কৌশলে শ্বশুর-শাশুড়িকে আপন করুন
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৪৩:৪৯,অপরাহ্ন ১৫ নভেম্বর ২০১৪
লাইফ স্টাইল:: নারীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিয়ে করতে ভয় পেয়ে থাকেন শ্বশুর-শ্বাশুড়ি কেমন হবেন এই ভেবে। কারণ শ্বাশুড়ির সাথে ঝামেলা হয় না এমন পরিবার মনে হয় খুব কমই আছে। আবার শ্বশুর-শ্বাশুড়ির অত্যাচারে অনেক নারীকে আমাদের সমাজেই অকালে জীবন দিতে হয়েছে। তবে বর্তমানের নারীরা অনেক বেশি বুদ্ধিমতী। তারা জানেন কীভাবে শ্বশুর-শ্বাশুড়ির সাথে ভালোভাবে থাকা যায়। হাজার হোক সবাই মানুষ। দয়া মায়া মমতা সবার মাঝেই আছে। এ কারণে একটু বুদ্ধি করে আর মানিয়ে চললেই শ্বশুর-শ্বাশুড়ি নিজের বাবা মায়ের মতই আপন হয়ে উঠতে পারেন।
মন দিয়ে সেবা করেই শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে আপন করে নিতে পারেন আপনি। সম্পর্কটাকে অনেক বেশি সহজ করতেও। কেননা আপনি শিক্ষিত একজন মানুষ্ আপনি আপনার শ্বশুরশ্বাশুড়ির মানসিকতাকে বুঝতে পারেন। তাই তাদের মত করেই তাদের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করুন। নিজের বাবা মায়ের মতই সেবা করুন। দেখবেন আপনার প্রতি তাদের একটা মায়া এবং ভালোবাসা তৈরি হয়েছে।
সবসময় তাদের সাথে সম্মান করে কথা বলুন। স্বাভাবিকভাবেই নিশ্চয়ই ছোটবেলা থেকে শিখে এসেছেন যে মুরুব্বিদের সম্মান করতে হয়। সেভাবেই তাদের সম্মান করুন। একজন সাধারণ মানুষের প্রতিও মানুষের মায়া তৈরি হয়ে যায় যদি সে সম্মান করে কথা বলে আর সেখানে আপনি তো তাদের ছেলের বৌ। এমন হতে পারে যে তাদের কিছু ভ্রান্ত ধ্রান ধারণা রয়েছে। আপনি সেগুলো সুন্দরভাবে বুঝিয়ে বলুন। তাতেও কাজ না হলে সেটি মানিয়ে চলার চেষ্টা করুন। একটা বিষয় সবসময় মনে রাখবেন আপনি আপনার শ্বশুড় শ্বাশুড়ির সাথে যেমনটা করবেন আপনার ছেলের বউও তেমনটাই করবেন। তাই মানিয়ে চলার চেষ্টা করুন, পরিবারটিকে সুখী রাখুন।
যেকোনো বিষয়ে আপনার শ্বশুড় শ্বাশুড়ির কাছ থেকে পরামর্শ নিন। ধরুন আপনি কোনো বিপদে পড়েছেন বা অন্য কোনো সমস্যা পরামর্শ নিন। এতে করে তারা ভাববেন যে আপনি তাদের মূল্য দেন এবং সম্মান করেন। ফলে তারা আপনার উপরে অনেক বেশি খুশি হবেন।
অনেক শ্বশুর-শ্বাশুড়ি আছেন যারা বিয়ের পরপরই বাচ্চা নেয়ার জন্য জোর করে থাকেন। এতে করে তাদের সাথে বৌদের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। এমন অবস্থাতে আপনি যদি থেকে থাকে তাহলে আপনি আপনার পরিকল্পনাটি সম্পর্কে শ্বশুড় শ্বাশুড়িকে বুঝিয়ে বলুন। আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝালে তারা আর কোনো বিষয়েই দ্বিমত পোষণ করবেন না। ফলে তাদের সাথে আপনার সম্পর্ক ভালো হয়ে যাবে।
যেকোনো সম্পর্ক ভালো রাখার একটি উৎকৃষ্ট মাধ্যম হল উপহার দেয়া। আপনার শ্বশুড় শ্বাশুড়ির সাথে সম্পর্ক ভালো রাখতে হলেও তাদেরকে সুন্দর সুন্দর উপহার দিন। শ্বাশুড়িকে সুন্দর শাড়ি উপহার দিতে পারেন। শ্বশুড়কে পাঞ্জাবী বা পছন্দের কোনো কিছু উপহার দিতে পারেন। তাহলে তাদের সাথে আপনার সম্পর্কটি অনেক মধুর এবং ভালো থাকবে।
সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসুন ছেলের বউয়েরাই। কারণ আপনি সংসারে নতুন এসেছেন। এবং শাশুড়ি আপনার গুরুজন। তাই প্রথমেই ভেবে নিন সমস্যা কোথায় হচ্ছে। আপনার নিজের এবং আপনার শাশুড়ির কোন বিষয়টিতে আপনাদের মধ্যে সমস্যার তৈরি হচ্ছে তা জেনে বুঝে সমাধানের চেষ্টা করুন।
ঝগড়াঝাঁটিতে জড়াবেন না একেবারেই। এটি শুধুমাত্র সংসারের শান্তি নষ্ট করবে কিন্তু কোনো সমাধান বের হবে না। বরং এতে আপনার স্বামী আপনার প্রতি শ্রদ্ধা হারাবেন। মাথা ঠাণ্ডা রেখে বুঝে শুনে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যান।
যদি আপনার মধ্যে কোনো সমস্যা না থেকে থাকে এবং আপনি চেষ্টা করলেও আপনার শাশুড়ি আপনার সাথে মিটমাটের চেষ্টা না করতে থাকেন তবে স্বামীর সাথে ঠাণ্ডা মাথায় বিষয়টি নিয়ে কথা বলুন। তবে মনে রাখবেন অভিযোগ করে কিংবা বদনামের সুরে কটু কথা বলবেন না। তাকে সমস্যা বুঝিয়ে বলুন।
অনেক সময়েই সংসারের দায় দায়িত্ব নিয়ে বউ-শাশুড়ির মধ্যে সমস্যা হয়ে থাকে। কিন্তু এই বিষয়টি খুব ছোট্ট। সংসারটি আপনার শাশুড়ির নিজের হাতে গোছানো। তাকেই চিন্তা করতে দিন তিনি সংসার আপনার হাতে ছেড়ে আরাম করতে চান নাকি নিজেই সামলাতে চান। যদি তিনি নিজেই সামলাতে চান তবে এটি আপনার জন্যই সুবিধার, তা কি একটিবার ভেবে দেখেছেন?
সব সময় মাথায় রাখবেন তিনি আপনার গুরুজন এবং তিনি আপনার মায়ের সমতুল্য। তার সাথে এমন কিছুই করবেন না যাতে তার সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়। একটিবার ভেবে দেখুন, আপনার ভাই বিয়ে করার পর আপনার মায়ের সাথে এই ধরনের কোনো সমস্যা শুরু হলে তখন কি আপনার ভালো লাগবে? মোটেই নয়। যদিও এই বিষয়গুলো শাশুড়িদেরও ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু তারপরও ভুলে যাবেন না আপনি ছোটো, তিনি বড়।