্ধুটিকেও মারধর করে ছাত্রলীগের পরিচয়ধারী ওই ক্যাডাররা।
বিষয়টি প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহাকে জানানো হলে তিনি সহযোগিতামূলক আচরণ করেননি বলেও জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী।
বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার শহীদ সালাম-বরকত হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা ভাসানী হলের নেতা-কর্মী আল্লামা, সোহেল, জাকির, মওদুদ ও সুজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে বিষয়টি ‘মিটমাট’ করে নেন। এরপর তারা ভাসানী হলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ওই ছাত্রীদের হলের নেত্রীদের ডেকে আবারও মীমাংসার চেষ্টা করলে নেত্রীরা অস্বীকৃতি জানান। পরে শহীদ সালাম-বরকত হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী শান্ত, নির্মল, নিলাদ্রী, বিজয় অভিযুক্তদের নিয়ে ছাত্রীটির হলে যান। এ সময় তারা অভিযুক্তদের চড়-থাপ্পড় মেরে চলে আসেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ করা হলে সেটি যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলে পাঠানো হয়েছে বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. তপন কুমার সাহা।
এ বিষয়ে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাসেল বলেন, অভিযুক্তদের ইতোমধ্যে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রশাসন যাতে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয় সে ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।
অন্যদিকে, শ্লীলতাহানির যে অভিযোগ উঠেছে তার যথাযথ বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ। সংগঠনের সভাপতি তন্ময় ধর ও সাধারণ সম্পাদক দীপাঞ্জন সিদ্ধান্ত কাজল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে তারা বলেন, এর আগেও বর্ষবরণের দিনে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু প্রশাসনিক দুর্বলতা ও দোষীদের প্রতি প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্টের কারণে বার বার দোষীরা পার পেয়ে যায়। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে সব শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণাও দেন নেতারা।