কুমিল্লায় ট্রেন দুর্ঘটনা: রাতের মধ্যে উদ্ধারকাজ শেষ করার চেষ্টা
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৫২:৩৪,অপরাহ্ন ২১ মার্চ ২০২৪
মো.আবদুল্লা আল আমীন:: কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিজয় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার তিনদিন পার হলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে দুটি লাইনের একটি এখনো চালু হয়নি।
বুধবার রাত ১২টা নাগাদ এই পথের আপ (চট্টগ্রাম-ঢাকা) লাইনটি চালু হতে পারে বলে পূর্ব রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দুটি লাইন (আপ ও ডাউন) পুরোদমে চালু হলে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা ও অন্যান্য পথের ট্রেনগুলো যথাসময়ে চলাচল করবে বলেও তারা জানান।
গত রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরগামী আন্ত:নগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের হাসানপুর স্টেশন সংলগ্ন তেজের বাজার এলাকায় দুর্ঘটনায় পড়ে। এসময় ট্রেনটির মোট নয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকাসহ বিভিন্ন পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুর্ঘটনার ১৪ ঘণ্টা পর ডাউন লাইন চলাচলের উপযুক্ত হলে চট্টগ্রামের সাথে বিভিন্ন পথে রেল যোগাযোগ পুনরায় স্থাপিত হলেও বিভিন্ন ট্রেনের সূচি এলোমেলো হয়ে পড়ে।
দুর্ঘটনাস্থলের ডাউন লাইন দিয়ে ট্রেন আসা-যাওয়া করলেও বুধবার রাত আটটা পর্যন্ত আপ লাইনটি চালু করা যায়নি।
পূর্ব রেলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন,
“আজ রাত থেকে আপ ও ডাউন উভয় লাইনে ট্রেন চলবে। রাত ১২টা নাগাদ আপ লাইনটি চালু হতে পারে। এখনো উদ্ধার কার্যক্রম পুরোপুরি শেষ করা যায়নি।
“রাতে দুটি লাইন চালু হলেও বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার পর থেকে আবারও একটি লাইনে সংস্কার কাজ চালানো হবে। উভয় লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হলে ট্রেন চলাচলের সময়ের সমস্যা মিটে যাবে।”
দুর্ঘটনার পরপরই পূর্ব রেলের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ডিটিও আনিসুর রহমান বুধবার রাতে বলেন, “দুর্ঘটনা কবলিত রেললাইন থেকে নয়টির মধ্যে আটটি বগি উদ্ধার করা হয়েছে। অপর বগিটি উদ্ধারেও কাজ চলছে। রাত নাগাদ আপ ও ডাউন লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল করতে পারবে বলে আশা করি।”
দুর্ঘটনার কারণে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন দিক মাথায় রেখে কাজ করছি। এখনো কমিটির সকল সদস্য একসাথে বসতে পারিনি। সবদিক বিবেচনা করেই কমিটি প্রতিবেদন দেবে দ্রুত সময়ের মধ্যেই।”
রোববার দুপুরের ওই দুর্ঘটনায় আহত হন অন্তত ৩০ জন; ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ৫০০ মিটার রেললাইন।
লাইনচ্যুত হওয়ার পর বগিগুলো ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের উভয় লাইনে ছড়িয়ে-ছটিয়ে পড়ে। ডাবল লাইনের দুটিই আটকে যাওয়ায় চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকা ও সিলেটের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় সেদিন।
ফলে দুই দিকের বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে অন্তত ১০টি ট্রেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকে কয়েক হাজার যাত্রীকে চরম দুর্ভোগের পড়তে হয়।
এরপর রোববার সন্ধ্যায় আখাউড়া থেকে একটি এবং চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থেকে একটি উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে। সোমবার ভোরে লাইন চালু হওয়ার পর চট্টগ্রামে আটকে থাকা ট্রেনগুলো ছেড়ে যায়। পাশাপাশি চট্টগ্রামগামী যেসব ট্রেন লাকসামে আটকে ছিল, সেগুলোও গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।