গত তিনদিনের রিমান্ডে যেসব স্বীকারোক্তি দিলেন মান্না
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:১৯:০৫,অপরাহ্ন ০১ মার্চ ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: ভাইবারের কথা রেকর্ড হয় এমনটা জানতেননা নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তবে আগে থেকে জানলে ‘কথাবার্তায় সতর্ক’ থাকতেন বলে জানিয়েছেন রিমান্ডে থাকা মান্না । ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জিজ্ঞাসাবাদে নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে (উত্তর) নির্বাচন করার প্রস্তুতি আমার অনেক দিনের। এ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবেনা জেনে বিএনপির সমর্থন পেতে সাদেক হোসেন খোকাকে ফোন করেছিলাম। সেই সমর্থন পাওয়ার জন্যই বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের আন্দোলন নিয়ে কিছু কথা বলতে হয়েছে।’
বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে কথোপকথনে সেনা বিদ্রোহে উস্কানির অভিযোগে গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় ডিবি পুলিশ মাহমুদুর রহমান মান্নাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আজ রোববার রিমান্ডের চতুর্থ দিন চলছে মান্নার ।
মামলার তদন্ত সূত্র জানায়, মান্না ডিবির হেফাজতে গত তিন দিন থাকলেও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে দুই দিন (প্রথম দিন বৃহস্পতিবার ও তৃতীয় দিন গতকাল শনিবার)। দ্বিতীয় দিন শুক্রবার একটি খুনের ঘটনা নিয়ে ডিবি পুলিশের কর্মকর্তাদের ব্যস্ত থাকতে হয়েছে।
সূত্রের ভাষ্যমতে, প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে মান্না আত্মপক্ষ সমর্থন করে কথোপকথনের ব্যাখ্যা দেবার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কথা বলার কথা স্বীকার করে বলেন, ভাইবারের কথা রেকর্ড করা হয় এটা তার জানা ছিল না। জানা থাকলে তিনি এসব কথা বলতেন না বলেও স্বীকার করেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মাহমুদুর রহমান মান্নাকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি গোয়েন্দাদের বিভিন্ন প্রশ্ন কৌশলে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করছেন। তবে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে মাহমুদুর রহমান মান্নার প্রার্থী হওয়ার প্রসঙ্গে এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, মাহমুদুর রহমান মান্না শুধু ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নয়, বিএনপিতে যোগদান করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ায় নিজ এলাকা থেকে প্রার্থী হওয়ার চিন্তাভাবনা করেছিলেন। তিনি আরো বলেন, মাহমুদুর মান্নার এক ভাই জামায়াত ঘেঁষা ‘থিংক ট্যাংক’। ফলে অনেক প্রশ্নের জবাব খোঁজার চেষ্টা চলছে।
অজ্ঞাত ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে মান্নার কথা বলার ব্যাপারে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, এখনও এ ব্যাপারে মান্নার কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
মামলার তত্ত্বাবধায়ক কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) শেখ নাজমুল আলম বলেন, মাহমুদুর রহমান মান্না শিক্ষিত, বুদ্ধিমান। আর্থিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাকে পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আশা করা যায়, জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে। রিমান্ডের মাত্র তিন দিন গেছে। আরো সাতদিন হাতে রয়েছে। আর এতেও যদি না হয়, প্রয়োজনে আবারো রিমান্ড চাওয়া হবে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা এবং অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোনে মাহমুদুর রহমান মান্নার কথোপকথন নিয়ে গত সোমবার আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে র্যাব তাকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করে।
আলোচিত এই ঘটনায় গুলশান থানায় মামলা দায়েরের আগে রমনা, মতিঝিল ও গুলশান বিভাগের ১১টি থানায় মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, নাশকতা, লাশ ফেলাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগে পুলিশ ২৪টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।