কী শাস্তি হতে পারে লতিফ সিদ্দিকীর!
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:১৮:০০,অপরাহ্ন ২৭ নভেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
ধর্মের অবমাননা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি তথা মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে আইন পাস করার দাবিতে আগামী ৯ জানুয়ারি ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী ঐক্যজোট। বুধবার বেলা ১১টায় লালবাগ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবারের ঘোষিত সকাল-সন্ধ্যা হরতাল স্থগিত করার কথাও জানানো হয়।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি তৈয়্যব হোসাইন, অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল করিম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আবুল কাসেম, মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াসেল প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রবীণ রাজনীতিবিদ আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী নিউইয়র্কের এক অনুষ্ঠানে ইসলাম ধর্ম ও মহানবীকে (সা.) অবমাননা করে বক্তব্য রাখেন। এর জেরে ইসলামি দলগুলো তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এবং এই সংক্রান্ত আইন আরো কঠোর করার আহ্বান জানায় সরকারকে।
এদিকে, বহিষ্কৃতমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে আনা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ দুই বছর সাজা হতে পারে তার। দণ্ডবিধির ২৯৫ ক, ২৯৮ ও ৫০০ ধারায় ঢাকা মহানগর মূখ্য হাকিম আদালতে এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে মোট ৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব ধারায় সর্বোচ্চ সাজা দুই বছর। তিনটি ধারার মধ্যে ২৯৮ ও ৫০০ ধারায় অপরাধ জামিনযোগ্য। তবে ২৯৫ক ধারাটি জামিন অযোগ্য।
২৯৮ ধারায় বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোনো ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার অভিপ্রায়ে উক্ত ব্যক্তির শ্রুতিগোচর কোনো শব্দ উচ্চারণ করে বা আওয়াজ দেন বা উক্ত ব্যক্তির দৃষ্টিগোচর কোনো অঙ্গভঙ্গি করে বা উক্ত ব্যক্তির দৃষ্টিগোচরে কোনো বস্তু রাখে সে ব্যক্তি এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ৫০০ ধারায় বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির মানহানি করে সে ব্যক্তি দুই বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। উপরোক্ত দুটি ধারা জামিনযোগ্য হলেও ফৌজদারী কার্যবিধির ২য় তফসিলে দণ্ডবিধির ২৯৫ক ধারাটি জামিন অযোগ্য বলে বর্ণিত আছে। এতে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি কোনো ধর্মীয় অনুভূতিতে কঠোর আঘাত হানার অভিপ্রায়ে স্বেচ্ছা ও বিদ্বেষাত্মক কথা কিংবা লিখিত শব্দাবলির দ্বারা উক্ত ধর্ম বা ধর্ম বিশ্বাসকে অবমাননা করে বা উদ্যোগ নেয় তাহলে তিনি দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা মহানগরের সাবেক পিপি এহসানুল হক সমাজি বলেন, ‘ভিন্ন ভিন্ন ধারায় সাজার মেয়াদ ভিন্ন হলেও একই সঙ্গে সাজা চলমান থাকে বিধায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে সর্বোচ্চ দুই বছরই সাজা খাঁটতে হবে। তবে আদালতে একটির পর একটি সাজা কার্যকর হবে মর্মে রায় প্রদান করলে তাকে অতিরিক্ত সাজা খাঁটতে হবে।’ সমাজি আরও বলেন, ‘মহিলা, শিশু, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রে জামিন অযোগ্য ধারায়ও আদালত জামিন দিতে পারেন। এটি আদালতের এখতিয়ার।’
গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের একটি অনুষ্ঠানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.), হজ, তাবলিগ ও জয়কে নিয়ে বক্তব্য দেন লতিফ সিদ্দিকী। বক্তব্যের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ ও পরে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে এখনো তার সংসদ সদস্যপদ বহাল আছে।