গোয়েন্দা নজরদারিতে মেয়র আরিফের বাসা
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:০২:১৭,অপরাহ্ন ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর কুমারপাড়াস্থ বাসা গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে। কিন্তু কুমারপাড়ার বাসায় মেয়র আরিফ অবস্থান করছেন না বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে ।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় আসামী হিসেবে চার্জশিটভুক্ত হওয়ার পর থেকেই আত্মগোপনে চলে যান আরিফুল হক চৌধুরী। আত্মগোপনে থেকে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ফাইলপত্রে স্বাক্ষর করলেও তিনি কোথায় আছেন তা জানেনা কেউ। এদিকে, আত্মগোপনে থেকে মেয়র আরিফ রোববার অথবা সোমবার হবিগঞ্জ আদালতে আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো থাকলে ঐ দুই দিনের একটিকেই আত্মসমর্পনের জন্য বেছে নেবেন তিনি। মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে পারেন বলে তার ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে। দ্রুত আত্মসমর্পন না করলে মেয়র আরিফকে গ্রেফতারই করবে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গত ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জের একটি আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি সিলেট জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মেহেরুন নেছা পারুল সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছিলেন। এরপর থেকেই মেয়র আরিফ আত্মগোপন করে নেন নগরবাসী থেকে। আত্মগোপনে থেকে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ফাইলপত্রে স্বাক্ষর করলেও তিনি কোথায় আছেন তা জানেনা কেউ।
সর্বশেষ গত রোববার সংশোধিত চার্জশিট আদালতে গৃহিত হওয়ার পর থেকেই তিনি ফেরারী। এরপর থেকে আরিফ যে কোন মুহুর্তে গ্রেফতার হচ্ছেন এমন গুঞ্জন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। অথবা আদালতে আত্মসমর্পন করছেন এমনটাই শুনা যাচ্ছিলো ঐদিন থেকে।
তবে গতকাল বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্ম দিবস পর্যন্ত তিনি আদালতে আত্মসমর্পন করেননি। পুলিশের একটি সূত্র দাবি করেছে, আদালতের নির্দেশনা তারা পেয়েছেন। এখন উপর থেকে সিগন্যাল পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আরিফের অবস্থান জানতে কাজ শুরু করেছেন।
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের একজন সদস্য কুমারপাড়াস্থ মেয়র আরিফের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে অবস্থান করছেন। দিনের বেশিরভাগ সময়ই তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনেরও আনাগোনা বেড়েছে কুমারপাড়া এলাকায়।
মেয়র আরিফের ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, মূলত গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলছেন তিনি। আদালতে আত্মসমর্পণের জন্য তিনি নিজেকে ঘুছিয়ে নিয়েছেন। আগামী রোববারে আত্মসমর্পণের পক্ষে তিনি। ওই দিনই হবিগঞ্জের সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণের সম্ভাবনা রয়েছে তার।
এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) রহমত উল্লাহ জানান, আদালত আরিফের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দিয়েছে তা আমরা গণমাধ্যমে দেখেছি। তবে তাকে গ্রেপ্তার সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র এখনো আমাদের কাছে আসেনি। আসামাত্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী দলীয় হাই কমান্ডের সাথেও যোগাযোগ রেখেছেন বলে জানা গেছে। তাদের কাছে থেকেও আত্মসমর্পনের বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন। আত্মসমর্পনের পর আইনি বিষয়টি পরিচালনার দিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২১ ডিসেম্বর রবিবার কিবরিয়া হত্যা মামলায় ১১ জনের নাম যোগ করে আদালতে সংশোধিত সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির এএসপি মেহেরুন নেছা। হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রশিদ আহমেদ মিলন তা গ্রহণ করে শুনানি শেষে নতুন আসামিদের গ্রেফতারের আদেশ দেন।