ঘরোয়া ক্রিকেটে ম্যাচ ফিক্সিং; জড়িত জাতীয় ক্রিকেটার!
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:২৬:০১,অপরাহ্ন ১৬ মে ২০১৫
স্পোর্টস ডেস্ক:: এই তো বছর খানেক আগের কথা। এক বোর্ড সভার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি, নাজমুল হাসান পাপন জানালেন, ‘আশরাফুল-কান্ড’-এর পর এবার ঘরোয়া ক্রিকেটের উপর নজরদারী বাড়বে।
উদ্দেশ্যটা পরিস্কার ছিল, ঘরোয়া ক্রিকেটকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জাল থেকে দূরে রাখা। তবে, সেটা পুরোপুরি করা যায়নি বলেই এবারের ১৬ তম জাতীয় ক্রিকেট লিগে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের আলামত পাওয়া গেছে। আর তাতে জড়িত আছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক দুই ক্রিকেটার।
গত ৯ থেকে ১২ মার্চ বিকেএসপিতে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় লিগের শিরোপা নির্ধারণী দুটি ম্যাচ।শিরোপার সুবাস পেতে থাকা খুলনা তৃতীয় দিনেই চট্টগ্রামকে ইনিংস ও ২৪ রানে হারিয়ে শিরোপা উল্লাস করে। কেন না, তাদের ঝুলিতে জমা হয়েছে ১২০ পয়েন্ট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রংপুরের চ্যাম্পিয়ন হতে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ম্যাচে পূর্ণ ২৪ পয়েন্ট পেতে হতো।
চতুর্থ দিন নাটকীয়ভাবে রংপুর ঢাকা মেট্রোকে নাটকীয়ভাবে ১২০ রানে হারায়। শুধু ম্যাচ জয়ই নয়, চ্যাম্পিয়ন হবার সমীকরণও মিলিয়ে ফেলে রংপুর। ব্যাটিংয়ে ৫, বোলিংয়ে ৩ ও ম্যাচ জয়ের ১৬, এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ২৪ পয়েন্ট পায় তারা। আর প্রথমবারের মতো জাতীয় লিগের শিরোপা জেতে।
মাত্র এক পয়েন্টের জন্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া থেকে বঞ্চিত খুলনা রংপুর ও ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ আনে বিসিবিতে। প্রমাণ হিসেবে জমা দেয় ঢাকা মেট্রোর দুই কোচ হান্নান সরকার ও মেহরাব হোসের কথোপকথনের অডিও। এ দুজনের কথোপকথনে বেরিয়ে আসে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের নানা আলামত।
এ বিষয়ে একটি এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট করেছে এক বেসরকারী টেলিভিশন। হান্নান ও অপির কথোপকথনে শোনা যায়, একজন আরেকজনকে বলছেন, ‘ওদের আট পয়েন্ট দরকার। আমি বলছি, তোমরা তো চারশ করছোই। আমি আমার পজিশনের জন্য বোলিংয়ের তিন পয়েন্ট দিতে রাজি হইসি।’
ও্ই অডিও বার্তাতেই নিশ্চিত হয়, ক্রিকেটাররাও এই ম্যাচ পাতানোতে সরাসরি জড়িত। যারা জড়িত, তাদের বেশিরভাগেরই জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। হান্নান-অপির কথোপকথন, ‘শামসুরে (শামসুর রহমান শুভ) ড্রপ দিসি। রাজুরে কি দিসি এমনেই? পাওয়ার আছে দেখেই তো দিসি। আমি বলছি তোমরা কি করতে পারবা করো।’
প্রমাণ হিসেবে টেলিভিশন রিপোর্টে একজন ক্রিকেটারের ফোন কলও ফাঁস করা হয়। তিনি বলেন, ‘চার-পাঁচটা ক্রিকেটার জড়িত হাতে গোনা। নামটা আমি বলি। শামসু, মার্শাল (মার্শাল আইয়ুব), সানি (ইলিয়াস সানি), শরীফুল্লাহ। হ্যাঁ, এই চারজনই।”
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ওই ম্যাচের রেফারি শওকতুর রহমান চিনু তার রিপোর্টে পাতানো ম্যাচের কোন আলামতের কথা উল্লেখ করেননি। ফেঁসে যেতে পারেন তিনিও। যমুনা টেলিভিশনের কাছে হান্নান সরকার ও মেহরাব হোসেন অপির কথোপকথনের ৩৫ মিনিটের অডিও আছে। তাঁরা দুজনসহ, ক্রিকেটাররাও ফেঁসে যাচ্ছেন।