চুনারুঘাট সীমান্ত দিয়ে দেশে ঢুকছে কোটি কোটি টাকার গাঁজা
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:২৫:০৩,অপরাহ্ন ২৫ নভেম্বর ২০১৪
চুনারুঘাট প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট সীমান্তের ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই ও সোনামুড়া থানার বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার একর জমিতে গাঁজার চাষ হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে পাচারের জন্যই ভারতীয়রা এসব গাঁজা চাষ করছে বলে সীমান্ত সূত্র জানিয়েছে। এ অবস্থায় সীমান্ত এলাকায় উৎপাদিত এসব গাঁজা সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অবাধে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। গাঁজা পাচারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীর পরোক্ষ সহযোগিতা থাকায় বিজিবি, পুলিশ ও নারকোটিক্স সীমান্তে গাঁজা পাচার বন্ধ করতে পারছে না।
স্থানীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর জানিয়েছে প্রতিবছর চুনারুঘাট ও মাধবপুর সীমান্তে কয়েক কোটি টাকার গাঁজা বিজিবি ও নারকোটিক্স উদ্ধার করে। অভিযান পরিচালিত হয় প্রতিমাসে। তারপরও গাঁজা পাচার রোধ করা যাচ্ছে না। এদিকে সোমবার ত্রিপুরার স্যান্দন পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সীমান্ত এলাকায় গাঁজা চাষের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদে বলা হয়েছে, রোববার প্রশাসন ও বিএসএফ সোনামুড়া এলাকায় ১০০ একর জমিতে উৎপাদিত প্রায় ৩১ কোটি টাকার গাঁজা গাছ কেটে ধ্বংস করেছে। এগুলো সীমান্তে পাচার হওয়ার কথাও সংবাদে বলা হয়।
সীমান্ত সূত্র জানায়, জেলার চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলার সীমান্তের ওপারে ভারতের খোয়াই ও সোনামুড়া থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় গাঁজার চাষ করা হয়েছে। তারা এসব গাঁজা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাংলাদেশে পাচারের জন্যই উৎপাদন করে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। গাঁজা চাষীরা ত্রিপুরার পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে চাষকৃত এসব গাঁজা সাধারণত পৌষ মাসের দিকে উত্তোলন করে মজুদ করে রাখে। স্থানীয় চোরাকারবারিরা এসব গাঁজা সারা বছর তাদের কাছ থেকে কিনে বাংলাদেশে পাচার করে। সীমান্তের একটি সূত্র জানায়, খোয়াই ও সোনামুড়া থানা এলাকায় ভারতীয় চাষীরা পাহাড়ি জমিতে ধান কিংবা ফসল ভালো না হওয়ার কারণে গাঁজা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
ত্রিপুরা অঞ্চলে গাঁজার চাহিদা না থাকলেও ওই এলাকায় গাঁজার চাষ বাড়ার কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে বাংলাদেশে পাচার।
সোমবার ত্রিপুরার স্যান্দন পত্রিকা ও দৈনিক সংবাদ পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, রোববার সোনামুড়া মহকুমা প্রশাসন ও বিএসএ যৌথ অভিযানে সোনামুড়া থানাধীন দক্ষিণ তৈরান্দাল ছণ্ডিছড়ায় পর্যটন এলাকার জলাশয়ের চারপাশে প্রায় ১০০ একর জমিতে চাষ ১ লাখ ২৫ হাজার গাঁজাগাছ কেটে ফেলা হয়। এসব গাঁজার বাজারমূল্য ৩১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সংবাদে আরও বলা হয়, এর পেছনে রাজনৈতিক নেতাদের মদদ রয়েছে।
এদিকে চুনারুঘাট ও মাধবপুর সীমান্তের দায়িত্বে থাকা বিজিবি সদস্যরা প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ গাঁজা সীমান্ত এলাকা থেকে উদ্ধার করে নারকোটিক্সে জমা দিচ্ছেন। স্থানীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর চুনারুঘাট কার্যালয়ের ইন্সপেক্টর ফনিভূষণ জানান, প্রতিবছর সীমান্ত থেকে কোটি টাকা মূল্যের গাঁজা উদ্ধার হচ্ছে ও নষ্ট করা হচ্ছে। কিন্তু সীমান্তে গাঁজা পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না।