কুয়াকাটার গঙ্গামতি বন ধ্বংসের পথে
প্রকাশিত হয়েছে : ১:০১:৫৮,অপরাহ্ন ২৪ জানুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: কুয়াকাটার গঙ্গামতি সংরক্ষিত বন এখন ধ্বংসের পথে। কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় অতিথি পাখির আশ্রয়স্থল বিপন্ন হচ্ছে বন খেকো আর ভূমিদস্যুদের কারনে। বনের গাছ উজাড় করে বাড়িঘর তৈরির ফলে ক্রমশই কমে যাচ্ছে বনের আয়তন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে ৪ কিলোমিটার পূর্ব দিকে সাগরের কোল ঘেষা সংরক্ষিত গঙ্গামতির বন কেটে উজাড় করে রাতের অন্ধকারে দখল করছে একটি সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যু চক্র। বন রক্ষায় সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও কতিপয় অসাধু বন প্রহরি ও বনকর্মকর্তাদের যোগসাজসে উজাড় হচ্ছে গঙ্গামতি সংরক্ষিত বন। রাতের অন্ধকারে মূল্যবান গাছ কেটে বনের ভেতর চাষের জমি তৈরি করে ভূমি দালাল ও ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহায়তায় নামে-বেনামে বন্দোবস্ত নিয়ে চলছে দখল করা জমির বেচা কেনা। বনের ভেতর রয়েছে বিভিন্ন নামে জমির মালিকানার সাইনবোর্ড। কিভাবে তারা এসব জমির মালিক হলেন এমন প্রশ্ন স্থানীয়দের। ১৫ জানুয়ারি স্থানীয় খালেক ফকিরের নেতৃত্বে ওই এলাকার বন উজাড় করে জমি দখল করতে গেলে স্থানীয়রা বাধা দেয়। এতে দু’পক্ষ মুখোমুখি অবস্থন নিলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। এ ঘটনায় একই এলাকার আনোয়ার হোসেন ওইদিন কলাপাড়া থানায় খালেক ফকিরসহ আরো দু’জনের নামে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন যার নং-৫৫২।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৬০ সালে ১২ জুলাই ৭৬২৬ নং গেজেটের মাধ্যমে ১১২৮ একর এবং ১৯৮৬ সালের ১১ জানুয়ারী ১৯১১ নং গেজেটের মাধ্যমে ২১০ একর জমি নিয়ে কুয়াকাটার গঙ্গামতি এলাকায় বন বিভাগ এ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাজ শুরু করে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে গড়ে তোলা হয় এক আকর্ষনীয় সংরক্ষিত বন। কুয়াকাটার শোভাবর্ধনকারী বনটি বর্তমানে বন খেকো আর ভূমিদস্যুদের অত্যাচারে হাড়িয়ে ফেলছে তার রূপ লাবন্য। বনের পশ্চিম পাশে রয়েছে কুয়াকাটা ইকোপার্কের ঝাউবন, পূর্ব পাশে গঙ্গামতি লেক সহ কাউয়ার চর সমুদ্র সৈকতের বিস্তির্ন বেলাভূমি। কুয়াকাটাকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের যে মহা পরিকল্পনা রয়েছে তাতে বনটিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। বনটি সংরক্ষন ও অতিথি পাখিদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ধরে রাখতে রয়েছে নানা পরিকল্পনা। অথচ সরকারের এ সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই বনখেকো আর ভূমিদস্যুরা বনটি এখন ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে বন বিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারুক হোসেন জানান, বন রক্ষায় তারাদের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। অবৈধ দখলদারদের সাইনবোর্ড ও দখল করা বাড়িঘর উচ্ছেদ করার চেষ্টা চলছে। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।